Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘মেসি কী চায়, বুঝতে হবে সতীর্থদের’

গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো দেখার পরে এই লড়াইয়ে কোনও একটা দলকে এগিয়ে রাখতে পারছি না। আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বে ভাল না খেললেও পরের রাউন্ডে উঠেছে।

নায়ক: নক-আউটে এ বার বাধা ফ্রান্স। আত্মবিশ্বাসী লিয়োনেল মেসি পৌঁছে গেলেন কাজানে।  ছবি:ইনস্টাগ্রাম

নায়ক: নক-আউটে এ বার বাধা ফ্রান্স। আত্মবিশ্বাসী লিয়োনেল মেসি পৌঁছে গেলেন কাজানে।  ছবি:ইনস্টাগ্রাম

সেবাস্টিয়ান ভেরন
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৪:৩৮
Share: Save:

খুব ভাল পারফরম্যান্স বলব না। তবে গ্রুপ পর্যায়ে বেশ কঠিন পথ পেরনোর পরে দারুণ জয় পেলাম আমরা নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে। আর্জেন্টিনার সামনে এ বার ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জয়ী দল ফ্রান্স। বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর প্রথম লড়াইয়ে দুই দল মুখোমুখি আজ, শনিবার। ম্যাচটা হবে কাজানে। দুই দলে যে রকম নামী সব তারকারা রয়েছে তাতে, জমজমাট লড়াই হতে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে।

গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো দেখার পরে এই লড়াইয়ে কোনও একটা দলকে এগিয়ে রাখতে পারছি না। আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বে ভাল না খেললেও পরের রাউন্ডে উঠেছে। ফ্রান্স সহজেই শেষ ষোলোয় উঠলেও কিন্তু তিনটে ম্যাচে খুব ভাল খেলেনি। আশা করি আমরা শনিবার ফ্রান্সকে হারাতে পারব। তবে সেটা কিন্তু সহজ হবে না। অবশ্য নাইজিরিয়া ম্যাচে জেতার পরে আমাদের ফুটবলাররা নিশ্চয়ই অনেক চাপমুক্ত এখন। যে ব্যাপারটা ওদের খেলায় আরও উন্নতি আনতে পারে।

আগেও বলেছি আর্জেন্টিনা মেসির উপর প্রচণ্ড নির্ভরশীল। তার যুক্তিও রয়েছে। কিন্তু মেসির উপর নির্ভর করে থাকা কিন্তু চলবে না। মেসি দুরন্ত ফুটবলার। যে কোনও ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে। তবে আবার বলছি, মেসি কিন্তু মারাদোনা নয়। দু’জনের সঙ্গেই খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। দু’জনকেই আমি খুব কাছ থেকে চিনি। মেসি কিন্তু দিয়েগোর মতো নেতা নয়। আমি মেসির দক্ষতা নিয়ে কিছু বলছি না। নেতা হিসেবে মারাদোনার সঙ্গে মেসির তুলনা করলে কেমন দাঁড়াবে সেটাই বলার চেষ্টা করছি। ফুটবলার হিসেবে মেসি অসাধারণ। আর্জেন্টিনা কোচ এই সুবিধেটাই নেওয়ার চেষ্টা করছেন। মেসিকে খোলা মনে খেলানোর চেষ্টা করছেন। যেন মাঠে নামার পরে ওর উপর কোনও চাপ না থাকে।

অন্য দিকে, ফ্রান্স দলেও খুব ভাল মানের ফুটবলাররা রয়েছেন। যার মধ্যে অনেকেই তরুণ এবং দুরন্ত গতিতে খেলতে পারেন। তবে ফ্রান্স দলে মেসির মতো কিন্তু কেউ নেই। আর্জেন্টিনার মতো অভিজ্ঞ ফুটবলারও নেই ওদের। তবে ওরা দলগত ফুটবল খেলে। প্রতিপক্ষ অনুযায়ী ছক কষে নামে। ৪-৪-২ বা তিন জন ইনসাইড মিডফিল্ডারকে রেখে খেলে ওরা। ওদের ফুটবলারদের মধ্যে ব্যক্তিগত দক্ষতা যেমন রয়েছে, তেমনই রক্ষণ থেকে আক্রমণে দলটা সাবলীল ভাবে উঠতে পারে। তাই ম্যাচের শুরু থেকেই মাঝমাঠে চাপ বাড়াতে হবে। ফ্রান্স দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণে ওঠে। ফুটবলাররা জায়গা নিয়ে খেলে এবং ওদের একসঙ্গে আক্রমণ করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই ফ্রান্সকে চেপে ধরতে গেলে ওদের রক্ষণে দ্রুত হানা দিতে হবে। ফাঁকা জায়গাগুলোর সুবিধা নিতে হবে। তবে এর সঙ্গে আর্জেন্টিনাকে একটা ব্যাপারে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। শুরু থেকেই বলের দখল ছা়ড়া চলবে না। তা হলে ফ্রান্স দ্রুত পাল্টা আক্রমণে উঠে আসতে পারে।

দুই প্রান্তে আর্জেন্টিনার দ্রুত গতির ফুটবলার চাই। যে দায়িত্ব সামলাতে পারে এদুয়ার্দো সালভিয়ো এবং ক্রিস্তিয়ান পাভন। মাঝমাঠে মেসি। যে জায়গা থেকে বেশি গোলগুলো আসছে। গন্সালো হিগুয়াইন মাঝমাঠে ওদের ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রাখার দায়িত্ব নিতে পারে। এ ভাবে পরিকল্পনা করলে ফ্রান্সকে ধাক্কা দেওয়া যেতে পারে। ওদের রক্ষণ কিন্তু খুব শক্তিশালী নয়। আর্জেন্টিনাকে ওদের মাঝমাঠের ডিফেন্ডারদের দুই প্রান্তের দিকে ঠেলে দিতে হবে। যাতে মেসি মাঝমাঠের দখল নিতে পারে। আর্জেন্টিনার অন্য ফুটবলারদের বুঝতে হবে মেসি কী চাইছে। এই দায়িত্ব নেওয়ার মতো ফুটবলার কিন্তু আমাদের দলে রয়েছে। আর আমার মনে হয়, এখন দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে বা মেসিকে কী ভাবে আরও সাহায্য করা যায় সে ব্যাপারে ফুটবলারদের মতামতও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। সতীর্থরা যত ভাল খেলবে মেসিও তত জ্বলে উঠবে। আশা করি শেষ ষোলোয় মেসি আর ওর সতীর্থরা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে দুরন্ত ফুটবল উপহার দেবে আমাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE