Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

রিপ্লে ম্যাচে হেরে এ বার নতুন যুদ্ধ শুরু সিএবি-র

প্রথম যুদ্ধ মঙ্গলবার শেষ। পরিণাম— অপমানজনক হার। দ্বিতীয় যুদ্ধ শুরু মঙ্গলবারই। পরিণাম— ? বাংলা বনাম গুজরাত রিপ্লে নিয়ে টানা নাটক চলছিল। এবং যবনিকা পতনের দিনেও তা শেষ হল না। বরং নতুন নাটকীয়তা নিয়ে ঢুকল দ্বিতীয় পর্বে। নতুন যুদ্ধের ইঙ্গিত নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৭
Share: Save:

প্রথম যুদ্ধ মঙ্গলবার শেষ। পরিণাম— অপমানজনক হার। দ্বিতীয় যুদ্ধ শুরু মঙ্গলবারই। পরিণাম— ?

বাংলা বনাম গুজরাত রিপ্লে নিয়ে টানা নাটক চলছিল। এবং যবনিকা পতনের দিনেও তা শেষ হল না। বরং নতুন নাটকীয়তা নিয়ে ঢুকল দ্বিতীয় পর্বে। নতুন যুদ্ধের ইঙ্গিত নিয়ে।

এ দিন বোর্ডের টুর্নামেন্ট কমিটির বৈঠক ছিল মুম্বইয়ে। শরদ পওয়ারের শহরে। আর সেখানে জিতে গেলেন পওয়ারই। সিএবি-কে অপমানজনক ভাবে শুনতে হল, বাংলা বনাম গুজরাত রঞ্জি রিপ্লে হবে না! বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল। দু’টো টিমের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে। বাংলা পাবে এক পয়েন্ট, গুজরাত এক পয়েন্ট! অন্তর্নিহিত অর্থ— মনোজ তিওয়ারির বাংলার রঞ্জি অভিযানকে প্রবল চাপে ফেলে দেওয়া হল। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে আজ বুধবার থেকে শুরু ম্যাচে জিততে হবেই। জিতলেও অপেক্ষা করতে হবে বাকি ফলাফলের জন্য। কারণ শেষে যে গুজরাত ম্যাচটা খেলার কথা ছিল, রাতারাতি তা আর নেই।

এত কিছুর পরেও পুরো ঘটনার একটা দ্বিতীয় পর্ব থাকল। এমন অপমানজনক হারের পরেও নতুন যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে ফেলল সিএবি।

বোর্ড বৈঠকের রেজাল্ট-আউটের পর রীতিমতো অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায় সিএবিতে। উত্তেজিত বলাবলি চলতে থাকে, বোর্ড নিজে রিপ্লের সিদ্ধান্ত নিল। আবার তারাই সেটা বাতিল করে দিল! এ তো বাংলার প্রতি পরিষ্কার অবিচার! বিবৃতিও আসতে থাকে। সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন মুম্বইয়ে ছিলেন এমসিসি বৈঠকে। তিনি বলে দেন, ‘‘পরিস্থিতিটা জানি। অনুরাগ ঠাকুর, অজয় শিরকের কাছে ব্যাপারটা ঠিকঠাক জায়গায় তুলব।’’

সিএবি-র দুই যুগ্ম সচিব— তাঁরাও ছাড়েননি। অভিষেক ডালমিয়া বলে দেন, ‘‘খুব দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। আমরা ছাড়ছি না। শেষ পর্যন্ত লড়ব।’’ আর এক যুগ্ম সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন যে, প্রেসিডেন্ট শহরে ফিরলে এটা নিয়ে বসবেন। সবচেয়ে আক্রমণাত্মক দেখিয়েছে সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে-কে। তিনি বলে দেন, ‘‘বোর্ড যদি সিএবি-র স্বার্থ না দেখে, তা হলে বোর্ডে থেকে আমাদের লাভ কী? বোর্ডের যে যে কমিটিতে সিএবি পদাধিকারীরা আছেন, তাঁরা যদি ইস্তফা দেন, আমি দিতে রাজি।’’

এক কথায়, চরম নাটকীয়তা আমদানি হয়ে যায় বাংলার ক্রিকেট সংস্থায়। প্রত্যাঘাতের স্ট্র্যাটেজিও শোনা গেল। আর সেটা নাকি আটচল্লিশ থেকে বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে হবে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় চিঠি দিচ্ছেন বোর্ডকে। যেখানে বলা হবে, রিপ্লে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত একমাত্র টেকনিক্যাল কমিটিই নিতে পারে। সিনিয়র টুর্নামেন্ট কমিটি নয়। তাদের কাজ সুপারিশ করা। সেই সুপারিশ যাবে টেকনিক্যাল কমিটির কাছে।

আরও একটা ব্যাপার তুলে আনা হচ্ছে। ওড়িশা-ঝাড়খণ্ড ম্যাচ বুধবার থেকে হওয়ার কথা ছিল তামিলনাড়ুর দিন্দিগুলে। কিন্তু জয়ললিতার প্রয়াণে তার রিপ্লে এ দিন দিয়েছে সিনিয়র টুর্নামেন্ট কমিটি। দু’টো অভিযোগ। এক, টুর্নামেন্ট কমিটি রিপ্লের সিদ্ধান্ত জানানোর কেউ না। দুই, ওড়িশা ম্যাচ যদি আকস্মিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে রিপ্লে পেতে পারে, তা হলে বাংলাও পারে। অতিরিক্ত দূষণ আর ধোঁয়াশায় ম্যাচ বাতিল— সেটা তবে কী? বলা হচ্ছে, নয়াদিল্লির ওই বাংলা-গুজরাত ম্যাচ খেললে ক্রিকেটাররা অসুস্থ হয়ে পড়তেন।

প্রশ্ন উঠছে সিনিয়র টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম রায়ের ভূমিকা নিয়েও। সিএবিতে ক্ষুব্ধ ভাবে বলাবলি চলছে, তিনি এত আশ্বাস দিলেন। সোমবার রাতেও সেটা হল। রিপ্লে না পেলে ইস্তফা দেবেন— মিডিয়ায় এত বড় কথাও বললেন। কিন্তু আসল দিন বৈঠকেই গেলেন না! গোটা দিন ফোন সুইচ অফ করে বসে থাকলেন। কেউ কেউ পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন, এর পিছনে বোর্ড রাজনীতি। সব মিলিয়ে, চূড়ান্ত ডামাডোলের পরিবেশ।

কিন্তু বাংলা? এ বার তার কী হবে?

সিএবি প্রেসিডেন্ট কথা বলেছেন টিমের সঙ্গে। ‘‘আমি বলেছি, ম্যাচ ছাড়া আর কিছু নিয়ে না ভাবতে,’’ বলছেন সৌরভ। বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি আবার বললেন, ‘‘চাপ অনেক বেড়ে গেল। এখন জেতা ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’

ঠিকই। বাকিটা তো এখন বোর্ড আর সিএবি-র হাতে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CAB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE