Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বোপান্না চোক করল অলিম্পিক্সের চাপে

সানিয়া-বোপান্নাদের পদক জেতার সুযোগ আমার মতে শনিবার গভীর রাতে সেমিফাইনাল হারেই শেষ হয়ে গিয়েছিল! রবিবার রাতে ব্রোঞ্জ প্লে-অফে আমাদের মিক্সড ডাবলস টিম যে হারল সেটা আগের দিনের দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির হ্যাংওভার।

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৩৮
Share: Save:

সানিয়া-বোপান্নাদের পদক জেতার সুযোগ আমার মতে শনিবার গভীর রাতে সেমিফাইনাল হারেই শেষ হয়ে গিয়েছিল! রবিবার রাতে ব্রোঞ্জ প্লে-অফে আমাদের মিক্সড ডাবলস টিম যে হারল সেটা আগের দিনের দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির হ্যাংওভার।

সেমিফাইনালে ভেনাস-রাজীব রামের সঙ্গে প্রথম সেট অনায়াসে জেতার পরে দ্বিতীয় সেটের ২-২ থেকে বোপান্না আমাকে অবাক করে ‘চোক’ করল! সার্কিটে এত অভিজ্ঞ, তবু। তা সত্ত্বেও টাইব্রেকারে সুযোগ পেয়েছিল ম্যাচ বার করার। ৩-১ এগিয়ে ছিল। কিন্তু সেখান থেকে ৬-২, ২-৬, ১০-৩ হারল। যার পিছনে অনেকটাই কারণ বোপান্নার খুব খারাপ খেলা। দ্বিতীয় সেট থেকে সার্ভিসে অনেকগুলো ডাবল ফল্ট করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সময় বেশ কিছু বিশ্রী রিটার্নও মেরেছে। উল্টো দিকে তেমনই নিজের খেলাকে অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল ভেনাস। হাতের ব্যথা নিয়েও। অসাধারণ অলরাউন্ড টেনিস খেলল ছত্রিশ বছর বয়সেও। মার্কিন জুটির বিরুদ্ধে যা লড়ার লড়েছে সানিয়া।

রবিবার ব্রোঞ্জ প্লে-অফে চেক জুটি স্টেপানেক-হ্রাদেকার বিরুদ্ধেও তাই। যতটুকু খেলল সানিয়া-ই। আর বোপান্না আগের দিন ওর খারাপ খেলাটা যেখানে শেষ করেছিল, এই ম্যাচে যেন সেখান থেকে শুরু করল! প্রথম সেটে ওর খেলা দেখে আমার এক-এক সময় মনে হচ্ছিল ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে খেলছে! তার উপর স্টেপানেক নেটের সামনে যা সব ভলি নিয়েছে, রিটার্ন করেছে, অসাধারণ! বলতে গেলে স্টেপানেক একাই হারিয়ে দিল সানিয়াদের। তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় সেটের গোড়ায় নিজেরা ব্রেক হওয়ার পর ডাবল ব্রেক ব্যাক করে লড়াইয়ে ফিরেছিল ভারতীয় জুটি। কিন্তু এ দিন যেন আবার বিপদ ডেকে আনার পালা ছিল সানিয়ার! ৫-৫ অবস্থায় নিজের সার্ভে জোড়া ডাবল ফল্ট করে ০-৪০ পিছিয়ে পড়ল। ব্রোঞ্জের স্বপ্ন ওখানেই শেষ! তার পরে চেকদের ৬-১, ৭-৫ ম্যাচ জেতাটা ছিল সময়ের অপেক্ষা।

যার পরে বোপান্নার বদলে লিয়েন্ডার থাকলে কি মিক্সড ডাবলসে সানিয়া পদক জিতত রিওতে— এই প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে আমি এ ভাবে তুলনায় যাব না। গত অলিম্পিক্সেই লিয়েন্ডার-সানিয়া জুটি খেলেছিল। তা ছাড়া ব্রোঞ্জ প্লে-অফে লি-হেশ অবধি হেরেছে। ২০০৪ আথেন্সে ওদের টাইব্রেকে ১৪-১৬ হারটা তো আরও মর্মান্তিক ভারতীয় টেনিসমহলের কাছে।

আসলে আমার মনে হয়, শনি-রবি যে দু’টো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ সানিয়া-বোপান্না অলিম্পিক্সে খেলল, সেগুলো গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেললে হয়তো জিতে যেত। গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতি বছর চারটে। আর অলিম্পিক্স চার বছরে এক বার। তাই এই মঞ্চের চাপটাই আলাদা। বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলার মতো। বোপান্নারা সেই পাহাড়ের চাপে হয়তো ‘চোক’ করল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE