Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাখল না ক্লাবই, দাবি তারকার

বুধবার অনুশীলন না থাকায় উবেইদ ও মির্শাদ ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। ম্যাসাজ বল দিয়ে হাতের পেশির জোর বাড়ানোর অনুশীলন করবেন বলে বন্ধুদের সঙ্গে বেরোননি জবি।

হতাশ: বুধবার দুপুরে সল্টলেকের ফ্ল্যাটে জবি জাস্টিন। নিজস্ব চিত্র

হতাশ: বুধবার দুপুরে সল্টলেকের ফ্ল্যাটে জবি জাস্টিন। নিজস্ব চিত্র

শুভজিৎ মজুমদার
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:২৯
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গলে নয়, আগামী মরসুমে এটিকে-র জার্সি গায়েই খেলবেন জবি জাস্টিন। বুধবার দুপুরে সরকারি ভাবে এটিকে এই ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই আলোড়ন পড়ে যায় ফুটবল মহলে। জবি কিন্তু আশ্চর্য রকম ভাবে নির্লিপ্ত।

সল্টলেকের করুণাময়ী আবাসনের চার তলার ফ্ল্যাটে উবেইদ সি কে ও মির্শাদ মিচুর সঙ্গে থাকেন জবি। বুধবার অনুশীলন না থাকায় উবেইদ ও মির্শাদ ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। ম্যাসাজ বল দিয়ে হাতের পেশির জোর বাড়ানোর অনুশীলন করবেন বলে বন্ধুদের সঙ্গে বেরোননি জবি। কিন্তু ক্রমাগত মোবাইল ফোন বাজতে থাকায় অনুশীলনই পণ্ড হওয়ার জোগাড়। কেউ ফোন করছেন, কেউ মেসেজ করেছেন। তার মধ্যেই জবি সময় দিলেন আনন্দবাজারকে।

এটিকে-র বিরাট অঙ্কের প্রস্তাবই কি ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার কারণ? জবি বলছেন, ‘‘অর্থের জন্য আমি ইস্টবেঙ্গল ছাড়ছি না। আমি এখানেই থাকতে চেয়েছিলাম।’’ তা হলে? হতাশ জবির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ‘‘প্রায় এক মাস ধরে আমি বারবার বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান কর্তা ও চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারকে বলেছিলাম, আগামী মরসুমে আমাকে রাখবেন কি না জানান। ওঁরা বলতেন, আগে কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার সঙ্গে চুক্তিটা হোক, তার পরে জানাব। কিন্তু কিছুই জানাননি।’’ এর পরেই জবির পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আর কত দিন অপেক্ষা করব? এটিকে যদি আমার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তখন কোথাও যাওয়ার থাকবে না।’’

ইস্টবেঙ্গল কর্তারা দাবি করছেন, জবির টোকেন তাঁদের কাছে রয়েছে। ২৯ মার্চ লাল-হলুদ স্ট্রাইকার নিজেই নাকি ক্লাব তাঁবুতে গিয়ে টোকেন দিয়ে এসেছেন। জবিও তা অস্বীকার করেননি। বললেন, ‘‘হ্যাঁ, আমার টোকেন ইস্টবেঙ্গলেই রয়েছে। কিন্তু আমার এজেন্ট সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের সঙ্গে বলে জানিয়েছে, আইএসএলে টোকেনের কোনও গুরুত্ব নেই।’’

দু’বছর আগে কেরল রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ ছেড়ে ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন জবি। অভিষেকের মরসুমে খেলার সুযোগ বেশি পাননি তিনি। হতাশ হয়ে সিদ্ধান্ত নেন, এ বারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কেরল ফিরে যাবেন।

আলেসান্দ্রো ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়ার পরেই নাটকীয় ভাবে বদলে যায় ছবিটা। জবিও হয়ে ওঠেন লাল-হলুদ শিবিরের অন্যতম মুখ। আই লিগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দু’টো ডার্বিতেই গোল করে লাল-হলুদ জনতার নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন। ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সেটাই যেন কাঁটা হয়ে বিঁধছে জবির মনে। বুধবার বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের উদ্দেশে জবি লেখেন, ‘‘কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। সমর্থক, সতীর্থ, কোচ ও ইস্টবেঙ্গলের অন্যান্য কর্মীরা যে ভাবে কেরল থেকে আসা এক ফুটবলারকে নিজেদের হৃদয়ে জায়গা দিয়েছেন, কোনও দিন ভুলব না। আমার হৃদয়েও আজীবন থাকবেন আপনারা।’’

শুধু সমর্থকেরা নন, কোচ আলেসান্দ্রোও ক্লাব না ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন জবিকে। আই লিগে ৯ গোল করা লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের কথায়, ‘‘কোচ আমাকে বলেছিলেন, আরও এক বার ভাব। এটিকে-তে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।’’ জবিও মেনে নিচ্ছেন, এটিকে-তে খেলার সুযোগ পাওয়া অনেক কঠিন। কারণ, ম্যানুয়েল লানসারোতে, এর্ভাটন স্যান্টোসের মতো ফরোয়ার্ড রয়েছে দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন দলে। আত্মবিশ্বাসী জবি বললেন, ‘‘আমি পেশাদার ফুটবলার। যে ক্লাবেই খেলি, লড়াই করেই জায়গা করে নিতে হবে।’’

এটিকে-তে খেলার সিদ্ধান্ত নিলেও ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে এখনই সম্পর্ক ছিন্ন করছেন না তিনি। আজ, বৃহস্পতিবার সকালেও আলেসান্দ্রোর অধীনে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে অনুশীলনও করবেন। জবি বলে দিলেন, ‘‘৩১ মে পর্যন্ত আমি ইস্টবেঙ্গলেরই ফুটবলার!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football East Bengal Jobby Justin ATK
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE