জুটি: দুই নায়ক ফার্নান্দো এবং মেন্ডিস (ডান দিকে)। এএফপি
এশিয়ার প্রথম দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ জিতে ইতিহাস তৈরি করল শ্রীলঙ্কা। প্রথম টেস্টে ডারবানে এক উইকেটে জিতেছিল দিমুথ করুণারত্নের দল। শনিবার পোর্ট এলিজ়াবেথ টেস্টেও ফ্যাফ ডু প্লেসির দলকে আট উইকেটে হারিয়ে সিরিজ ২-০ জিতে নিলেন দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেটাররা। যা সাম্প্রতিক কালে বিশ্ব ক্রিকেটে একটি বড় অঘটন।
এর আগে দেশের মাটিতে শেষ সাতটি টেস্ট সিরিজেই জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডারবানে প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কার কাছে হারের আগে ঘরের মাঠে ১৯টি টেস্টের মধ্যে ১৬টি টেস্টেই জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্য দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে শেষ সাত টেস্ট সিরিজের মধ্যে ছ’টিতেই হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। ড্র করেছিল একটি টেস্ট সিরিজে। এ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে দলে বড় রকমের রদবদল করেছিলেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা। অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমল-সহ বেশ কয়েকজনকে বাদ দেওয়া হয়েছিল দল থেকে। এ দিন জয়ের পরে যে কথা উল্লেখ করে দিমুথ করুণারত্নের দলের প্রশংসা করেছেন ইয়ান বিশপ, টম মুডি, কুমার সঙ্গকারারা। বিশপ তাঁর স্বভাবসিদ্ধ রসিকতার সঙ্গেই টুইট করেন, ‘দলে একাধিক সিনিয়র ক্রিকেটার নেই। তা সত্ত্বেও এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। যেখানে গিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতাই কঠিন কাজ। অসম্ভব বলে সত্যিই কিছু নেই।’
দ্বিতীয় টেস্টে শ্রীলঙ্কার জয়ের অন্যতম নায়ক ওশাদা ফার্নান্দো ও কুশল মেন্ডিস। জিততে গেলে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে তুলতে হত ১৯৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় উইকেটে এই দু’জনের জুটিই ১৬৩ রান তুলে জয়ের কাছে দলকে পৌঁছে দেন। ১০৬ বল খেলে অপরাজিত ৭৫ রান করেন ওশাদা। অন্য দিকে, কুশল মেন্ডিস ১১০ বলে করেন অপরাজিত ৮৪ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৪ রানে শ্রীলঙ্কার দুই উইকেটের পতনের পরে এই দু’জনেই বিপক্ষ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ব্যাট হাতে সংহারক মূর্তিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও বোলারকেই রেয়াত করেননি তাঁরা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, দিনের দ্বিতীয় ওভারে কাগিসো রাবাডার ছয় বলে নয় রান দেওয়া। দিনের শুরুতে প্রথম আট ওভারেই ৩৬ রান স্কোর বোর্ডে যোগ হওয়ার পরে বল করতে আনা হয়েছিল ডেল স্টেনকে। কিন্তু সেই স্টেনকেই তাঁর প্রথম তিন বলে তিনটি চার মেরে কুশল মেন্ডিস পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। বাঁ হাতি স্পিনার কেশব মহারাজ চার ওভারে দেন ২৩ রান। যার মধ্যে ছিল এই স্পিনারকে মারা ওশাদার একটি লম্বা ছয়। এরই মাঝে, ব্যক্তিগত ৭০ রানের মাথায় কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ ফেলেন হাশিম আমলা।
ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি দ্বিতীয় টেস্টে শ্রীলঙ্কার জয়ের কারিগর তাদের বোলাররাও। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১২৮ রানে অলআউট করে কুশল মেন্ডিসদের কাজটা আরও সহজ করে দিয়েছিলেন সুরঙ্গা লাকমল (৪-৩৯), ধনঞ্জয় ডি’সিলভারা (৩-৩৬)।
টস জিতে প্রথমেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল ২২২ রানে। জবাবে শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৫৪ রানে। তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত জয় হল তাদেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy