Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
যে ছবি দেখতে চাইনি আমরা

এক ভারতীয়ের মন্ত্রেই ধরাশায়ী বিরাট-বাহিনী

ভারতীয় দাওয়াইয়েই ভারতে সাফল্য এল অস্ট্রেলিয়ার। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বোলিং ফুটেজ ও প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার শ্রীধরন শ্রীরামের পরামর্শ। সঙ্গে দুবাইয়ে ভারতের মতো পরিবেশ তৈরি করে অনুশীলন।

আবার বিধ্বংসী। দ্বিতীয় ইনিংসেও ছ’উইকেটের স্পেলের পরে সতীর্থদের সঙ্গে ম্যাচের নায়ক স্টিভ ও’কিফ। শনিবার পুণেতে। -এএফপি

আবার বিধ্বংসী। দ্বিতীয় ইনিংসেও ছ’উইকেটের স্পেলের পরে সতীর্থদের সঙ্গে ম্যাচের নায়ক স্টিভ ও’কিফ। শনিবার পুণেতে। -এএফপি

রাজীব ঘোষ
পুণে শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

ভারতীয় দাওয়াইয়েই ভারতে সাফল্য এল অস্ট্রেলিয়ার। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বোলিং ফুটেজ ও প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার শ্রীধরন শ্রীরামের পরামর্শ। সঙ্গে দুবাইয়ে ভারতের মতো পরিবেশ তৈরি করে অনুশীলন। এ দেশে আসার আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তুতিতে এগুলোই ছিল প্রধান বিষয়। যার ফল পাওয়া গেল প্রথম টেস্টে।

ম্যাচে বাঁ-হাতি স্পিনার স্টিভ ও’কিফের এক ডজন শিকার ও নাথন লায়নের পাঁচ উইকেট। ভারতের মাটিতে কোনও টেস্টে অস্ট্রেলীয় স্পিনারদের এমন দাপট আগে কোনও দিন দেখা গিয়েছে বলে মনে করা যাচ্ছে না।

ম্যাচের সেরা মালয়েশিয়াজাত ৩২ বছর বয়সি ও’কিফ বলেন, ‘‘ভারতে আসার আগে যে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তা এখানে সত্যিই কাজে আসবে কি না, তা নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম। প্রথম টেস্টেই বুঝলাম, প্রস্তুতিটা তা হলে ঠিকঠাকই ছিল। এখন স্বস্তি। দুবাইয়ে ভারতীয় পরিবেশ তৈরি করে নতুন, পুরনো সব রকম বলে অনুশীলন করেছি। ওখানে শ্রী (শ্রীরাম) আমাকে খুব সাহায্য করেছে। খুব স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি ওর কাছ থেকে। সেগুলোই এই টেস্টে কাজে লাগাতে পারলাম।’’

‘সক’ (ও’কিফের ডাকনাম) যখন শ্রীরামকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন, তখন নাথন লায়ন দিলেন আর এক খবর। এ দিন ম্যাচের পর টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘অশ্বিন এ দেশের কোন শহরে কী ভাবে বল করে, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছি আমরা। ওর বোলিংয়ের ভিডিও চালিয়ে দেখেছি ও কোথাকার পরিবেশকে কী ভাবে কাজে লাগায়। আমরাও ওকে অনুসরণ করেই ওর মতো বোলিং রপ্ত করার চেষ্টা করেছি।’’ দেখা গেল, অশ্বিন-কে অনুসরণ করে তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন ও’কিফ-লায়নরাই।

আরও পড়ুন:

টি-টোয়েন্টি যুগে স্পিনের দেশেই লুপ্ত আজ স্পিন খেলার টেকনিক

ভারত সফরের প্রস্তুতির জন্য যে ও’কিফকে এ বার বিগ ব্যাশের মাঝখান থেকেই তুলে নেওয়া হয়েছিল, জানান অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘ভারতে ভাল কিছু করার জন্য সক যথেষ্ট আত্মত্যাগ করেছে। ওকে বিগ ব্যাশের মাঝখান থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, যাতে ও এই সফরের প্রস্তুতি নিতে পারে। এখানে ও গ্রিপ আর সিম পজিশন পাল্টে বল করছে, যাতে এখানকার উইকেটকে কাজে লাগাতে পারে। ওর শেখার ইচ্ছা প্রবল আর নিতেও পারে খুব তাড়াতাড়ি। এগুলোই ওর প্লাস পয়েন্ট।’’

ব্যর্থতার আগুনটা বোধহয় বেঙ্গালুরু পর্যন্ত জিইয়ে রাখতে চাইছেন বিরাট কোহালি। সাংবাদিক বৈঠক সেরে যখন তিনি ফিরছিলেন, তখনই ও’কিফকে নিয়ে আসছিলেন স্মিথ। দুই ক্যাপ্টেন এক জায়গায় আসতে কোহালি একবারও কিন্তু তাকালেন না দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর দিকে।

সাংবাদিকদের ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘শ্রীলঙ্কায় গলে প্রথম টেস্টে আমরা এ ভাবেই ধাক্কা খেয়েছিলাম। তার পর কিন্তু আমরা নিজেদের সেরাটা দেখিয়ে দিয়েছিলাম। আমার মনে হয়, এই ধাক্কাটা আমাদের দরকার ছিল। এখন আমরা ফের খুঁজে বার করব, কোন কোন জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। সেগুলো শুধরে পরের টেস্টে নামব।’’

ব্যাটিংই যে তাঁদের ডোবাল, তা স্বীকার করে নিয়ে কোহালি বলেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে খুব খারাপ ব্যাটিং করেছি আমরা। তার প্রভাব পড়ল দ্বিতীয় ইনিংসেও। কিন্তু যে দলের এগারো রানে সাত-সাতটা উইকেট পড়ে যায়, যারা একই ব্যাটসম্যানের চার-পাঁচটা ক্যাচ ফস্কায়, তাদের জয় প্রাপ্য নয়। এটা মেনে নিতেই হবে আমাদের। খারাপ ক্রিকেট খেললে তার মাশুল দিতেই হবে। আবার ভুল শুধরে ফিরেও আসতে হবে।’’

পিচকে দোষ দিতে চান না বিরাট। তাঁদের ইচ্ছায় পুণের পিচে অনেক সংশোধন হয়েছে, তাও স্বীকার করতে রাজি নন। দুষছেন নিজেদের পারফরম্যান্সকে। যেটা শুধরে পরের টেস্টেই ঝাঁপানোর আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি। বললেন, ‘‘জিতি-হারি আমাদের মানসিকতা একই আছে। বেঙ্গালুরুতে তা বোঝাতে পারব আশা করি। ওখানে আমাদের অনেক ভাল ফর্মে দেখবেন।’’

স্মিথের আশঙ্কাও এটাই। ভারত যে খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো পাল্টা আঘাত করবে, তা ধরে নিচ্ছেন তিনি। তাই বলছেন, ‘‘এই জয়ের ফলে আমাদের লড়াইটাও আরও কঠিন হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aussie Spinners Succeed Ashwin
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE