Advertisement
E-Paper

সমালোচকরা অনেক দূরে বসে আছে, তোপ শাস্ত্রীর

তিন দিনের বিশ্রাম কাটিয়ে রবিবারই মেলবোর্নে প্র্যাক্টিসে ফিরল ভারতীয় দল। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে এসে শাস্ত্রী স্বভাবসিদ্ধ সোজাসাপ্টা ভঙ্গিতে পাল্টা তির ছোড়েন সমালোচকদের দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০০
রবি শাস্ত্রী।

রবি শাস্ত্রী।

সমালোচকদের পাল্টা এক হাত নিলেন রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের হেড কোচ বলে দিলেন, লক্ষ লক্ষ মাইল দূরে বসে ফাঁকা তোপধ্বনি করা খুব সোজা। বাস্তব পরিস্থিতিটা কী, সেটা শুধু তাঁদের টিম ম্যানেজমেন্ট এবং দলই জানে।

তিন দিনের বিশ্রাম কাটিয়ে রবিবারই মেলবোর্নে প্র্যাক্টিসে ফিরল ভারতীয় দল। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে এসে শাস্ত্রী স্বভাবসিদ্ধ সোজাসাপ্টা ভঙ্গিতে পাল্টা তির ছোড়েন সমালোচকদের দিকে। ‘‘ওরা অনেক দূরে বসে আছে। আমরা এখন দক্ষিণ গোলার্ধে আছি,’’ বলেন শাস্ত্রী। নাম না নিলেও নিশানা যে তাঁর প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাওস্কর, তা বুঝতে বাকি থাকছে না।

শাস্ত্রী এ দিন ফাঁস করেন যে, পার্‌থ টেস্টের সময়ে জাডেজাও একশো শতাংশ ফিট ছিলেন না। তলপেটের চোটে ভুগতে থাকা অশ্বিনের জায়গায় জাডেজাকে কেন খেলানো হল না, তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন গাওস্কর-সহ একাধিক প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। শাস্ত্রী কারও নাম নেননি। কিন্তু স্পষ্ট বলে দেন, ‘‘দূরে বসে কথা বলা অনেক সহজ। ওরা অনেক দূরে বসে আছে। আমরা এখন দক্ষিণ গোলার্ধে রয়েছি।’’ তিনি মেনে নেন, পার্‌থে প্রথম একাদশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা জায়গা নিয়েই আলোচনার জায়গা ছিল। জাডেজাকে খেলানো হবে কি না? কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি জাডেজার সামান্য চোট থাকায়।

‘‘অস্ট্রেলিয়া আসার চার দিন আগে জাডেজাকে ইঞ্জেকশন নিতে হয়েছিল,’’ বলেন শাস্ত্রী, ‘‘ভারতে থাকার সময়েও ওর কাঁধে আড়ষ্ট ভাব ছিল। সেটা এখানে এসেও অস্বস্তি দিতে থাকে। সেই কারণে এখানে আসার পরেও ওকে ইঞ্জেকশন নিতে হয়। এই ইঞ্জেকশনের পরে সম্পূর্ণ ফিট অবস্থায় আসতে কিছুটা সময় লাগে।’’ যোগ করেন, ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরে কাঁধে আড়ষ্ট ভাব ছিল জাডেজার। জানা গিয়েছে, বাঁ হাতি স্পিনার নিজেও বল করার সময়ে পুরোপুরি স্বস্তি বোধ করছিলেন না। ‘‘টেস্টের মধ্যে কারও ব্রেকডাউন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইনি। দেখা গেল, আট-দশ ওভারের বেশি বল করতে পারল না, তখন কী হত?’’ পাল্টা প্রশ্ন করছেন শাস্ত্রী। রাতে এক বিবৃতিতে ভারতীয় বোর্ডও জানিয়ে দিয়েছে, জাডেজার চোট ছিল।

পার্‌থে যে-হেতু সবুজ পিচ ছিল, আশি শতাংশ ফিট জাডেজাকে খেলিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি ভারত। বিশেষ করে মেলবোর্ন এবং সিডনিতে যেখানে সিরিজের শেষ দু’টি টেস্ট রয়েছে এবং এই দুই কেন্দ্রে স্পিনারের ভূমিকা অনেক বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। পার্‌থ টেস্টের সময়ে জাডেজা যে সম্পূর্ণ ফিট ছিলেন না, তা প্রথম লেখা হয় রবিবারের আনন্দবাজারে। পার্‌থের সবুজ পিচ দেখে অনেকেই একমত হয়েছেন যে, সাম্প্রতিক কালের সব চেয়ে দ্রুতগতি এবং বাউন্সের পিচ ছিল। অস্ট্রেলিয়ার নেথান লায়ন ম্যাচের সেরা হলেও গোটা ম্যাচ জুড়ে পেসাররা আতঙ্ক তৈরি করেছেন ব্যাটসম্যানদের জন্য। ভারতীয় শিবির থেকে যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, অশ্বিন ফিট থাকলে অ্যাডি়লেডের মতোই তিন পেসার এবং এক স্পিনারে নামত ভারত। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় অশ্বিন চোট পাওয়ায়। জাডেজার কাঁধের অস্বস্তি থাকায় ঝুঁকি নিতে না চাওয়ায় কোহালিরা চতুর্থ পেসার হিসেবে খেলান উমেশ যাদবকে।

দলে আরও এক জন স্পিনার ছিল— কুলদীপ যাদব। তাঁকে খেলানো হবে কি না সেই আলোচনাও হয়েছিল দলের মধ্যে। কিন্তু অনেকেই একমত হন যে, টেস্ট ক্রিকেটে একমাত্র স্পিনারের ভূমিকা পালন করার মতো পরিণত হননি এখনও কুলদীপ। যেখানে দুই স্পিনার খেলানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে, সেখানে তাঁকে খেলানো যেতে পারে।

দেশে টিভি চ্যানেলের সামনে বসে পড়া বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এ সবের কিছুই জানতেন না। স্পিনার না-খেলানো নিয়ে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের প্রবল সমালোচনা করেন গাওস্কর। এমনও বলেন যে, সিরিজ যদি জিততে না পারে ভারত, তা হলে শাস্ত্রী এবং কোহালির পদ নিয়েও চিন্তাভাবনা করা উচিত। কাকতালীয়, কিন্তু গাওস্করের অধীনেই টেস্ট অভিষেক ঘটে শাস্ত্রীর। অস্ট্রেলিয়ায় গাওস্করের নেতৃত্বেই ঐতিহাসিক বেনসন অ্যান্ড হেজেস জয় এবং শাস্ত্রীর সেই চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়ন্স হওয়া। তাঁর ক্রিকেট জীবনে একটা সময়ে সানি-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু কোচ হওয়ার পর থেকে দু’জনের মধ্যে অম্ল-মধুর সম্পর্ক যাচ্ছে। শাস্ত্রী-কোহালি জুটির সব চেয়ে কড়া সমালোচকদের অন্যতম গাওস্কর। জনশ্রুতি হচ্ছে, পার্‌থে সেঞ্চুরি করার পরে কোহালির ‘ব্যাটই জবাব দেবে’ উৎসব ভঙ্গির নিশানাও নাকি ছিলেন ‘লিটল মাস্টার’। ‘‘টিমের জন্য সব চেয়ে যা ভাল, সেটাই আমাদের করতে হবে,’’ বলেন শাস্ত্রী, ‘‘জাডেজাকে খেলানো হবে কি হবে না, সেটা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। তার জবাব আমি দিলাম। আমার মনে হয় না দল নির্বাচনে আর কোনও বিষয় নিয়ে কথা উঠতে পারে। কেউ যদি কথা তোলে, সেটা তার ব্যাপার। আমার সমস্যা নয়।’’

অধিনায়ক কোহালির আচরণ নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে, সেটাকেও স্টেপ আউট করে বাইরে পাঠালেন শাস্ত্রী। এক অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন এ নিয়ে। শাস্ত্রীর জবাব, ‘‘কেন বিরাটের আচরণ নিয়ে আবার কী হল! একদম ঠিক আছে। আমাদের মতে, বিরাট খুবই জেন্টলম্যান ক্রিকেটার।’’

Cricket Test Border Gavaskar Trophy 2018 India Australia Ravi Shastri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy