ক্রিকেট যদি ভদ্রলোকের খেলা হয়, তবে রাহুল দ্রাবিড় সেই ভদ্রলোক। ঠান্ডা মাথা, ধীর-স্থির মানসিকতা, এক সংস্থার বিজ্ঞাপন ছাড়া কোথাও তাঁকে রাগতে দেখা গিয়েছে বলে শোনা যায়নি। রবি শাস্ত্রীর মতো ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’-এর পর ভারতীয় ক্রিকেটের রাশ এখন এমন একজনের হাতে যিনি সব ধাক্কা আবেগহীন মুখে গিলে নেন।
এই রাহুল দ্রাবিড়কে দেখেই তো সবাই অভ্যস্ত। ব্রেট লি, শোয়েব আখতার, জিমি অ্যান্ডারসন, শন পোলকরা প্রায় ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করেছেন আর দ্রাবিড় সেই বল অবলীলায় রক্ষণাত্মক ভাবে খেলে মাটিতে বসিয়ে দিয়েছেন। তাঁর টেকনিক সারা বিশ্বের কাছে ঈর্ষনীয়। সেই জন্যই বোধ হয় প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সব টেস্ট খেলিয়ে দেশে গিয়ে শতরান করতে পেরেছিলেন। ১৬৪টি টেস্ট খেলে ৩৬টি শতরান-সহ তাঁর ঝুলিতে ১৩ হাজার ২৮৮ রান। গড় ৫২.৩১। তবে এই সব পরিসংখ্যান দিয়ে দ্রাবিড়কে চিনতে গেলে মুশকিল।
ইয়ান চ্যাপেল এক বার বলেছিলেন, ‘দল বিপদে পড়েছে? কার দিকে তাকাবে? রাহুল দ্রাবিড়।’ হ্যাঁ, তিনি সেই ভরসার দেওয়াল, যাঁর উপর ঠেস দিয়ে লড়াই করা যায়। ১৯৯৬ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে লর্ডসের মাঠে অভিষেক ঘটে দ্রাবিড়ের। সৌরভের শতরানে ঢাকা পড়ে যায় দ্রাবিড়ের ৯৫। সচিন-সৌরভ যুগে দ্রাবিড় বার বার যেন ঢাকা পড়েই গিয়েছিলেন। ইডেনে (২০০০ সাল, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে) ম্যাচ বাঁচানো ১৮০ হোক বা অ্যাডিলেডে (২০০৩ সাল, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে) ২৩৩ কিংবা রাওয়ালপিণ্ডিতে (২০০৪ সাল, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে) ২৭০ রানের ইনিংস, এমন সব মণিমুক্ত থাকলেও টেস্টে তিন নম্বরে নামা দ্রাবিড় আউট হলেই নাকি দর্শকের চিৎকার বেশি শোনা যেত। কারণ চার নম্বরে সচিন ব্যাট করতেন যে।