শিলিগুড়িতে উদ্বিগ্ন আফগান মেয়েরা। শনিবার।—নিজস্ব চিত্র
ব্রেকফাস্ট সেরে সবে নিজের রুমে ঢুকেছেন। ঠিক তখনই হোটেল কর্তৃপক্ষের ফোন, ‘‘দু’লক্ষ আটত্রিশ হাজার টাকার বিল বাকি। চেক আউট করার আগে সেটা মেটাতে হবে আপনাদেরই।’’
কথাগুলো শুনেই চক্ষু চড়কগাছ আফগানিস্তান মহিলা ফুটবল দলের ম্যানেজার খালিদা পোপালের। কোথা থেকে মেটাবেন এত টাকা? হাতে তো সময়ও নেই। এ দিকে আবার দুপুর তিনটে এবং চারটের বিমানে দেশে ফেরার কথা তাঁদের।
শিলিগুড়ির সেবক রোডের হোটেলে বছরের শেষ দিনের সকালে ততক্ষণে হইচই পড়ে গিয়েছে। পুরো বিল মেটাতে না পারলে যে ‘চেক আউট’ করতেও পারবে না আফগান টিম। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে যে, বিল মেটানোর দায়িত্ব কার? কোনও বিদেশি টিম সাফ কাপ খেলতে এলে, তার যাবতীয় খরচ তো ফেডারেশনই মেটাবে। ঠিক, মেটাবে। তবে শুধু নিয়মের মধ্যে থাকা খরচগুলো। অতিরিক্ত খরচ নয়।
ফেডারেশনের নিয়ম হল, কোনও দল টুর্নামেন্ট শুরুর দু’দিন আগে আসবে। ম্যাচ থেকে সেই দলের বিদায়ের পরের দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। আফগান দলের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হয়। গত ২৬ ডিসেম্বর টুর্নামেন্ট শুরুর চার দিন আগে অর্থাৎ ২২ ডিসেম্বর আফগান দল সাফে চলে আসে। এবং গত ২৯ ডিসেম্বর টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ার পরেও অতিরিক্ত এক দিন থেকে যায় তারা। নিয়ম অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে তিন দিনের বিল মেটানোর দায় আফগানদের। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত কয়েক জনের থাকা-খাওয়ার খরচও দেওয়ার কথা তাদের। আফগানিস্তান দলের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘হোটেল খরচের টাকা ট্রান্সফার করা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। তবে সবার সহযোগিতায় সেটা মিটে যায়।’’
আফগানিস্তানের সমস্যা অবশ্য মেটে স্থানীয় সংগঠক আইএফএ-র তৎপরতায়। আফগান টিমের সমস্যা কানে যেতেই আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় যোগাযোগ করেন ফেডারেশনে। উৎপলবাবু বলছিলেন, ‘‘এই খরচ আফগানিস্তান টিমেরই মেটানোর কথা। কিন্তু টাকা ট্রান্সফারে কিছু সমস্যা হচ্ছিল। তাই ফেডারেশন অনুমতি দেওয়ায় আমরা সেটা মিটিয়ে দিয়েছি।’’ টাকা মেটালেও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছেই। হোটেল বুকিংয়ের সময় আইএফএ-র তরফে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল হোটেল কর্তৃপক্ষকে। অথচ আফগানিস্তান দল টাকা দিতে সমস্যায় পড়লে সে ক্ষেত্রে তারা কেন সমস্যা মেটাতে গোড়াতেই সক্রিয় হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy