Advertisement
E-Paper

‘দারুণ মঞ্চ পেয়েছ ঋষভ, মনে রেখো উন্নতির শেষ নেই’

স্বর্ণযুগের অস্ট্রেলিয়ার সব চেয়ে বড় ম্যাচউইনার মনে করা হয় তাঁকে। টেস্ট ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেট ৮১.৯৫। ব্র্যাডম্যান এবং বীরেন্দ্র সহবাগ ছাড়া কারও নেই। ওয়ান ডে-তে স্ট্রাইক রেট ৯৬.৯৪। সঙ্গে আরও অসাধারণ সব রেকর্ড। ৯৬টি টেস্ট খেলেছেন। তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৭৩টি-তে। যে ২৮৭টি ওয়ান ডে খেলেছেন, তার ২০২টি-তে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। উইকেটকিপারের সংজ্ঞাটাই তিনি পাল্টে দিয়েছেন। এখনকার ঋষভ পন্থদের পথপ্রদর্শক বলা যায় তাঁকে। তেমনই ‘জেন্টলম্যান ক্রিকেটার’। কমেন্ট্রি দিতে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক দিন ধরেই ইন্টারভিউয়ের সময় বারবার পিছোতে হচ্ছে। প্রত্যেক বারই নিজে এসে দুঃখপ্রকাশ করে গেলেন। চরম ব্যস্ততার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত শনিবার চা পানের বিরতিতে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিতে বসলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।চরম ব্যস্ততার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত শনিবার চা পানের বিরতিতে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিতে বসলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৮
মুগ্ধ: ঋষভে মোহিত কিংবদন্তি গিলক্রিস্টও। শনিবার। ছবি: গেটি ইমেজেস।

মুগ্ধ: ঋষভে মোহিত কিংবদন্তি গিলক্রিস্টও। শনিবার। ছবি: গেটি ইমেজেস।

প্রশ্ন: ঋষভ পন্থের ব্যাটিং দেখে কী বলবেন?

অ্যাডাম গিলক্রিস্ট: আমি খুব উপভোগ করেছি ঋষভের ব্যাটিং। যেন একটা এন্টারটেইনমেন্ট প্যাকেজ। কিন্তু একটা কথা বলব। ঋষভকে খুব পরিণত দেখিয়েছে কালকের ইনিংসটাতে। নিজেকে সময় দিল প্রথমে। তার পরে খেলাটাকে ছড়াতে শুরু করল। যত দূর জানি, বিরাট কোহালি ও রবি শাস্ত্রী এই ইনিংসটার আগে ওকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। ঋষভকে বলেছিল, ম্যাচে আমরা খুব ভাল জায়গায় আছি। অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ থেকে বের করে দিতে দরকার শুধু তোমার একটা ভাল ইনিংস। আমার মনে হয়, এই ইনিংসটা ঋষভকে টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠার ব্যাপারে দারুণ সাহায্য করবে।

প্র: এখনকার ঋষভ পন্থদের দেখলে ফিরে তাকিয়ে কি অন্য রকম ভাল লাগার অনুভূতি হয় যে ক্রিকেটে উইকেটকিপারের সংজ্ঞাটা পাল্টে গিয়েছিল আপনার হাত ধরে?

গিলক্রিস্ট: নিজেকে বেশ গর্বিত লাগবে যদি কেউ সেটা বলে। শুনতে ভাল লাগে যে আমার ব্যাটিং লোকে উপভোগ করেছে। যদি শুনি আমার খেলা দেখতে আসতে চাইত লোকে কারণ তাদের আমি আনন্দ দিতে পারতাম, তা হলে নিজেকে ধন্য মনে করব। আমি নিজেকে গেমচেঞ্জার হিসেবে দেখি না। আমার মনে হয়, ওয়ান ডে ক্রিকেটে হয়তো আমি একটা নতুন ফর্মুলা দেখিয়েছিলাম যে ব্যাটসম্যান হিসেবে ম্যাচউইনার হতে পারে উইকেটকিপার।

প্র: পাল্টে যাওয়া এই সংজ্ঞায় উইকেটকিপারের ভূমিকাও কি বদলে গিয়েছে? এখন কি আগে ব্যাটসম্যান, পরে কিপার?

গিলক্রিস্ট: আমি নিজে কিন্তু সব সময় মনে করে এসেছি যে কিপিংটাই আমার সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তার জন্য আমাকে টিমে নেওয়া হয়েছে। ব্যাটিংটা বোনাস। সেই কারণে ব্যাটিংয়ের চেয়ে অনেক বেশি আমি উইকেটকিপিং নিয়ে খাটতাম। আমার ট্রেনিংয়ের আশি শতাংশ থাকত উইকেটকিপিং অনুশীলন। কুড়ি শতাংশ ব্যাটিং। তবে আমার একটা সুবিধে ছিল যে ব্যাটিংটা সম্ভবত খুব স্বাভাবিক ভাবে আমার মধ্যে এসে গিয়েছিল। সহজাত ছিল। কিন্তু কিপিং নিয়ে আমাকে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হত। তাই আমি যখন আমার কেরিয়ারের দিকে ফিরে তাকাই, উইকেটকিপিং নিয়ে প্রাপ্তিগুলো বেশি করে মাথায় আসে। ব্যাটিংয়ের চেয়ে বেশি করে মনে আছে উইকেটকিপিং নিয়ে অভিজ্ঞতা।

আরও পড়ুন: কুলদীপ ‘টেক্কা’ ঠিক সময়ে কাজে লাগালেন বিরাটরা

অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।

প্র: একটা পরিসংখ্যান বলছি। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ৯৬ টেস্ট খেলেছেন, তার মধ্যে ৭৩টি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। মানে জয়ের শতকরা হার ৭৬%। ওয়ান ডে খেলেছেন ২৮৭ ম্যাচ, তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ২০২টি-তে। বলা হয়, টিমের জয়ে আপনার মতো কেউ অবদান রাখতে পারেননি।

গিলক্রিস্ট: আমি বলব অসাধারণ একটা যুগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্রিকেট খেলতে এসেছিলাম। অবিশ্বাস্য একটা গ্রুপের অংশ ছিলাম। সেই কারণেই এত সব ভাল ভাল পরিসংখ্যান লেখা রয়েছে আমার নামের পাশে। তবে এটা ঠিক যে টিমের জেতার পিছনে অবদান রাখতে পারাটাই একটা প্লেয়ারকে সব চেয়ে বেশি আনন্দ দেয়। আমারও তাই ভাল লাগে এই তথ্যগুলো দেখলে। শুধু রান করা বা উইকেট নেওয়ার কোনও মানে থাকে না, যদি না টিম জেতে। মানুষ খেলা দেখতে আসেই ফল দেখার জন্য। তাই তুমি যদি ফলকে প্রভাবিত করতে পারো, তবেই আমার চোখে ভাল ক্রিকেটার। নিজে খেলার সময়ও এই শর্তটা মাথায় রাখার চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয়, একা আমি নই, যে কোনও ক্রিকেটারই এ রকম মানসিকতা নিয়ে খেলে। টিমকে জেতানোর স্বপ্ন সব চেয়ে বেশি করে দেখে।

আরও পড়ুন: যত সময় পাব, টেস্টে পরিণত হব: কুলদীপ

প্র: সেই যুগটার কথা বলছিলেন। কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?

গিলক্রিস্ট: খুব ভাগ্যবান ছিলাম। দু’জন দুর্দান্ত অধিনায়ক আমরা পেয়েছিলাম। স্টিভ ওয় এবং রিকি পন্টিং। সেরা দুই টেস্ট অধিনায়ক। ওদের সব চেয়ে বড় গুণ ছিল, সব সময় আক্রমণাত্মক থাকতে অনুপ্রাণিত করত। জেতার জন্য ঝাঁপাতে উৎসাহিত করত। আমাদের ওই টিম হারার ঝুঁকি নিয়েও জেতার কথা ভাবতে ভয় পেত না। আমার মতে সেই যুগটার একটা বড় বৈশিষ্ট্য ছিল এটা, জেতার জন্য খেলা। তার জন্য দর্শকেরাও আমাদের খেলা দেখে আনন্দ পেতেন। অসামান্য সব প্রতিভা ছিল আমাদের দলটায়। সেটাও জেতার জন্য খেলতে সাহায্য করেছিল। সবাই একসঙ্গে এসেছিল বলে দারুণ একটা গ্রুপও তৈরি হয়েছিল।

প্র: অস্ট্রেলিয়ার স্বর্ণযুগের সেই দলটার আগ্রাসী, হার-না-মানা মানসিকতা কী ভাবে গড়ে উঠেছিল?

গিলক্রিস্ট: শুরুতে লক্ষ্য ছিল একসঙ্গে সবাই মিলে পারফর্ম করে টিম হিসেবে জমাট বাঁধা। আমরা সকলেই তখন তরুণ রক্ত। শেখার খুব আগ্রহ ছিল সকলের মধ্যে। চোখে স্বপ্ন ছিল। প্রত্যেকে টেস্ট ক্রিকেটে ভাল করার লক্ষ্যটা নিতে চেয়েছিল। এর পরে কঠিন সব পরিস্থিতিতে জেতাটা আমাদের দলের মধ্যে বিশ্বাস আমদানি করতে শুরু করে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হোবার্টে বড় রান তাড়া করে জেতাটা টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আমার মতে ওখান থেকেই দলগত সংহতি তৈরি হয়ে যায়। হোবার্ট থেকেই শুরু হয়েছিল আমাদের সেই স্মরণীয় যাত্রা। ক্রমশ টিম হিসেবে আত্মবিশ্বাস বাড়তে থাকল আমাদের। কী টিম ছিল আমাদের! কী অসাধারণ সব ফাস্ট বোলার! ম্যাকগ্রা, গিলেসপি, ব্রেট লি। সেই সঙ্গে শেন ওয়ার্ন ও স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের মতো স্পিনার। স্বপ্নের বোলিং গ্রুপ! তার সঙ্গে সেরা টপ অর্ডার ব্যাটিং। যে কোনও যুগের সেরা ব্যাটিংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারত।

সফল: হেডকে আউট করে কুলদীপ। অভিনন্দন কোহালির। ছবি: এএফপি।

প্র: ১৫টি টেস্ট টানা জিতে ভারতে আসা। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ঝড়ে মুম্বইয়ে জিতে সেটাকে টানা ১৬-তে পরিণত করা। তার পরেই ইডেনে সেই ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ। কতটা মনে আছে?

গিলক্রিস্ট: ক্রিকেট নয়, ইডেনে যেটা হয়েছিল সেটা হচ্ছে ম্যাজিক। কতটা মনে আছে জিজ্ঞেস করছেন? আমার মনে হয় আমি প্রত্যেকটা বল এখনও মনে রেখেছি ওই টেস্ট ম্যাচের। এখনও ইডেন টেস্টের হাইলাইটস দেখালে আমি সব কাজ ফেলে দিয়ে টিভি-র সামনে বসে থাকি। কোথাও নড়ি না। সেই সব টেনশনের মুহূর্তগুলো, ইডেনের ভর্তি মাঠের মায়াবী পরিবেশ। জেতা যায় না এমন একটা টেস্ট ম্যাচ সে দিন আমাদের মুখের সামনে থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিল ভারত। এখনও ফিরে তাকালে অবিশ্বাস্য মনে হয়! ক্রিকেটের সেরা মিরাকল। কে ভেবেছিল, ফলো-অন করার পরেও ওভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ বের করে নিয়ে যাবে ওরা! ক্রিকেট ক্লাসিক। এবং ইডেন যে ভাবে ওদের সমর্থন করেছিল, সেটাও ভোলা যাবে না। এমন সমর্থন যে কোনও টিমের কাছে স্বপ্নের মতো। আমরা টেস্টটা হারার পরে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলাম।

প্র: ওই সিরিজের মতো আর কোনও হার কখনও স্বর্ণযুগের অস্ট্রেলিয়াকে ততটা আঘাত করেছিল?

গিলক্রিস্ট: ২০০৫-এর অ্যাশেজ। ওই সময়ই শুধু এই দু’টো সিরিজ আমরা হেরেছিলাম। দু’টোই খুব উচ্চমানের টেস্ট ক্রিকেট ছিল। এবং সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে দু’টো সিরিজের দিকেই ফিরে তাকিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নির্দ্বিধায় মেনে নিতে পারি যে, আমরা সেরাটাই দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও পারিনি। আরও ভাল দল আমাদের হারিয়ে দিয়ে যায়।

প্র: লক্ষ্মণ আর দ্রাবিড় যখন সারা দিন ধরে ব্যাট করছিলেন, স্টাম্পের পিছনে দাঁড়িয়ে কী মনে হচ্ছিল আপনার?

গিলক্রিস্ট: সব সময় আমরা ভাবছিলাম, যে কোনও সময়ই পার্টনারশিপটা ভেঙে দিতে পারব। স্টাম্পের পিছন থেকে বোলারদের বারবার একটাই কথা বলেছিলাম, মাত্র একটা বল লাগবে আমাদের ম্যাচে ফিরে আসতে। দুর্ভাগ্যবশত সেই একটা বল সারা দিনেও আসেনি! ক্রিকেট মহান অনিশ্চয়তার খেলা সবাই জানে। তবুও কী অবিশ্বাস্য একটা দিন ছিল সেটা! কিন্তু ওই সিরিজ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছিলাম। ইডেনের পরে চেন্নাইতে হেরে আমরা সিরিজ হেরে যাই। কিন্তু দেশে ফিরেছিলাম আরও ভাল দল হয়ে। ফিরেছিলাম অনেক অমূল্য অভিজ্ঞতা নিয়ে।

প্র: ইডেন টেস্টে টস নিয়ে সেই বিতর্ক এখনও কেউ ভোলেননি। স্টিভ ওয়-কে টসের সময় দাঁড় করিয়ে রাখলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কী মনে হয় কেমন ট্যাকটিক্স ছিল সেটা?

গিলক্রিস্ট: আমার মনে হয় এটা ভারতের স্ট্র্যাটেজিই ছিল। সেই সিরিজে সৌরভকে দেখে আমার মনে হয়েছিল ও আমাদের ক্যাপ্টেনকে চ্যালেঞ্জ করার মুডে আছে। আমি বলব যদি সৌরভ এটা পরিকল্পনা অনুযায়ী করে থাকে, তা হলে দুর্দান্ত সিদ্ধান্ত। কারণ, ক্রিকেট বিশ্বে তখন স্টিভ ওয় খুব সম্মানিত ব্যক্তি। অদম্য এক টেস্ট ক্রিকেটার। তাকে চ্যালেঞ্জ করার এই প্রক্রিয়াটা দারুণ নিয়েছিল সৌরভ। ঠিক সেটার জন্যই টেস্টের ফল ভারতের দিকে গিয়েছিল কি না সেটা কেউ বলতে পারবে না। তবে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে টার্গেট করার স্ট্র্যাটেজি ওদের দলকে অনেক টগবগে করে দিয়েছিল, সন্দেহ নেই।

প্র: মহাতারকা হয়ে উল্টো দিকে বসে বিরাট কোহালিকে ইন্টারভিউ করার অভিজ্ঞতা কেমন?

গিলক্রিস্ট: আমি খুব উপভোগ করছি ওকে ইন্টারভিউ করাটা। বিরাট কিন্তু অনেক গভীরে গিয়ে ভাবে। বেশি করে ক্রিকেট মাঠের বাইরের জীবন নিয়ে অনেক গভীরে ভাবে, যেটার সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা ছিল না। ওর ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে অনেক কথা হয়। কিন্তু আমি মনে করি এই সিরিজ ক্যাপ্টেন হিসেবে অনেক পরিণত করে দিয়েছে বিরাটকে। মাঝে মধ্যে ওর ক্যাপ্টেন্সি বা ট্যাকটিক্স নিয়ে প্রশ্ন উঠতে দেখেছি। কিন্তু এই সিরিজে যে ভাবে ও পরিকল্পনা করেছে আর মাঠে সেটাকে বাস্তবায়িত করেও দেখিয়েছে, তাতে আমার চোখে ক্যাপ্টেন হিসেবে অনেক উঁচুতে আসন করে নিয়েছে বিরাট।

প্র: বিশেষ কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন কি বিরাটের ক্যাপ্টেন্সিতে?

গিলক্রিস্ট: আমার মনে হয় এই সিরিজে অনেক বেশি ধীর-স্থির, ঠান্ডা মস্তিষ্ক দেখিয়েছে বিরাট। সেই আবেগটা এখন ও মাঠে দেখাচ্ছে। জেতার জন্য এখনও একই রকম নেশাগ্রস্ত। কিন্তু সবটাই করছে নিজের উপর দারুণ নিয়ন্ত্রণ রেখে। কখনও সেই নিয়ন্ত্রণটা হারাচ্ছে না। কারও সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে একেবারেই সরে আসছে না, কিন্তু সেটাও করছে ঠান্ডা মাথায়। পার্‌থে টিম পেনের সঙ্গে ওর অনেক কিছু ঘটল। আমার যদিও কখনওই মনে হয়নি যে দু’জনের কেউ সৌজন্য হারিয়েছে বলে। দু’জনেই তাদের দেশের হয়ে জানপ্রাণ দিয়ে লড়ছে। কেউ কাউকে ছাড়বে কেন? কিন্তু পরিস্থিতিকে হাতের বাইরে যেতে দেয়নি। আমি এই সিরিজে বিরাটের নেতৃত্ব নিয়ে খুবই প্রভাবিত।

প্র: চেতেশ্বর পূজারা নিয়ে কী বলবেন?

গিলক্রিস্ট: কোনও বিশেষণই যথেষ্ট নয়। ব্যাট, ব্যাট, ব্যাট। পূজারা যেন ক্লান্তিহীন। ব্যাটিং আবর্তিত হয়েছে পূজারাকে কেন্দ্র করে। পার‌্‌থের পর চাপে পড়ে যেত ভারত। কিন্তু সেটা ওরা হতে দেয়নি। দুর্দান্ত ভাবে ফিরে এসেছে। তার জন্য অনেকটাই কৃতিত্ব পূজারার। সিডনিতেও জয় তাড়া করছে ভারত। সেই সঙ্গে ইতিহাসও।

প্র: ঋষভ পন্থের জন্য কোনও উপদেশ? রিকি পন্টিং গত কাল বলেছেন ভবিষ্যতের অ্যাডাম গিলক্রিস্ট হতে পারেন ঋষভ। আপনি কী বলবেন?

গিলক্রিস্ট: দুর্দান্ত একটা মঞ্চ তৈরি করে ফেলেছে ঋষভ। অসাধারণ এক প্রতিভা। দুর্দান্ত অ্যাথলেটিক, সহজাত স্ট্রোকমেকার, উত্তেজক এক ব্যাটসম্যান। যত ও খেলবে তত শিখবে, ততই উন্নতি করবে। আর কিপিং নিয়ে বলব, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অক্লান্ত ভাবে অনুশীলন করে যাও। নানা রকম কিপিং ড্রিলস করে যাও। দারুণ শুরু করেছ, কিন্তু মনে রেখো উন্নতির কোনও শেষ নেই।

Cricket Rishabh Pant Border-Gavaskar Trophy 2018 Adam Gilchrist India Vs Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy