ফিল হিউজের সম্মানে টিম ইন্ডিয়ার নীরবতা পালন। প্র্যাকটিস ম্যাচে নামার আগে। ছবি: এএফপি।
ম্যাক্সভিল থেকে অ্যাডিলেড। ফিল হিউজেসকে চোখের জলে বিদায় দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ফের মাঠমুখো।
তরুণ ক্রিকেটারের চিরবিদায়ের শোক সামলে অস্ট্রেলিয়া ফিরছে অস্ট্রেলিয়াতেই। মঙ্গলবার থেকে অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্ট যে।
ডন ব্র্যাডম্যানের দেশকে শোকের আবহ থেকে ক্রিকেটে ফেরাতে বৃহস্পতিবারই মাঠে নেমে পড়লেন বিরাট কোহলিরা। টেস্টের আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিটুকু সেরে ফেলতে। দলের বোলাররা তাতে দাপট দেখালেও ব্যাটসম্যানদের শুরুটা ভাল হল না। আগের দিন ম্যাক্সভিলে হিউজের শেষযাত্রায় থাকা রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, মুরলী বিজয়রা অনেক রাতে অ্যাডিলেডে এসে পৌঁছনোয় এ দিন তাঁরা যাতে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান, সে জন্য ভারতীয়দের প্রথমে ফিল্ডিং করতে পাঠানো হয় টস ছাড়াই। ওই সময় দলকে নেতৃত্ব দেন ইশান্ত শর্মা। যিনি এ দিন শিকারহীনই থেকে গেলেন।
বরুণ অ্যারন চার ও মহম্মদ শামি দু’উইকেট এবং কর্ণ শর্মা তিন উইকেট নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশকে ২৪৩-এ গুটিয়ে দিলেও পাল্টা ব্যাট করতে নেমে ভারতীয়রা দিনের শেষে ৯৯-২। শিখর ধবন কোনও রান না করেই ফিরে যাওয়ার পর পূজারাও ২২ রানে ফিরে গেলে দলের হাল ধরেন ওপেনার মুরলী বিজয় ও বিরাট কোহলি। তাঁরাই যথাক্রমে ৩৯ ও ৩০ করে ক্রিজে অপরাজিত। শুক্রবার দ্বিতীয় দিন তাঁরা ব্যাটিংয়ের হাল ফিরিয়ে টেস্টের আগে ভাল প্রস্তুতি নিয়ে নিতে পারেন কি না, সেটাই দেখার। তবে প্রথম দিন তাঁদের ব্যাটিংয়ে তেমন ছন্দ খঁুজে পাওয়া গেল না। ধবনের মতো কোহলিরও বিনা রানেই ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
ফিল্ডিংটাও এই ম্যাচে ঝালিয়ে নিলেন ভারতীয়রা। বিশেষ করে স্লিপ ফিল্ডিং। পূজারা, ধবন, রাহানেকে দিয়ে শুরু করা তিন স্লিপে পরে দেখা যায় জাডেজা, রায়না, বিজয়কেও। মাঝে কিছুক্ষণ আবার কোহলিকেও স্লিপে ফিল্ডিং করতে দেখা যায়। স্লিপ ক্যাচিং যেখানে ইংল্যান্ড সফরে ছিল ভারতীয় দলের অন্যতম দুর্বলতা, এখানে আর তার পুণরাবৃত্তি হতে দিতে চান না কোহলিরা।
কিন্তু এত করেও শেষ রক্ষা হবে কি? পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক ওয়াসিম আক্রম বলছেন, ফিল হিউজের মৃত্যুর শোকের আবহে অস্ট্রেলিয়া আরও বেশি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলবে, যা সামলানো ভারতের পক্ষে কঠিন হবে। আক্রমের বক্তব্য, “অস্ট্রেলিয়া হিউজের জন্য সিরিজটা জিততে চাইবে। মরিয়া হয়ে ওরা তেমনই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলবে। ভারতের পক্ষে যা খুবই কঠিন হয়ে উঠবে। অস্ট্রেলিয়ার দলটা যে বেশ ভাল।”
ফিল হিউজের মৃত্যুর পর এই সিরিজে পেসাররা সহজেই বাউন্সার দিতে পারবেন কি না, এই প্রশ্নে আক্রম বলেন, “এটুকু বলতে পারি, বাউন্সার দেওয়া বন্ধ করবে না পেসাররা। অস্ট্রেলিয়ানদের পক্ষে মাঠে ফেরাটা কঠিন হবে। তবে একবার মাঠে নেমে পড়লে ও কিছুক্ষণ কাটিয়ে দেওয়ার পর ওরা ফের স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।”
মিচেল জনসনের মতো ভয়ঙ্কর পেসারের সামনে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পড়তে হবে, এটা ভেবে যেমন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা চিন্তিত, তেমনই তার ফল নিয়ে আরও বেশি আতঙ্কিত। একজন পেস বোলারের শরীরি ভাষার ভয়ঙ্করতা নিয়ে আক্রম বলেন, “ব্যাটসম্যানের মনে ভয় ধরানোর জন্য পেসারদের ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে হয়। এ শুধু যে উইকেট তোলার জন্য, তা কিন্তু নয়। ব্যাটসম্যানকে ব্যাকফুটে রাখার জন্য অনেকে এই কৌশল অবলম্বন করে। ব্যাটসম্যানদের এক্ষেত্রে পাল্টা মার দেওয়া উচিত।”
ক্লার্কের বদলি শন মার্শ
ফিল হিউজই এখন অস্ট্রেলিয়ানদের শক্তি, প্রেরণা। সদ্য প্রয়াত ফিল হিউজের কথা ভেবে ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই মঙ্গলবার দলের ছেলেদের মাঠে নামার আহ্বান জানালেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেম্যান। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে নামার কথা ছিল হিউজের। মাইকেল ক্লার্ক এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। তাঁর জায়গাতেই হিউজের খেলার কথা শোনা গিয়েছিল। সেই জায়গায় এখন শন মার্শকে রাখলেন অজি নির্বাচকরা। ৯ তারিখ থেকে অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্ট হলেও তাতে সব ক্রিকেটার খেলার মতো মানসিক অবস্থায় আছেন কি না, তারই ঠিক নেই। তবে কাউকেই মাঠে নামার জন্য জোর করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন লেম্যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy