ম্যাচের আগে নেটে প্রস্তুতি সারছেন বিরাট কোহালি, শিখর ধবন এবং রবীন্দ্র জাডেজা। ছবি: এএফপি
মাঠের মধ্যে ভারত-পাক মহারণের পাশাপাশি মাঠের বাইরে আর একটি যুদ্ধ চলছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজকদের সঙ্গে ভারতীয় দলের। প্র্যাকটিসের জায়গা নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়েছিল। এ বার তা গড়িয়েছে ক্রিকেটারদের জন্য সরবরাহ করা খাবার পর্যন্ত।
বার্মিংহামে এসে ভারতীয় দল অভিযোগ জানিয়েছে যে, প্র্যাকটিসের সময় পর্যাপ্ত খাবারও তাঁদের জন্য ছিল না। নতুন এই ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার। আগের দিনই প্র্যাকটিসের জায়গা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল দল। খুবই ছোট প্র্যাকটিস মাঠে ভাল করে বোলারদের দৌড়নোর জায়গাও ছিল না। ওয়ার্ম-আপ বা ক্যাচ প্র্যাকটিসও করা যায়নি।
অধিনায়ক বিরাট কোহালি নিজে স্থানীয় সংগঠকদের নিয়ে অন্য মাঠ দেখতে গিয়েছিলেন। এজবাস্টন মাঠে যুব দলের জন্য প্র্যাকটিসের একটি মাঠ আছে। গাছপালায় ঘেরা মনোরম সেই মাঠই এক নম্বর প্র্যাকটিস অঞ্চল। সেই মাঠে অনুশীলন করতে চেয়েছিলেন বিরাট-রা। বৃহস্পতিবারই তাঁদের সেই মাঠ দেওয়া হয়নি। শুক্রবারেও দেওয়া হবে না বলা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের কর্তারা শুনতে চাননি। তাঁরা আইসিসি-কে জোরালো ভাবে বলেন, যুব দলের ওই মাঠেই তাঁরা অনুশীলন করতে চান। পুঁচকে মাঠে যাবেন না।
ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে জোরাজুরি করার পরে শুক্রবারে তা দিতে রাজি হয় আইসিসি। যদিও গত কাল বৃষ্টি হওয়ায় যুব দলের মাঠ ছেড়ে ইন্ডোরে চলে যেতে হয়েছিল ভারতীয় দলকে। সেখানে গিয়েই খাবার নিয়ে নতুন ঘটনা ঘটে। প্র্যাকটিসের পর লাঞ্চ রুমে গিয়ে ক্রিকেটারেরা দেখেন, যথেষ্ট পরিমাণে খাবার নেই। খুব বেশি পদও রাখা হয়নি তাঁদের জন্য। তা নিয়ে আর এক প্রস্ত অভিযোগ জানানো হয়েছে। আইসিসি-কেও অসন্তোষের কথা জানানো হয়।
তার জেরে শনিবার পরিস্থিতিতে কিছু উন্নতি ঘটেছে বলে জানা গেল। এমনিতে রবিবার ম্যাচ বলে মূল মাঠে প্র্যাকটিস করার সুযোগ পাওয়ার কথাই ছিল। মূল মাঠে ক্যাচিং প্র্যাকটিস বা ফুটবল খেলা চলল। পাশের যুব দলের ভাল মাঠে ছিল নেট প্র্যাকটিসের আয়োজন। তা দেখে কিছুটা হলেও অসন্তোষের পরিমাণ কমেছে। ভারতীয় দলের এক জন বলছিলেন, ‘‘বার্মিংহামে এসে এই প্রথম আমরা ভাল করে প্র্যাকটিস করতে পারছি।’’ অব্যবস্থা ঠিকঠাক হলেও ভারতীয় দল যে খুব প্রসন্ন রয়েছে, বলা যাবে না। বরং অনেকে গজগজ করছেন যে, ‘‘বিশ্বমানের একটা টুর্নামেন্টে এত বার অব্যবস্থা নিয়ে বলতে হবে কেন! ভারতে গত বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়ে গেল। সেখানে এ রকম অব্যবস্থা ছিল নাকি?’’ শুধু আইসিসি নয়, ইংল্যান্ড ক্রিকেট সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে যেহেতু তারা স্থানীয় সংগঠক।
সাধারণত দেখা যায় ম্যাচের আগের দিন খুব দীর্ঘক্ষণ প্র্যাকটিস করে না দল। কিন্তু বার্মিংহামে আসার পর থেকে যেহেতু বৃষ্টি এবং উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধের অভাব চলছিল, রবিবারের মহারণের আগে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে পুরোদস্তুর প্র্যাকটিস করলেন কোহালি, ধোনি-রা। আর তাঁদের সৌভাগ্য হচ্ছে যে, শনিবার অন্তত বৃষ্টি হয়নি। ঝলমলে রোদে মহারণের মহড়া সারতে পারলেন তাঁরা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও উন্নতির খবর পাওয়া গেল যে, রবিবারের ম্যাচ বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নাকি কিছুটা কমেছে। তবে পুরোপুরি এখনও উধাও হয়নি। স্থানীয়দের মতে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এখানে মোটামুটি ভাবে মিলে যায়। তাই বৃষ্টির আশঙ্কা যদি কিছুটা কমেও, পুরো পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ হবে কি না, অনিশ্চিত। এজবাস্টন মাঠে শনিবারের প্র্যাকটিস দেখতে উপস্থিত ক্রিকেটভক্তরাও দেখা গেল বলাবলি করছেন, ‘‘ম্যাচটা যেন হয়। রবিবার অন্তত যেন বৃষ্টি না হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy