অবশেষে এল জয়। ছবি: এএফপি।
নিজেদের ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে হোয়াইওয়াশ হওয়ার আশঙ্কাটা খাঁড়া হয়ে ঝুলে ছিল স্টিভ স্মিথদের উপর। অ্যাডিলেডে গোলাপি বলের টেস্ট জিতে শেষ পর্যন্ত সেই লজ্জার হাত থেকে নিস্তার পেল অস্ট্রেলিয়া।
এ দিন দ্বিতীয় ইনিংসে জেতার জন্য ১২৭ তাড়া করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারের বিস্ফোরক ৪৯ রানে ফাফ দু’প্লেসিদের সাত উইকেটে হারিয়ে সান্ত্বনার জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। একই সঙ্গে টানা পাঁচ টেস্টে হারের ধারাবাহিকতাটাও ভাঙায় সফল হলেন স্টিভ স্মিথরা।
অ্যাডিলেডে দিন-রাতের টেস্ট শুরু হওয়ার আগেই সিরিজ পকেটে পুরে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে তৃতীয় টেস্ট হয়ে দাঁড়ায় নেহাতই নিয়ম রক্ষার। অস্ট্রেলিয়ার কাছে কিন্ত সেই মরা ম্যাচটাই ছিল মর্যাদার লড়াই। ১৮৮৭-র পর থেকে কখনও ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়নি ব্যাগি গ্রিন বাহিনী। কিন্তু এই সিরিজে পারথে ১৭৭ রানে হারার পর হোবার্টের ইনিংস হারে পর্যুদস্ত অস্ট্রেলিয়ার যেন দেখতে পাচ্ছিল অশনি সঙ্কেত।
অ্যাডিলেডে ওভালে লড়াইয়ে নামার আগে যে জন্য নিজেদের প্রায় নতুন করে ঢেলে সাজায় তারা। হোবার্টের পরাজিত একাদশের পুরো পাঁচ জনকে বদলে ফেলা হয়। ফল গোলাপি বলের লড়াইয়ে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৫৯ রানে শেষ করার পর প্রথম ইনিংসে ১২৪ রানে এগিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
সান্ত্বনার জয়ের পরে মেয়েকে নিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন ওয়ার্নার। রবিবার। ছবি: রয়টার্স
দ্বিতীয় ইনিংসে মিচেল স্টার্ক (৪-৮০), হ্যাজেলউড (২-৪১), নাথান লায়নরা (৩-৬০) আড়াইশোয় বেঁধে রাখলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। যারা বুঝতেই পারছিল চতুর্থ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলার মূলধন হাতে নেই। স্টিভন কুক (১০৪) অবশ্য ফিল্যান্ডার (১৭) ও রাবাদাকে (৭) নিয়ে লড়ার চেষ্টা করেন। স্টার্কের বলে কুক বোল্ড হওয়ায় সব শেষ হয়ে যায়।
অস্ট্রেলিয়া যখন ১২৭ রানের লক্ষ্য সামনে নিয়ে নামছে, তখনও ১৯৯৪-এর সিডনি টেস্ট টেনে এনেছিলেন কেউ কেউ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যে টেস্টে জয়ের জন্য ১১৭ তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গিয়েছিল ১১১ রানে।
আলোচনাটা কি শুনে ফেলেন ডেভিড ওয়ার্নার? শুনে থাকুন বা না থাকুন, প্রথম বল থেকেই নিজের পরিচিত সংহার মূর্তি ধারন করলেন তিনি। এবং ৫১ বলে ৪৯ করে রান আউট হওয়ার আগে দলের উপর থেকে চাপ প্রায় শূন্যয় নামিয়ে আনলেন। অভিজ্ঞ ওয়ার্নারের পাশে অভিষেক টেস্টে গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ করে অপরাজিত ম্যাথু রেনশ। উসমান খোয়াজা শূন্য রানে ফেরার পর স্মিথ দলকে জয়ে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বটা নিয়েছিলেন। ৮২ বলে ৪০ করে যখন অ্যাবটের বলে ক্যাচ তুলে ফিরলেন, তখন দরকার ছিল মাত্র ২ রান।
জয়ের পর অভিভূত অজি ক্যাপ্টেন স্মিথ বলেন, ‘‘ছেলেরা যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এই ম্যাচটা জিতল, তাতে ক্যাপ্টেন হিসেবে আমি গর্বিত। সিরিজটা আমাদের মোটেই ভাল যায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা আর ফাফ আমাদের সব দিক থেকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ওদেরই সিরিজ জয়টা প্রাপ্য ছিল।’’ অন্য দিকে আফ্রিকান অধিনায়ক বলছেন, ‘‘খুব হতাশাজনক হার এটা। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে গেলে সত্যিই ভাল ক্রিকেট খেলতে হয়। তবে ক্যাপ্টেন হিসেবে আমি গর্বিত। এরকম একটা বোলিং বিভাগ থাকলে সেই দলটাকে নেতৃত্ব দেওয়া সহজ হয়ে যায়।”
দিনের শেষটা সম্ভবত তাৎপর্যের হয়ে রইল। টানা পাঁচ টেস্টে হারের ধারা ভেঙে অস্ট্রেলিয়া যখন ঘরে হোয়াইওয়াশের লজ্জা এড়াচ্ছে, ক্রিজে থাকল ব্যাগি গ্রিনের নতুন প্রজন্ম। জয় নিশ্চিত করলেন অভিষেককারী রেনশ ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy