রিওর আর ৬
২০৭ দেশ। ১০২৯৩ প্রতিযোগী। ৩১ রকম খেলা। ৩০৬ ইভেন্ট।
১১৮ প্রতিযোগী। ১৫ রকমের খেলা। ৬৫ ইভেন্ট।
প্রথম পরিসংখ্যানটা সমগ্র রিও অলিম্পিক্সের। পরেরটা রিওতে টিম ইন্ডিয়া। দু’টোর মধ্যে যদি বা শতাংশের একটা মোটামুটি তুলনা হয়, কিন্তু পদকের প্রেক্ষিতে? উপরের ছয় পারবেন দেশকে পদক দিতে? সময় বলবে। আপাতত তাঁদের প্রস্তুতির ছবি দেখে নেওয়া যাক।
ভয়কে জয়
বেজিং গেমসে সোনাজয়ী শ্যুটার অভিনব বিন্দ্রা নামবেন একই দিনে। তবু ৬ অগস্ট ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে জিতু রাই মহানায়ক হয়ে উঠতে পারেন রিও-র রেঞ্জে। যদিও উনত্রিশের জিতুর এই ইভেন্ট প্রধান নয়। সেটা ৫০ মিটার পিস্তল। কিন্তু জিতু ইদানীং ১০ মিটার এয়ার পিস্তলেও নানা পদক জিতে চলেছেন। বলেও দিয়েছেন, ‘‘পুরো ব্যাপারটা দাঁড়িয়ে থাকবে অলিম্পিক্সের রেঞ্জে আমার ভেতরের ভয়টাকে আমি কতটা নিয়ন্ত্রণে রেখে গুলি ছুড়তে পারব তার উপর।’’
এক বনাম চার
লন্ডন গেমসে ব্রোঞ্জজয়ী হায়দরাবাদি ব্যাডমিন্টন তারকা রিওতে পঞ্চম বাছাই। একটু ভাল ড্র পেলে শেষ আটের আগে সত্যিকারের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার সম্ভাবনা খুব কম। আর একটা চিনা মহাতারকা বা নিজের প্রধান কাঁটা স্পেনের ক্যারোলিনা মারিনকে হারিয়ে দিলে কোনও একটা পদক ২০১৬ অলিম্পিক্সেও হয়তো রয়েছে সাইনা নেহওয়ালের। বেঙ্গালুরুতে বিমল কুমারের ট্রেনিংয়ে সাইনা চূড়ান্ত রিও-প্রস্তুতি নিয়েছেন নেটের উল্টো দিকে চার জনের বিরুদ্ধে একাই খেলে! তাঁর কথায়, ‘‘যে দিন আমি পুরো একশো ভাগ ফিট, সে দিন যে কাউকে হারাতে পারি। রিওতে সে রকম কয়েকটা দিন আমার চাই।’’
বাঙালির প্রোদুনোভা
‘ফ্ল্যাট ফুটেড’ বলে ডাক্তাররা আগরতলার দীপা কর্মকারকে ছোটবেলায় পরামর্শ দিয়েছিলেন জিমন্যাস্টিক্স করার। অর্ধ শতাব্দীরও পরে ভারত থেকে তিনি কেবল প্রথম অলিম্পিয়ান জিমন্যাস্টই নন, পদক সম্ভাবনাময় জিমন্যাস্ট! দীপার প্রোদুনোভা ভল্টের সেরা স্কোরের (মাত্র ০.১ পেনাল্টি-সহ ১৫.১০০) অনেক দূরে রিওতে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ ডোমিনিকান রিপাবলিকের ইয়ামিলেট পেনা, মিশরের ফাদওয়া মাহমুদের পারফরম্যান্স। কিন্তু তাঁকে চ্যালেঞ্জে ফেলতে রিওতে অবশ্য থাকবেন রাশিয়া-জার্মানির মতো জিমন্যাস্টিক্সে হেভিওয়েট দেশের প্রতিযোগীরাও। দীপা তাই বলেছেন, ‘‘রিওতে আমার প্রথম টার্গেট ফাইনালে ওঠার। তার পর পদকের কথা ভাবব।’’
রিওর রাতেও মনোযোগ
চার বছর আগে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে লিম্বা রাম অসহায় ভাবে দেখেছিলেন ফাইনালে দীপিকা কুমারী এগিয়ে থেকেও কী ভাবে পদক জয়ের টেনশনে পড়ে শেষমেশ লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করেন প্রতিপক্ষদের কাছে। লন্ডন অলিম্পিক্সের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতের তিরন্দাজ কোচ এ বার রিওতে রাতেও দীপিকা কুমারীর মনঃসংযোগ ঠিক রাখতে চান। বলেছেন, ‘‘এ বার রাতেও জেগে থাকব। দীপিকার মনোযোগে সামান্যতম চিড় যেন না ধরে, দেখব দিনরাত।’’
তারুণ্যের পাঞ্চ
শিব থাপা এখনও কোনও বিশ্ব পর্যায়ের টুর্নামেন্টে পদক পাননি। কিন্তু অলিম্পিক্স বক্সিংয়ে ভারতের একমাত্র পদকজয়ী বিজেন্দ্র সিংহের সার্থক উত্তরাধিকারী হয়ে ওঠার সব গুণ অসমিয়া তরুণের মধ্যে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের কনিষ্ঠতম অলিম্পিয়ান বক্সারের দাবি, ‘‘রিও যাওয়ার কঠিন রাস্তা আমাকে শক্তিশালী করেছে। আমার পাঞ্চ এখন বিশ্বমানের।’’
‘পাপে’র প্রায়শ্চিত্ত
নরসিংহের ডোপ কেলেঙ্কারি মুছতে সতীর্থ পালোয়ান যোগেশ্বর দত্ত ভরসা ভারতীয় কুস্তিমহলের। রিওর কুস্তি-নাটকে উপেক্ষিত চরিত্র যেন যোগেশ্বর। যিনি লন্ডন গেমসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে নীরবে প্রস্তুতি নিয়েছেন এ বার। যোগেশ্বর বলেছেন, ‘‘তেত্রিশেও আমি আশাবাদী রিওর মেডেল পোডিয়ামে দাঁড়ানো নিয়ে। কারণ আমি খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে ভীষণ সতর্ক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy