অভিযোগ: সচিন, সৌরভের মতোই প্রাক্তন কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন লক্ষ্মণও। ফাইল চিত্র
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকররা সরব হয়েছিলেন আগেই। এ বার ভারতের প্রাক্তন টেস্ট তারকা ভিভিএস লক্ষ্মণও গ্রেগ চ্যাপেলের বিরুদ্ধে তাঁর নিরবতা ভাঙলেন। তাঁর মতে, চ্যাপেল ছিলেন একজন ‘অনমনীয় ও একগুঁয়ে’ কোচ। সদ্য প্রকাশিত আত্মজীবনীতে তাঁর আরও অভিযোগ, একটি আন্তর্জাতিক দল কী ভাবে পরিচালনা করতে হয়, তা তিনি জানতেন না। এখানেই থামেননি লক্ষ্মণ। পরিষ্কার বলেছেন, গ্রেগ চ্যাপেলের সময় ভারতীয় দল দুই থেকে তিনটি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল।
নিজের লক্ষ্মণ লিখেছেন, ‘‘কোচ দলের মধ্যে কয়েক জনকে পছন্দ করতেন। তাঁদেরই তিনি দেখতেন। বাকিদের সব কিছুই নিজেদের করতে হত। আমাদের চোখের সামনে দলটা ভেঙে গিয়েছিল।’’ এখানেই থামেননি লক্ষ্মণ। তাঁর আরও কথা, ‘‘গ্রেগের পুরো মেয়াদটাই তিক্ততায় ভরা। উনি অনমনীয় ও একগুঁয়ে মানসিকতা নিয়ে কাজ করতেন। একটা আন্তর্জাতিক দল কী ভাবে চালাতে হয়, জানতেন না। মাঝে মাঝেই ভুলে যেতেন যে খেলোয়াড়রাই মাঠে নেমে খেলে। ওরাই তারকা। কোচ নয়।’’ প্রসঙ্গত, গ্রেগ চ্যাপেল ২০০৫ সালের মে থেকে ২০০৭-এর এপ্রিল পর্যন্ত।
আত্মজীবনীর বেশ কয়েক জায়গায় লক্ষ্মণ লিখেছেন, গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে। তাঁর দাবি, ‘‘অনেক শুভেচ্ছা আর সমর্থন নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন গ্রেগ। কিন্তু উনি এসে দলটাকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দেন। আমার ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়ের জন্য ওঁরও অবদান ছিল। ফলাফল দেখলে মনে হতে পারে, কখনও কখনও ওঁর কৌশল কাজে এসেছিল। কিন্তু সেই সব ফলাফলে কোচের ভূমিকা ছিল না।’’ লক্ষ্মণের আরও কথা, ‘‘উনি ছিলেন হঠকারী। অন্যদের প্রতি কোনও অনভূতিও ছিল না। কোনও ম্যান-ম্যানেজমেন্টের ক্ষমতাও ওঁর ছিল না। আত্মবিশ্বাসহীন একটা দলের মধ্যে উনি বিভেদের বীজও বপন করেছিলেন। ব্যাটসম্যান গ্রেগ চ্যাপেলকে শ্রদ্ধা করলেও কোচ গ্রেগ চ্যাপেলকে একই দৃষ্টিতে দেখি না।’’
আত্মজীবনীতে আরও নানা কথা লিখেছেন লক্ষ্মণ। তাঁর শৈশবের কথা। কী ভাবে ডাক্তার না হয়ে ক্রিকেটার হয়ে গিয়েছিলেন। ইডেন গার্ডেন্সকে কতটা ভালবাসেন তাও লিখেছেন। যে ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনি ২০০১ সালে ২৮১ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন। ‘‘যদি বলি, ইডেন গার্ডেন্স আমার স্বপ্নপূরণের মঞ্চ, তা হলে অনেকটাই কমিয়ে বলা হবে। আসলে যে ক্যানভাসে আমি ছবি আঁকতে চাই, যেখানে নিজের স্বপ্ন সত্যি করতে চেয়েছিলাম, সেটাই ইডেন আমাকে দিয়েছিল,’’ লিখেছেন প্রাক্তন টেস্ট তারকা। ভারতের এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান ২০১২ সালে অকস্মাৎ ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। অথচ অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাত্র কয়েক দিন পরেই তাঁর হায়দরাবাদে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে খেলার কথা ছিল।
লক্ষ্মণ পরিষ্কার জানিয়েছেন, মনের ভিতর থেকে ডাক এসেছিল বলেই তিনি খেলা ছেড়ে দেবেন ঠিক করেন। বাইরের কেউ বা কোনও শক্তি এ ব্যাপারে তাঁকে প্রভাবিত করেনি। সঙ্গে জানিয়েছেন, অবসর ঘোষণার আগে জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন। সচিন যেমন তাঁকে অনুরোধ করেন অবসর ঘোষণার জন্য ডাকা সাংবাদিক সম্মেলন পিছিয়ে দিতে। লক্ষ্ণণ সে পরামর্শ শোনেননি। তাঁর কথা, ‘‘এই একটা জায়গায় আমি ওঁর অনুরোধ রাখতে পারিনি। কারণ আমি তার আগেই মনস্থির করে ফেলেছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy