Advertisement
১১ জুন ২০২৪

বল তো ঘোরাই দরকার তবে তিন দিন পর থেকে

বক্তা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। বেঙ্গালুরু টেস্টের জন্য কোহালিদের কী পরামর্শ দেবেন, জিজ্ঞেস করায় বললেন...

সুমিত ঘোষ
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০৪:০০
Share: Save:

বক্তা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। বেঙ্গালুরু টেস্টের জন্য কোহালিদের কী পরামর্শ দেবেন, জিজ্ঞেস করায় বললেন...

প্রশ্ন: পুণের হারের জন্য দু’জনকে বাদই দিয়ে দিলেন?

মহম্মদ আজহারউদ্দিন: আমি বাদ দিতে বলিনি। বলেছিলাম, দলে পরিবর্তন করার দরকার হলে দু’টো বদল করা যেতে পারে। একটা ইশান্ত শর্মা। অন্যটা ওই ছেলেটা, জয়ন্ত যাদব...ইয়েস। কাকে খেলাবে না খেলাবে সেটা ওরাই ঠিক করবে।

প্র: আপনি অধিনায়ক হলে কি এই দু’টো বদলই করতেন?

আজহার: হ্যাঁ, করতাম। অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান খেলাতাম। তিন স্পিনার খেলালে এক জন পেসার কমিয়ে খেলাও। পার্টটাইম কাউকে নতুন বলে বলটা করতে হবে। আমাদের সময় যেমন সৌরভ করে দিত। তবে আমি তিন স্পিনার খেলাব কি না ভাবতাম।

প্র: কী বলছেন! আপনি অধিনায়ক থাকার সময়েই তো তিন স্পিনারের রণনীতি আবিষ্কৃত হয়।

আজহার: হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু আমাদের সময়ে দু’জন অলরাউন্ডার ছিল। কপিল দেব আর মনোজ প্রভাকর। দু’জনই দারুণ অলরাউন্ডার ছিল। তাই অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান খেলাতে হতো না। তিন স্পিনারে খেলতে পারতাম ওদের জন্যই। এই দলের সেই সুবিধে নেই।

প্র: অধিনায়ক থাকলে এই সময় কী বলতেন ছেলেদের?

আজহার: বলতাম যে, একটা হারেই এত দিন ধরে তৈরি হওয়া আত্মবিশ্বাস ভেঙে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। বলতাম, বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দরকার নেই। যে যা বলছে, বলতে দাও। আমরা নিজেরা তো জানি, টানা উনিশটা টেস্টে এমনি-এমনি অপরাজিত থাকিনি। সেই বিশ্বাস রেখে পরের টেস্টে ঝাঁপিয়ে পড়ি চলো।

প্র: পুণেতে ঘূর্ণি তৈরি করাটা বিপদ ডেকে আনল মনে হয়?

আজহার: তা নয়তো কী! ও রকম পিচে কেন খেলতে যাব? আমাদের দেশে তো এমনিতেই বল টার্ন করবে তৃতীয় বা চতুর্থ দিন থেকে। পুণেতে প্রথম ঘণ্টাতেই বল ঘুরতে শুরু করে দিল। দ্বিতীয় ওভারেই কি না বল করছে স্পিনার। আর আমার মনে হয়, বিপক্ষের দুই স্পিনারকে ছোট করে দেখেছিল ভারতীয় দল। ওরা বোধ হয় ভেবেছিল, ইংল্যান্ডের মতোই আজেবাজে স্পিনার নিয়ে খেলতে আসছে অস্ট্রেলিয়া।

আরও পড়ুন:

সূর্যাস্তের শোভা দেখে নতুন সূর্যোদয়ের স্বপ্ন

প্র: মানে সিরিজের শুরুতে সতর্ক না থাকার জন্যই কি এই পরিণতি?

আজহার: ওদের ব্যাটিং দেখে তাই মনে হয়েছে আমার। প্রতিপক্ষকে হাল্কা ভাবে নিয়েছিল। ক্রিকেট এই কারণেই মজার খেলা। নাথন লায়ন আর স্টিভ ও’কিফ দারুণ লাইনে বল করেছে। যেটা আমাদের স্পিনাররা পারেনি। রবীন্দ্র জাডেজা ঘূর্ণি উইকেট পেলে ভাল বল করে। কিন্তু ভুল লাইনে বল করল পুণেতে। ও’কিফ উইকেটের সোজা-সোজা বলে করেছে। অস্ট্রেলীয় বোলারদের দেখে মনে হয়েছে ওরা অনেক বেশি হোমওয়ার্ক করে এসেছে। ভারতকে এ বার দ্রুত ওদের ধরতে হবে।

প্র: শ্রীধরন শ্রীরামকে চেনেন? তিনিই নাকি ও’কিফদের স্পিন-গুরু।

আজহার: অবশ্যই চিনি শ্রীরাম-কে। আমি নিশ্চিত, ও অস্ট্রেলীয় স্পিনারদের খুব ভাল উপদেশ দিয়েছে। না হলে এতটা মাপা লেংথে বল করতে পারত না ওরা।

প্র: ভারত সিরিজে ফিরবে?

আজহার: অবশ্যই ফিরতে পারে। এই ভারতীয় দলটাকে আমার দারুণ লাগে। কী দুর্ধর্ষ মনোভাব বিরাট কোহালিদের! জেতা ছাড়া কিছু ভাবেই না। প্রত্যেকটা বলের জন্য কী মরিয়া ভাবে ঝাঁপায়! এটাই তো মনোভাব হওয়া উচিত।

প্র: আপনি অধিনায়ক থাকলে বেঙ্গালুরুতে কী রকম পিচ চাইতেন?

আজহার: স্বভাবসিদ্ধ ভারতীয় পিচ চাইতাম। প্রথম তিন দিন যেখানে দারুণ ব্যাটিং চলবে। তার পর বল ঘুরবে। কেউ যদি এখন পরামর্শ দেয় পুরোপুরি পিচের প্রকৃতি পাল্টে ব্যাটিং উইকেটে খেলো, তা হলে ভুল হবে। বল ঘোরা দরকার। বিদেশি দলকে হারানোর ওটাই সেরা উপায়। তবে টেস্ট জিততে গেলে প্রথম ইনিংসে পাঁচশো রানও তুলতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE