১৯ অক্টোবর, ২০২৩। পুণের মাঠে শেষ বার এক দিনের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। এক দিনের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত। গত বছর এক বারও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়নি দু’দল। ৪৮৯ দিন পরে আবার খেলতে নামছে তারা। বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে ভারত। সেই ম্যাচের আগে ধারে-ভারে এগিয়ে রয়েছেন রোহিত শর্মারাই।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের শেষ পাঁচটি এক দিনের ম্যাচের পরিসংখ্যানে এগিয়ে ও পার বাংলার দল। তিনটি জিতেছে তারা। ভারত জিতেছে দু’টি। কিন্তু যে তিনটি ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে সেই তিনটি ম্যাচে ভারতের প্রথম সারির বেশ কিছু ক্রিকেটার ছিলেন না। দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েছিল ভারত। ফলে সেই পরিসংখ্যান দেখে দু’দলের শক্তি বিচার করা যাবে না।
দু’দলের শেষ ১০টি এক দিনের ম্যাচের পরিসংখ্যানে অবশ্য এগিয়ে ভারত। সাতটি জিতেছে তারা। বাংলাদেশ জিতেছে তিনটি। সব মিলিয়ে এক দিনের ক্রিকেটে ৪১ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ। সেখানেও ভারত অনেক এগিয়ে। ৩২ বার জিতেছে তারা। বাংলাদেশ জিতেছে আট বার। একটি ম্যাচ হয়নি।
এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’দলের শক্তি বিচার করলে দেখা যাবে সেখানেও এগিয়ে রয়েছে ভারত। বাংলাদেশের দলে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লা থাকলেও নেই শাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। এখনও সাদা বলের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। গোটা বিশ্বে বিভিন্ন দেশে লিগ খেলে বেড়ালেও বাংলাদেশের জাতীয় দলে জায়গা পাননি তিনি। তার একটা বড় কারণ, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। শাকিব না থাকায় সমস্যা হবে তাদের।
মুশফিকুর, মাহমুদুল্লা ছাড়া সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বাংলাদেশের দলে রয়েছেন। কিন্তু মুস্তাফিজুর ছাড়া বাকিদের ফর্ম খুব একটা ভাল নয়। মুশফিকুর ও মাহমুদুল্লা আগের মতো রান করতে পারেন না। সৌম্যও খুব বেশি ক্রিকেট খেলেননি। রান না করায় জায়গা পাননি লিটন দাস। ফলে ওপেনিং সমস্যায় পড়তে পারে বাংলাদেশ।
এই পরিস্থিতিতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজের উপর চাপ বেশি পড়বে। শান্ত তরুণ অধিনায়ক। প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগেই হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরবেন। আগে থেকে এই ঘোষণার ফলে নিজেই নিজের উপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ভারতীয় দলে এ বার অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পাশাপাশি অনেক তরুণও রয়েছেন। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি চাইবেন কেরিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে। তাঁদের ফর্ম নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সেই সব প্রশ্নের জবাব দিতে চাইবেন তাঁরা। শুভমন গিল ও শ্রেয়স আয়ার ভাল ফর্মে রয়েছেন। লোকেশ রাহুল রান না পেলেও তাঁর অভিজ্ঞতা কম নয়। বোলিংয়েও মহম্মদ শামি, হার্দিক পাণ্ড্য, রবীন্দ্র জাডেজা, কুলদীপ যাদবের মতো অভিজ্ঞরা রয়েছেন। পাশাপাশি বরুণ চক্রবর্তী, হর্ষিত রানার মতো তরুণ ক্রিকেটারেরাও রয়েছেন দলে। বরুণ ও হর্ষিত দু’জনেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ততটা পরিচিত নন। তার ফসল তুলতে পারে ভারত।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ভারতকে সুবিধা দেবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজ়। তিনটি ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছে ভারত। ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে সহজে হারিয়েছে। সেখানে দলকে দেখে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। তিনি পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। তা মাঠে নেমে কাজে লাগাতে চাইবেন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ভারতকে আরও একটি সুবিধা দেবে দুবাইয়ের মাঠ। ভারত গ্রুপ লিগের তিনটি ম্যাচ সেখানেই খেলবে। আবার সেমিফাইনাল বা ফাইনালে উঠলেও সেখানেই খেলবেন রোহিতেরা। কিন্তু বাংলাদেশকে দুবাইয়ের পাশাপাশি পাকিস্তানেও খেলতে হবে। ফলে যাতায়াতে বাড়তি পরিশ্রম হবে তাদের। তার ধকল শরীরের উপর পড়তে পারে। এই সব কারণেই বাংলাদেশের থেকে এগিয়ে নামবে ভারত।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে থেকে শুরু খেলা। সরাসরি দেখা যাবে স্টার স্পোর্টস চ্যানেল ও জিয়োহটস্টার অ্যাপে।