অলিম্পিকে পদক হারানোর যন্ত্রণা এখনও তাড়া করে ঊষাকে। ফাইল ছবি।
‘রাইস পরিজ’ বা ফেনা ভাত। সঙ্গে আচার। ১৯৮৪ সালের লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে গেমস ভিলেজে এটাই খাদ্য ছিল পি টি ঊষার!
এই খাদ্যের পুষ্টিগুণ কার্যত কিছুই ছিল না। আর এই কারণেই সে বার অল্পের জন্য পদক হারিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন কিংবদন্তি অ্যাথলিট।
সেই অলিম্পিকে ৪০০ মিটার হার্ডলসের ফাইনালে এক সেকেন্ডের শতাংশের ভগ্নাংশে পদক হারিয়েছিলেন ঊষা। রোমানিয়ার ক্রিস্টিয়েনা কোরোকারু আর তিনি প্রায় একই সময়ে দৌড় শেষ করেছিলেন। কিন্তু, পরে ক্রিস্টিয়েনা তাঁকে টপকে গিয়েছেন বলে জানা যায়। ব্রোঞ্জ হারান ঊষা। যার নেপথ্যে পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবকেই দায়ী করেছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে এক ম্যাগাজিনে দেওয়া সাক্ষাত্কার ঊষা বলেছেন, “নিশ্চিত ভাবেই শেষ ৩৫ মিটারে আমারে পারফরম্যান্সে এর প্রভাব পড়েছিল। আমি এনার্জি লেভেল একই রাখতে পারিনি।”
অন্য দেশের অ্যাথলিটরা যে ধরনের দুর্দান্ত সুযোগ-সুবিধা পান, তা ভারতীয়রা রীতিমতো হিংসা করতেন বলেও জানিয়েছেন ঊষা। তাঁর কথায়, “বিদেশি অ্যাথলিটরা যে সুযোগ-সুবিধা পেতেন, তা দেখে আমরা হিংসা করতাম। ওরা সবসময় অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা পেত। আমরা অবাক হতে ভাবতাম, এগুলো কি আর কোনওদিন আমরা পাব!”
ঊষার সেই দৌড়। ১৯৮৪ সালে লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে। অল্পের জন্য পদক হারিয়েছিলেন তিনি। ছবি টুইটারের সৌজন্যে।
লস এঞ্জেলসের অলিম্পিক ভিলেজে বেশ কিছুদিন ছিলেন ঊষা। আর সেই সময় আচার দিয়ে ফেন ভাত ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারেননি। স্মৃতির সরণিতে ফিরে গিয়ে ঊষা বলেছেন, “এখনও মনে আছে, যে আচার খেতে হয়েছিল, তাকে কেরলে আমরা বলতাম কাদু মাঙ্গা আচার। আর পেতাম কিছু কাটা ফল। বেকড পটেটো বা সোয়া সসের সঙ্গে হাফ-বয়েলড চিকেন ও আরও কিছু আমেরিকান খাদ্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না একেবারেই।”
তিনি আরও বলেছেন, “কেউই বলেনি যে লস এঞ্জেলসে শুধু আমেরিকান খাদ্যই পাওয়া যায়। আমার তাই ফেনা ভাত খাওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। যা পুষ্টিকর নয় একেবারেই। আর নিশ্চিত ভাবেই এই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পারফরম্যান্স। অথচ, ৪০০ মিটার হার্ডলসে আদর্শ শুরু হয়েছিল আমার। পরিকল্পনা অনুসারে ৪৫ মিটার দূরত্বে থাকা প্রথম হার্ডলস টপকেছিলাম ৬.২ সেকেন্ডে। সেই গতি ও ছন্দ ধরে রেখেছিলাম। কিন্তু, শেষ ৩৫ মিটারে তা ধরে রাখতে পারিনি।”
১৮ বছরের বর্ণময় কেরিয়ারে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দেশকে গর্বিত করেছেন ঊষা। কিন্তু, আসেনি অলিম্পিক পদক। এখন তিনি কোচিং অ্যাকাডেমী চালান। যার নাম ঊষা স্কুল অব অ্যাথলেটিক্স। তাঁর কথায়, “এখন আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য। কোনও ভারতীয় অ্যাথলিটকে অলিম্পিকের পোডিয়ামে দেখতে চাই। কেরিয়ারের গোড়ার দিকে যে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম, সেগুলো উঠতি অ্যাথলিটদের দিতে চাইছি। ১৮জন মেয়ে এখানে থেকে অনুশীলন করে।”
আরও পড়ুন: একদিন পরে স্বাধীনতার শুভেচ্ছা, সমালোচনার জবাব দিলেন মিতালি রাজ
আরও পড়ুন: নতুন সিস্টেমে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এগোল ভারত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy