ম্যাঙ্গো-রাইস
দক্ষিণ ভারতীয়রা টক স্বাদের খাবার পছন্দ করেন। গরম বেশি বলেই হয়তো। দই দিয়ে ভাত (কার্ড রাইস), লেবু দিয়ে ভাত (লেমন রাইস) ছাড়াও দক্ষিণে গরমকালে আর একটা অত্যন্ত পছন্দের খাবার হল ম্যাঙ্গো রাইস। দু’তিন রকম আছে। এর মধ্যে অন্ধ্রদের স্টাইলটা সোজা, খেতেও ভাল। আমরা বাসি ভাত থাকলে সেটা পরের দিন আলু, পেঁয়াজ দিয়ে ভেজে খাই অনেকে। এটা অনেকটা সেই রকম, আর একটু চটপটা।
উপকরণ
ভাত: ৩ কাপ
আম কোরা: ১ কাপ
হলুদ: এক চিমটে
নুন: স্বাদ মতো
চিনি: স্বাদ মতো
তেল: দু’চামচ
সর্ষে: এক চামচ
ছোলার ডাল: দুই চামচ
বিউলির ডাল: দেড় চামচ
শুকনো লঙ্কা: ২-৩টে
হিং: একচিমটে
কাঁচা লঙ্কা: ২-৩টে
কাঁচা বাদাম: আধ কাপ
কারি পাতা: ২-৩টে
পদ্ধতি
ভাতটা একটু শক্ত অবস্থা নামিয়ে মাড় গেলে থালায় ছড়িয়ে ঠান্ডা হতে দিন (ফ্রিজে আগের দিনের ভাত থাকলেও হবে)। বাদাম ভেজে সরিয়ে রাখুন। এবার কড়ায় তেল দিয়ে সর্ষে ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। সর্ষে ফাটতে শুরু করলে একে-একে দুই ধরনের ডাল, হিং ও কাঁচা লঙ্কা দিন। ডালটা একটু বাদামি রং ধরলে বাদাম দিন কড়ায়। এরপর নুন-হলুদ ও কারি পাতা দিয়ে একটু নেড়ে কাঁচা আম দিয়ে দিন। মিনিটখানেক নেড়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। ভাতটা কড়ায় দিয়ে আলতো করে মেশান। জড়িয়ে না যায়, ভেঙে না যায়। অনেকে এর সঙ্গে নারকেল কোরা মেশান। তবে, আমাদের মুখে হয়তো নারকেলটা ভাল লাগবে না। বরং পেঁয়াজ ভাজা দিলে স্বাদ বাড়বে।
ম্যাঙ্গো-পনির
অনেক সময় বাজার থেকে কাঁচা আম কিনে আনার পর দেখা যায় একটু একটু পেকে গিয়েছে। এই অাধ পাকা আম দিয়ে খুব সুন্দর পনিরের তরকারি হয়। আমটা এখানে সব্জির কাজ করে।
উপকরণ:
পনির:২৫০ গ্রাম
আম: একটা
পেঁয়াজ: একটা
হলুদ: এক চা চামচ
ধনে গুঁড়ো: এক চা চামচ
নুন: স্বাদ মতো
চিনি: স্বাদ মতো
নারকেলের দুধ: আধ কাপ
মশলার পেস্টের জন্য:
রসুন: চার কোয়া
কাঁচা লঙ্কা: ২টো
আদা: এক ইঞ্চি টুকরো
নারকেল কোরা:আধ কাপ
ফোড়নের জন্য:
তেল: এক চা চামচ
শুকনো লঙ্কা: দু’টো
পেঁয়াজ কুচি: দু’ চা চামচ
কারি পাতা: দু’তিনটে
পদ্ধতি
আমের খোসা ছাড়িয়ে চৌকো করে কেটে নিন। রসুন, আদা, কাঁচা লঙ্কা, নারকেল কোরা মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। কড়ায় তেল গরম করে পেঁয়াজ লাল করে ভাজুন। এবার যে পেস্টটা বানিয়েছেন, সেটা দিন। নুন, হলুদ, ধনে গুঁড়ো দিয়ে নারকেলের দুধ দিন। মশলা ভাল ভাবে মেখে ভাজা হয়ে এলে আমের টুকরো দিন। একটু জল দিয়ে আম ফোটান। যেহেতু আম আধ পাকা তাই নরম হতে বেশি সময় লাগবে না। আমটা নরম হয়ে এলে পনিরের টুকরো দিয়ে আর কিছুক্ষণ ফোটান। আর একটা কড়ায় তেল গরম করে সর্ষে ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। কারি পাতা দিন। পেঁয়াজ দিয়ে লাল করে ভাজুন। তারপর ঢেলে দিন পনিরের তরকারিতে। রুটির সঙ্গে টক-মিষ্টি পনিরের তরকারি খেতে খুব ভাল লাগে। উত্তর ভারতের এই পদটিতে গুলি পেঁয়াজ, ডাঁটা ইত্যাদি সব্জি হিসাবে দেন অনেকে। তাতে স্বাদ বাড়ে বই কমে না।
গ্রিন চিকেন
উপকরণ
মুরগি: ১ কেজি
পেঁয়াজ: ২টো
আম: একটা
হলুদ: এক চা চামচ
তেজপাতা: দু-তিনটে
দারচিনি: দু-তিনটে টুকরো
এলাচ ৪টে
লবঙ্গ ৫টা
কাঁচা লঙ্কা ৪-৫টা
আদা: এক ইঞ্চির টুকরো
পুদিনা পাতা: অাধ কাপ
ধনে পাতা: এক কাপ
ধনে: এক চা চামচ
জিরে: এক চা চামচ
মৌরি: এক চা চামচ
নারকেল: একটা
পদ্ধতি
খোসা ছাড়িয়ে আম টুকরো করে নিন। এবার আমের সঙ্গে কাঁচা লঙ্কা, আদা, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, জিরে, ধনে, মৌরি একসঙ্গে মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। এর সঙ্গে স্বাদমতো নুন, হলুদ আর এক টেবিল চামচ কাঁচা সর্ষের তেল মিশিয়ে ভাল করে মুরগি ম্যারিনেট করতে দিন। নারকেল কুরিয়ে গরম জলে কিছুক্ষণ রেখে দুধ বার করে নিন। খুব নরম নারকেল হলে মিক্সিতে পেস্ট করে নিলেও চলবে। এবার কড়ায় সর্ষের তেল গরম করে এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা ফোড়ন দিন। ফাটতে শুরু করলে পেঁয়াজ কুচি দিন। ভাজা হয়ে গেলে ম্যারিনেট মাংস ঢেলে দিন। মিনিট দশেক বেশি আঁচে কষে নিন। এবার নারকেলের দুধ ঢেলে আর একটু কষে ঢাকা দিন। জল না দিলেই ভাল। খুব শুকিয়ে গেলে এক কাপ গরম জল দিতে পারেন। মাংস সিদ্ধ হলে নামিয়ে নিন। এই গরমে সাদা ভাতের সঙ্গে আম মুরগি খেয়ে দেখুন।
গুরভানি
এটা একরকমের মিষ্টিই। তবে, কাঁচা আম দিয়ে।
উপকরণ
কাঁচা আম:১টা
চাল গুঁড়ো: এক টেবিল চামচ
ঘি: এক টেবিল চামচ
চিনি: এক কাপ
গরম মশলা: এক চামচ
জল: চার কাপ
পদ্ধতি
কড়ায় ঘি গরম করে চালের গুঁড়ো দিন। সোনালি রং না ধরা পর্যন্ত ঢিমে আঁচে নাড়ুন। এবার গরম মশলা দিয়ে আর একটু জল ঢেলে আম দিন। চিনি দিন। মিনিট দশেক নাড়তে হবে। আম নরম হয়ে পাক ধরলে নামিয়ে নিন।
আম পান্না
কাঁচা আম দিয়ে শরবত দু’ভাবে করা যায়। প্রেশার কুকারে সিদ্ধ করেও হয়, আবার পুড়িয়ে নিয়েও হয়। এর মধ্যে পুড়িয়ে খেতে বেশি ভাল। এর মধ্যে জিরে আর গোলমরিচ দিয়ে স্বাদটা আরও চাঙ্গা করে নেওয়া যায়।
উপকরণ
কাঁচা আম: ৪টে
গোটা জিরে: এক চা চামচ
গোটা গোলমরিচ: এক চা চামচ
বিটনুন: দুই চা চামচ
চিনি: দুই কাপ
পদ্ধতি
জিরে আর গোলমরিচ শুকনো কড়ায় নেড়ে গুঁড়িয়ে নিন। আম গ্যাসে পোড়াতে পারেন বা প্রেশার কুকারে ছাল-সহ সিদ্ধ করে নিতে পারেন। ঠান্ডা হলে আমের খোসা ছাড়িয়ে শাঁস চটকে বার করে নিতে হবে। এবার চার কাপ জলে আমের শাঁস মিশিয়ে আঁচে বসান। জিরে, গোলমরিচ গুঁড়ো দিন। বিটনুন-চিনি দিন। চিনি গুলে গেলে গ্যাস বন্ধ করে ঠান্ডা করুন। কাঁচের পাত্রে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রয়োজন মতো বার করে ঠান্ডা জল বা বরফ মিশিয়ে পান করুন। শরীর ঠান্ডা হবে।
