Advertisement
E-Paper

ছক ভাঙছে বিহারের দলিত মহিলাদের ব্যান্ড

পটনার দানাপুর সাব ডিভিশনের ধিবরা গ্রামের ১০ জন দলিত মহিলা গড়ে তুলেছেন গানের দল। যার নাম ‘সরগম ব্যান্ড’। সেই দলের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে বিহারের বাইরেও। বিয়ে ও নানা ধরনের অনুষ্ঠানে গান গাইছেন তাঁরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৪:০৪
পথে সরগম ব্যান্ড। ছবি: টুইটার।

পথে সরগম ব্যান্ড। ছবি: টুইটার।

তাঁদের কাহিনি হার মানাবে রূপকথাকেও। একটা সময়ে গ্রামের আর পাঁচটা হতদরিদ্র পরিবারের মহিলাদের মতোই ছিলেন তাঁরা। ছিল না কোনও সামাজিক স্বীকৃতি কিংবা আর্থিক স্বচ্ছলতা। কিন্তু এক সমাজকর্মীর উদ্যোগ এবং কয়েক জন প্রান্তিক মহিলার নাছোড় মনোভাবই বদলে দিয়েছে পরিস্থিতি। পটনার দানাপুর সাব ডিভিশনের ধিবরা গ্রামের ১০ জন দলিত মহিলা গড়ে তুলেছেন গানের দল। যার নাম ‘সরগম ব্যান্ড’। সেই দলের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে বিহারের বাইরেও। বিয়ে ও নানা ধরনের অনুষ্ঠানে গান গাইছেন তাঁরা।

এই গোটা কর্মকাণ্ডের কাণ্ডারি সমাজকর্মী সুধা ভার্গিস। তাঁর উদ্যোগেই তৈরি হয় এই ব্যান্ড। সুধা জানান, ২০১৬ সালে রবিদাস সম্প্রদায়ের মহিলাদের সঙ্গে কাজ করার সময়েই মেয়েদের ব্যান্ড তৈরির বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে। পিছিয়ে পড়া মহিলাদের সামাজিক ও আর্থিক স্বাধীনতা দিতেই তাঁর এই উদ্যোগ।

তিনি যখন ধিবড়ির মহিলাদের ব্যান্ড তৈরির প্রস্তাব দেন, কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি। তবে হাল ছাড়েননি সুধা। শুরুতে বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ করা হয়। সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে আদিত্য গুঞ্জন কুমার যোগ দেন। ব্যান্ডের প্রধান সবিতা জানান, আদিত্য ছ’মাস প্রশিক্ষণ দেন পারিশ্রমিক ছাড়াই। ওই মহিলাদের বাড়ির তৈরি খাবারই ছিল তাঁদের গুরুদক্ষিণা।

সবিতা জানান, শুরুতে অনেক বাধা পেরোতে হয়েছে তাঁদের। স্বামী, পরিজন ও প্রতিবেশীরা বিদ্রুপ করেছেন। এমনকি অনেকেই বিষয়টিকে এমন ভাবে দেখতেন যেন কোনও ভয়ানক কাজে জড়িত ওই মহিলারা। তবে ক্রমশ বদলায় পরিস্থিতি।

পূর্ণাঙ্গ ব্যান্ড তৈরির পরে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। শুরুতে অনুষ্ঠান পিছু ২৫০ টাকা পেতেন প্রত্যেক সদস্য। সে সময় দানাপুরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তাঁদের পারফরম্যান্স। ক্রমশ বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। প্রস্তাব আসতে থাকে পটনা থেকেও।

ইন্টারনেটে ব্যান্ডের সম্পর্কে জেনে গুরুগ্রামের এক ব্যক্তি ‘সরগম’ ব্যান্ড নিয়ে আগ্রহ দেখান। শর্ত, দিল্লিতে গিয়ে গান শোনাতে হবে। সেখানে ব্যান্ডের গান মাতিয়ে দেয় আয়োজকদের। নালন্দায় মূল অনুষ্ঠানে ডাক পান তাঁরা। গোড়ায় বেশি দূরে ডাক পেলেও ঘাবড়ে যেতেন তাঁরা। ক্রমে তা গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে।

এখন অনুষ্ঠান পিছু ব্যান্ডের সদস্যদের পারিশ্রমিক বেড়ে হয়েছে হাজার টাকা। তবে এখানেই থামতে চান না ওই দশ ব্যতিক্রমী ‘দলিত’ মহিলা। নিজেদের গানের উন্নতির পাশাপাশি আরও অনেক বাদ্যযন্ত্র শিখতে চান তাঁরা।

‘সরগম’ ব্যান্ডের সাফল্যে উৎসাহিত ভার্গিস এ বার পটনার অদূরে এক প্রত্যন্ত গ্রাম পুনপুনের মুসাহর সম্প্রদায়ের মহিলাদেরও ব্যান্ড গড়ে তুলতে চান। ব্যতিক্রমকে নিয়মে বদলানোই যে তাঁর স্বপ্ন।

Sangram Band Dalit Women Dhibra Danapur Musical Band সরগম ব্যান্ড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy