অনন্ত সাহা। নিজস্ব চিত্র
ম্যাকোর পর ক্রিকেটে কোচবিহারের ক্রীড়াপ্রেমীদের আশা বাড়ছে অনন্ত সাহাকে ঘিরে। চলতি মরসুমে অনূর্ধ্ব ২৩ বাংলা দলে ঘরের ছেলের ধারাবাহিক নজরকাড়া পারফরম্যান্সে সেই আশা আরও বেড়েছে।
অনূর্ধ্ব ২৩-এ সাফল্যের নিরিখে অনন্তের রঞ্জি দলে খেলার সুযোগ পাওয়ার দাবিও জোরাল হচ্ছে বলে মনে করছেন জেলার ক্রীড়াপ্রেমীদের অনেকে। অনন্ত নিজে অবশ্য এই ব্যাপারে মাথা ঘামাতে চান না। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বাংলার সম্ভবনাময় ওই তরুণ ক্রিকেটার সাফ জানিয়েছেন, আপাতত শুধু ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স করে যাওয়াই তাঁর পাখির চোখ। অনন্ত বলেন, “নিজের কাজটা করে যেতে চাই। ভাল পারফরম্যান্স করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। সেটাকেই ফোকাস করতে চাইছি। অন্য কিছু নয়।”
তবে রঞ্জি ট্রফি খেলা, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন নিয়েই তিনি যে এগোতে চান তা জানিয়ে দিয়েছেন। অনন্ত বলেন, “সেই স্বপ্নটা তো রয়েইছে।” অনন্তের স্বপ্ন পূরণের ব্যাপারে কোচবিহার জেলার বাসিন্দা প্রাক্তন ক্রিকেটার শিবশঙ্কর পাল (ম্যাকো) অনন্তকে সহযোগিতা করছেন। ম্যাকো বলেন, “পারফরম্যান্স ধরে রাখাই শুধু নয়, মাটিতে পা রেখে চলতে হবে। পারফরম্যান্সের কিন্তু শেষ বলে কিছু নেই। তাই এমন পারফরম্যান্স করতে হবে যাতে নিজের জায়গাটা তৈরি হয়।” ম্যাকোর উদ্যোগে জোরে বল করার জন্য ফিট থাকার ব্যাপারেও জোর দিচ্ছেন অনন্ত। রণদেব মৈত্রের কাছে ম্যাকোই নিয়ে গিয়েছেন তাঁকে। ম্যাকো বললেন, “আমি যেটা অনেক দেরিতে পেয়েছি, সেটা নতুনদের সময়ে দিতে চাইছি।”
অনন্তের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী তুফানগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার কর্তারাও। কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমাতেই ম্যাকো ও অনন্তের বাড়ি। মহকুমার চিলাখানার বাসিন্দা অনন্ত। তুফানগঞ্জ মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব চাঁদমোহন সাহা বলেন, “দু’জনেই আমাদের গর্ব। ম্যাকোর পর অনন্তকে ঘিরে এখন আমাদের সমস্ত স্বপ্ন। প্রতিভাবান অনন্ত তা পূরণ করবে বলেই আমাদের আশা।” দিনহাটা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “আগামী দিনে রঞ্জি দলে ওর কথা ভাবতে হবেই।” কোচবিহারের প্রাক্তন ক্রিকেটার জগৎরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “নিজে জোরে বল করতাম। তাই অনন্তকে নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী।”
অনন্তের উত্থান সাধারণ পরিবার থেকে। জাহির খান, আশিস নেহেরা, গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো বোলারদের ‘টিপস’ পেয়েছেন। অনুর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে মহারাষ্ট্র, ত্রিপুরা, মুম্বই, অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে আগুন ঝরানো বোলিংয়ের পর এবার জানুয়ারিতে পঞ্জাব ও সৌরাস্ট্রের বিরুদ্ধেও তাঁর সাফল্য দেখতে মুখিয়ে রেয়েছেন বাংলার ক্রীড়াপ্রেমীরা। ক্রিকেটপ্রেমী কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “ওঁর আরও সাফল্য দেখতে চাই আমরা।”
অন্য এক ক্রিকেটপ্রেমীর কথায়, জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েও প্রথম একাদশে ম্যাকো থাকতে না পারার আক্ষেপ, এখনও শহর তথা জেলার অনেকের মুখেই শোনা যায়। সেই যন্ত্রণাটা এখনও বিঁধে রয়েছে। অনন্ত সেই দুঃখ ঘোচাবেন বলে স্বপ্ন দেখি। সেই স্বপ্ন এখন জেলার সকল ক্রীড়াপ্রেমীদের চোখেই ভাসছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy