Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্যাপ্টেন আর বাবা, দু’জনকেই চিন্তায় ফেলেছে আকাশ

গত বারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআর অধিনায়ক আবার কলম ধরলেন। নাইট সংসারের সব হালহকিকত জানাচ্ছেন গৌতম গম্ভীরসময় কী ভাবে বদলে যায় ভাবতে বেশ মজা লাগে। এখন আমার কাছে ম্যাচের আগের দিন মানে ভরপুর আশঙ্কা আর অনুমানের। ব্যাটগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া চলছে তো চলছেই। খাওয়াদাওয়া কমে গিয়েছে। জিমে বেশি দৌড়চ্ছি। কার্টুন চ্যানেল দেখছি (তাতে কী!)। টিমের সঙ্গে ট্রেনিং করছি অবশ্যই। গতকালটা যদিও আমার অন্য রকম গিয়েছিল। দিনটা দু’ভাগে কাটিয়েছিলাম।

চোট লাগবে না তো? হেলমেট পরীক্ষায় গম্ভীর। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

চোট লাগবে না তো? হেলমেট পরীক্ষায় গম্ভীর। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৭
Share: Save:

সময় কী ভাবে বদলে যায় ভাবতে বেশ মজা লাগে। এখন আমার কাছে ম্যাচের আগের দিন মানে ভরপুর আশঙ্কা আর অনুমানের। ব্যাটগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া চলছে তো চলছেই। খাওয়াদাওয়া কমে গিয়েছে। জিমে বেশি দৌড়চ্ছি। কার্টুন চ্যানেল দেখছি (তাতে কী!)। টিমের সঙ্গে ট্রেনিং করছি অবশ্যই।

গতকালটা যদিও আমার অন্য রকম গিয়েছিল। দিনটা দু’ভাগে কাটিয়েছিলাম। এক দিকে আমার ছোট্ট মেয়ের কাশি সামলানো আর ওর বন্ধ নাক খোলার চেষ্টা করেছি। অন্য দিকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গে আমাদের প্রথম ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়েছি।

আইপিএল মরসুমে আপনাদের সবাইকে উষ্ণ স্বাগতম— যে টুর্নামেন্টকে এক স্মার্ট কপিরাইটার একেবারে যথার্থ ট্যাগলাইন দিয়েছেন।

‘ইন্ডিয়া কা তেওহার!’

প্রথমেই সেই উৎসবের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে বলি— হ্যাঁ, এই অসাধারণ লিগের গতবারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমাদের এ বারও ভাল করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস আছে...কিন্তু...আমি আত্মবিশ্বাসের গা থেকে ঔদ্ধত্ব আর আত্মতুষ্টি ঝরতেও দেখেছি। আর সেটাই আমরা নিজেদের ভেতর বলাবলি করছি, কলকাতায় আমি দোসরা এপ্রিল পা রাখা ইস্তক। কয়েক পশলা বৃষ্টি আমাদেরকে ইডেনের ইন্ডোরে ঢুকিয়ে দিয়েছে বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও সব মিলেজুলে প্রথম ম্যাচের আগে যা প্র্যাকটিস হয়েছে তা নিজেদের নাট-বল্টুগুলো টাইট করে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

আমরা এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করা ছাড়া এক সঙ্গে গেমপ্ল্যানও করছি। ভিডিও গেমসও খেলছি সবাই মিলে। হাসছিও এক সঙ্গে। ভয় পেলে সেটাও পাচ্ছি এক সঙ্গেই— অন্যতম আশঙ্কার বিষয় ছিল সুনীল নারিনের বোলিং অ্যাকশন মুম্বই ম্যাচের আগে ঠিক সময়ে ছাড়পত্র পাবে কি না? সৌভাগ্যবশত, নারিনের সব বক্সেই এখন ‘রাইট’ দাগ। বুধবার শহরে বৃষ্টির পূর্বাভাস দুই অধিনায়ক আর আমার ভেতরের বাবাকে চিন্তায় ফেলছে। ম্যাচে ওভার সংখ্যা কমে যাওয়া বা খেলা বারবার বন্ধ হওয়া কোনওটাই এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটের জন্য আদর্শ নয়। দেখা যাক, শেষমেশ কী হয়!

আর আমার ভেতরের বাবা ভয় পাচ্ছে এই ভেবে যে, জোলো আবহাওয়া ছোট্ট আজিনের সর্দি-কাশির জন্য মোটেই সুবিধের নয়। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ওকে গরম জলের ভাপ নিতে বলেছেন। কিন্তু সেটা নিতে আজিনের ভীষণ অপছন্দ। এই সময়টায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গরম জলের ভাপ আজিনকে দিয়ে টানিয়ে সেটাকে ওর টনসিল পর্যন্ত পাঠানো। কলকাতার হোটেলে আমার ঘরটা এখন পাগলের বাড়ি! যে ঘরে আজিনের দিদাকে নিয়ে তিন জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সবে হাঁটতে শেখা একটা এগারো মাসের বাচ্চার পিছনে রাত এগারোটাতেও ছোটাছুটি করছে! সব কমবয়সি এবং ভীত বাবা-মার মতো আমরাও অ্যালোপ্যাথির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাচ্চাকে হোমিওপ্যাথি ওষুধও খাওয়াচ্ছি। এটা খুব ভাল রকমই জেনে যে, আজিনের পেডিয়াট্রিসিয়ান ব্যাপারটা অপছন্দ করেন।

সল্টলেক স্টেডিয়ামে আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে সবে হোটেলে ফিরেছি। দারুণ উপভোগ্য ফাংশন হল। ফারহান আখতারকে খুব ভাল লাগল। ও আর আমির খান আমার প্রিয় অভিনেতা। আমার এই কলাম লেখার সময় আজিন ঘুমোতে ঘুমোতেও নাক ডলছে। আমার চিন্তা হচ্ছে। জানালা দিয়ে দেখছি বাইরে এখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ে চলেছে, মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। চিন্তা আরও বাড়ছে। কিন্তু যে বিষযটা আমার হাতে নেই সেটা নিয়ে ভেবে কী-ই বা করব!

এমএস ধোনির সঙ্গে দেখা হল এখানে। বাবা হওয়ার জন্য ওকে অভিনন্দন জানালাম। ওর ছোট্ট মেয়ে ভাল আছে। তবু বেশ বুঝতে পারছি এই বৃষ্টি-বিদ্যুতের চমকানি ওকেও এখন কেমন নার্ভাস করে তুলবে। দেখো বাবা, পিতৃত্ব সবাইকেই নার্ভাস করে তোলে...এমনকী সবচেয়ে ঠান্ডা মাথার লোকটাকেও!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE