আন্দ্রে রাসেল অভিনন্দন জানাচ্ছেল হার্দিক পাণ্ড্যকে। ছবি এএফপি।
বি ব্লকের হসপিটালিটি বক্স যেন চাঁদের হাট। এক দিকে শাহরুখ খান দর্শকের উদ্দেশে চুম্বন উড়িয়ে দিচ্ছেন। ঠিক তার পাশের বক্সেই বসে ম্যাচ উপভোগ করছেন সচিন-পুত্র অর্জুন তেন্ডুলকর, ভারতের প্রাক্তন কোচ জন রাইট, সারা তেন্ডুলকর, অনু মালিকেরা।
একই দিনে দুই পাওয়ারহিটারের ইনিংস দেখে মুগ্ধ প্রাক্তন ভারতীয় কোচ জন রাইট। স্ত্রীর সঙ্গে মাঠ থেকে বেরোনোর সময় বলে গেলেন, ‘‘৪০ ওভারের মধ্যে দুই পাওয়ার হিটারের ইনিংস সত্যি উপভোগ করেছি। তবে জিতলে আরও ভাল লাগত।’’
রাসেলের ইনিংসকে কত নম্বর দেবেন? রাইটের উত্তর, ‘‘রাসেল অসাধারণ ক্রিকেটার। শুধু ভালই নয়, ধারাবাহিকও। আমি ভাল নম্বরই দেব।’’ রাইট যদিও বেশি মুগ্ধ হার্দিক পাণ্ড্যর ইনিংসে। ২৩৩ রান তাড়া করতে নেমে ৩৪ বলে ৯১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে গেলেন তাঁর এক সময়ের ছাত্র।
আরও পড়ুন: হার্দিক হ্যারিকেন সত্ত্বেও যে সব কারণে মুম্বই বধ করল কলকাতা
রাইট বলছিলেন, ‘‘রাসেলের থেকেও আমি বেশি খুশি হয়েছি হার্দিক পাণ্ড্যর ইনিংসে। কোচ থাকাকালীন ওর পিছনে অনেক সময় ব্যয় করেছি। আজ যে ইনিংসটা হার্দিক খেলল, তা সত্যি অসাধারণ। প্রমাণ করে দিল কতটা পরিণত হয়েছে ও।’’ বলেই স্ত্রীকে নিয়ে মাঠ ছাড়েন বর্তমানে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্কাউট। ইডেনে আরও একটি ঘটনা ঘটে, যা হয়তো ক্যামেরার নজর কাড়তে পারেনি। ম্যাচের বয়স তখন ১৯.৩ ওভার। স্ট্রাইকে আন্দ্রে রাসেল। প্যাভিলিয়ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা লাসিথ মালিঙ্গা অফ-স্টাম্পের বাইরে ফুল-লেংথ বল করলেন। ব্যাটের নীচ দিয়ে শট খেলে বাউন্ডারি কুড়িয়ে নেন রাসেল। জামাইকান অলরাউন্ডারের এই অদ্ভুত শট দেখে উঠে দাঁড়ালেন সচিন-পুত্র। বলে দিলেন, ‘‘কী অদ্ভুত শট।’’ ঠিক তার পরের বল ডট। সিঙ্গলস হতে পারত। কিন্তু অধিনায়ক দীনেশ কার্তিককে নন-স্ট্রাইকিং এন্ডে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেন রাসেল। তার পরের বলেও একই ঘটনা। ডট।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অর্জুন কিছুটা স্বস্তিবোধ করলেও হয়তো রাসেলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্যই মুখিয়ে ছিলেন। ইনিংসের শেষ বল করার জন্য যখন এগিয়ে আসছেন মালিঙ্গা। অর্জুনের মুখে তখন উৎকণ্ঠা। রাসেলের শরীরের অনেকটা বাইরেই বল করেছিলেন শ্রীলঙ্কার পেসার। কিন্তু তাতে আটকাতে পারেননি। লং-অনের উপর দিয়ে ছয় মেরে ইনিংস শেষ করেন রাসেল। ৪০ বলে অপরাজিত ৮০ রান করে যখন ড্রেসিংরুমের উদ্দেশে যাচ্ছেন। সেই সময়ে উঠে দাঁড়িয়ে রাসেলের ইনিংসকে কুর্নিশ করলেন সচিন-পুত্র। বলে দিলেন, ‘‘টেক আ বাও’’। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জন রাইটও বলে উঠলেন, ‘‘অদ্ভুত ক্রিকেটার।’’
অর্জুনের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর দিদি সারা তেন্ডুলকর। তিনি হয়তো রাসেলের ইনিংসে মুগ্ধ নন। বরং আতঙ্কিত। হয়তো বুঝে গিয়েছিলেন ২৩৩ রানের লক্ষ্যে পৌঁছনো খুব একটা সহজ নয়।
মুম্বইয়ের ইনিংস শুরু হতেই তাঁদের হতাশা যেন বাড়তে শুরু করল। ৩.৩ ওভারে রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পরে হয়তো সব আশাই শেষ হয়ে গিয়েছিল মুম্বই শিবিরের। আসন ছেড়ে ভিতরে চলে গেলেন প্রাক্তন কোচ জন রাইট। সেই সময়েই দর্শকের পুরো নজর কেড়ে নিলেন বাজিগর। দর্শকের দিকে হাত নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলেন, এখনই তাঁর দলকে প্রতিযোগিতা থেকে বার করে দেওয়া উচিত হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy