ন্যু কাম্প মানে কী?
বিপক্ষ দল প্রবেশ করবে স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু ক্লাইম্যাক্সটা হবে হতাশা ও যন্ত্রণার।
গ্যালারিতে বসে অ্যাওয়ে সমর্থকদের অসহায় ভাবে সাক্ষী থাকতে হবে দলের বিপর্যয়ের।
বিপক্ষ কোচের মগজাস্ত্রও যেখানে স্রেফ তাঁর নোটপ্যাডে আটকে থাকবে। মাঠে সেটা কার্যকর হবে না।
বার্সেলোনার ঘরের মাঠ মানেই তো বিপক্ষের নরক। যেখানে উদাসীন ভাবেই বিপক্ষ সমর্থকরা প্রবেশ করেন। কারণ তাঁরা জানেন, দিনের শেষে যাই হোক না কেন, বার্সেলোনার জয় অনিবার্য। প্রশ্ন হচ্ছে, কত গোলের।
আটলেটিকো মাদ্রিদের জন্যও তো পরিস্থিতিটা সে রকমই। এটা ঠিক, তারা আর আগের সেই দুর্বল দল নেই। দিয়েগো সিমিওনের সৌজন্যে স্পেনের এক অনামী ক্লাব এখন হয়ে উঠেছে তৃতীয় শক্তি। যারা সমানতালে দুই বড় দাদা-কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। কিন্তু যতই তারা শেষ তিন বছরে দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠুক, যতই তারা লা লিগা জিতুক, বার্সার ঘরের মাঠে আটলেটিকো সেই পুরনো আটলেটিকোই। যারা গত দশ বছরে জয়ের মুখ দেখতে পায়নি।
বুধবার আবার নরকে ফিরতে চলেছে আটলেটিকো। লা লিগার হেভিওয়েট লড়াইয়ে মিনি ক্লাসিকোতে মুখোমুখি হতে চলেছে বার্সেলোনা ও আটলেটিকো। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে অবশ্য একটু হলেও বদলের হাওয়া আটলেটিকো শিবির জুড়ে। দিয়েগো সিমিওনে আত্মবিশ্বাসী এ বার হয়তো ন্যু কাম্প অভিশাপ কাটিয়ে উঠবে দল। কারণ একটাই। দলের ফরোয়ার্ড লাইনে রয়েছেন সেই ফরাসি হিটম্যান। সাম্প্রতিক কালে যিনি নিয়মিত গোলের মধ্যে রয়েছেন। একটার পর একটা বিপক্ষ রক্ষণ একার হাতে ধ্বংস করছেন। তিনি— আঁতোয়া গ্রিজম্যান।
সিমিওনে বলছেন, ‘‘গ্রিজম্যান বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে একজন। ওর গোলের চোখ দারুণ। যখন ওকে সই করাই, সবাই আমার সমালোচনা করেছিল। কিন্তু এখন দেখুক তারা।’’ মরসুম শুরুতে হোঁচট খেলেও আবার ফর্মে ফিরেছে আটলেটিকো। শেষ ম্যাচে বার্সার মতো রোজিব্ল্যাঙ্কোসও পাঁচ গোল করেছিল। গ্রিজম্যান যে ম্যাচে জোড়া গোল করেন। তবে এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেও ট্রেনিং নয়, বান্ধবীর সঙ্গে বার্বেকিউ করতে ব্যস্ত ছিলেন গ্রিজম্যান। নিজের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছুরি হাতে গ্রিজম্যান পোস্ট করেন, ‘‘সুস্বাদু বার্বেকিউ করার চেষ্টায়।’’
আটলেটিকোর যদি একজন গ্রিজম্যান থাকে, তবে বার্সার আছে ‘ঈশ্বর’। সোনালি চুল ও চাপদাড়ি নিয়ে যিনি এখনও বিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন। লুইস এনরিকে তাই তো বলছেন, আটলেটিকো এগারো জনকে নীচে নামিয়ে দিলেও তাঁর দলের দশ নম্বর ঠিক জায়গা খুঁজে নেবে। ‘‘আমি জানি আটলেটিকোর রক্ষণ দারুণ। ওরা খুব শক্তিশালী দল। দিয়েগো সিমিওনের মতো কোচ আছে। তাতেও বলব মেসি ঠিক জায়গা বের করে নেবে। মেসির মতো ফুটবলার থাকলে কোনও চিন্তা হয় না,’’ বলছেন এনরিকে।
তবে এমএসএন-এর জন্য পাল্টা দাওয়াইও তৈরি আছে সিমিওনের। সেই ওষুধের নাম দিয়েগো গোদিন। গ্রিজম্যানের মতো স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন গোদিনও। যিনি ব্যাকলাইনে থাকা মানেই বিপক্ষ স্ট্রাইকারের যন্ত্রণা। সিমিওনে অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি খুব বেশি প্রশংসা করব না গোদিনের। ও দারুণ ফর্মে আছে। আশা করছি বার্সার বিরুদ্ধেও দুর্দান্ত একটা পারফরম্যান্স দেখব।’’
এমএসএন। আটলেটিকো রক্ষণ। ন্যু কাম্প। সিমিওনে বনাম এনরিকে। লা লিগা টেবলের দুই বনাম চার। কার স্বপ্নপূরণ হবে? কার হবে স্বপ্নভঙ্গ? এখন সেটাই দেখার।