আমের ভর্তা
চিনি বা গুড় দিয়ে আমের চাটনি নিত্য হচ্ছে। একটু অন্য স্বাদের এই আমের ভর্তাটা বানিয়ে দেখতে পারেন। মন ভরে যাবে গরমের দুপুরে।
উপকরণ
কাঁচা আম: একটা
কাঁচা লঙ্কা: দু’টো
আদা কুচি: এক চা চামচ
জিরে গুঁড়ো: আধ চা চামচ
ধনে পাতা: এক কাপ
চিনি: দুই চা চামচ
নুন: স্বাদ মতো
জল: প্রয়োজন হলে
পদ্ধতি
আমের খোসা ছাড়িয়ে কেটে নিন। এবার মিক্সিতে কাঁচা আম, আদা, কাঁচা লঙ্কা, নুন-চিনি ভাল করে পিষে নিন। একটু পরে ধনে পাতা দিয়ে আর একবার ঘুরিয়ে নেবেন। বাটিতে তুলে অল্প কাঁচা সর্ষের তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার তেল গরম করে তাতে জিরে দিয়ে ভর্তার উপরে ফোড়ন হিসাবে ঢেলে দিতে পারেন।
আম স্যালাড
আমরা কাঁচা আম কেটে তেল-নুন-লঙ্কা মাখিয়ে যেটা খাই, সেটা স্যালাডই। তবু নামটা যখন একটু ভারী, তখন আরও কিছু উপকরণ যোগ করা যাক।
উপকরণ
শসা: একটা
মিঠা কাঁচা আম: দু’টো
পেঁয়াজ: একটা
টোম্যাটো: একটা
ক্যাপসিকাম:একটা
কাঁচা লঙ্কা কুচি: দু’ চা চামচ
ধনে পাতা: আধ কাপ
লেবুর রস: দু’ চা চামচ
চিনি: দু’ চা চামচ
বিট নুন: এক চা চামচ
কাসুন্দি: এক টেবিল চামচ
সর্ষে তেল: এক চা চামচ
পদ্ধতি
একটা বাটিতে চিনি, নুন, লেবুর রস, তেল, কাসুন্দি (না থাকলে এক চামচ সর্ষে বাটা দিলেও হবে), লঙ্কা কুচি ভাল করে চামচ দিয়ে মিশিয়ে ড্রেসিং বানান। এবার আমের খোসা ছাড়িয়ে সরু সরু করে কেটে নিন। শসা, পেঁয়াজ, টোম্যাটো, ক্যাপসিকামও একই ভাবে সরু সরু করে কেটে নিতে হবে। একটা পাত্রে আম, শসা, পেঁয়াজ, টোম্যাটো, ক্যাপসিকাম, ধনে পাতা নিয়ে তার উপরে ড্রেসিং ছড়িয়ে দিন। ভাল করে মিশিয়ে নিলেই তৈরি আমের স্যালাড।
আম গজ্জু
দক্ষিণী এই রান্নাটিও একেবারে অন্য স্বাদের।
উপকরণ
কাঁচা আম: দু’টো
গুড়: দু’কাপ
মেথি: এক চা চামচ
সর্ষে: এক চা চামচ
কারি পাতা: দু’তিনটে
নারকেল কোরা: আধ কাপ
ছোলার ডাল: এক চা চামচ
বিউলির ডাল: এক চা চামচ
সর্ষে: আধ চাচামচ
হিং: এক চিমটে
পদ্ধতি
কাঁচা আম সিদ্ধ করে শাঁস বার করে নিন। কড়ায় এক চামচ তেল গরম করে মেথি, সর্ষে, কারি পাতা দিন। নারকেল কোরা দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার পুরোটা মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। এরপর এই মিশ্রণটা কাঁচা আমের সঙ্গে মাখিয়ে নিন ভাল ভাবে। আর এক পাত্রে তেল গরম করে সর্ষে দিন। ফাটতে শুরু করলে ডাল, হিং, কারি পাতা দিয়ে ফোড়ন হিসাবে ঢেলে দিন আমমাখায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy