Advertisement
E-Paper

রেকর্ডের ম‍্যাচে ৪১৩ রান তাড়া করে বীরের মতো লড়লেন স্মৃতি, হরমনপ্রীতেরা, অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার ৪৩ রানে

মরিয়া চেষ্টা করেছিল ভারতের মহিলা দল। তবে শেষ রক্ষা হল না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নজিরের ম্যাচে হেরে গেলেন হরমনপ্রীত কউরেরা। ৪১৩ রান তাড়া করতে নেমে ভারতীয় দল অলআউট হয়ে গেল ৩৬৯ রানে। হেরে গেল ৪৩ রানে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:১৭
cricket

শতরানের পর স্মৃতির উচ্ছ্বাস। তবে হেরে গেল ভারত। ছবি: পিটিআই।

মরিয়া চেষ্টা করেছিল ভারতের মহিলা দল। তবে শেষ রক্ষা হল না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নজিরের ম্যাচে হেরে গেলেন হরমনপ্রীত কউরেরা। ৪১৩ রান তাড়া করতে নেমে ভারতীয় দল অলআউট হয়ে গেল ৩৬৯ রানে। হেরে গেল ৪৩ রানে। মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ রান হল এ দিনই। বৃথা গেল স্মৃতি মন্ধানার লড়াই। যদিও ভারতীয় ক্রিকেটে নজির গড়েছেন তিনি।

এক দিনের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে দেশের মাটিতে হারল মহিলা দল। তবে এই হারে খুব একটা দুঃখ পাওয়ার কথা নয় হরমনপ্রীতদের। ভারতীয় দল দেখিয়ে দিয়েছে, শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে শেষ পর্যন্ত তারা লড়াই করতে পারে। হাতে কিছু উইকেট থাকলে ভারত ম্যাচটা জিততেও পারত। সে ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড তৈরি হত। কারণ মহিলাদের ক্রিকেটে এত বেশি রান তাড়া করে জয়ের নজির নেই।

আগে ব্যাট করে ৪৭.৫ ওভারে ৪১২ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ভারত অলআউট হয় ৩৬৯ রানে। দুই ইনিংস মিলিয়ে উঠেছে ৭৭৭ রান, যা বিশ্বরেকর্ড। এর আগে নজির ছিল ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে। ২০১৭-র সেই ম্যাচে উঠেছিল ৬৭৮ রান।

ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দু’টি ম্যাচ হয়েছিল পঞ্জাবের মুল্লানপুরে। দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছিল। ফলে শনিবার দিল্লির ম্যাচটি ছিল সিরিজ় নির্ণায়ক। দিল্লির গরমে দুপুরে রোদের মধ্যেও অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুতেই তারা নিজেদের মানসিকতা বুঝিয়ে দিয়েছিল। আগ্রাসী খেলতে থাকে প্রথম বল থেকেই।

শুরুটা করেন অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি (৩০)। দ্বিতীয় উইকেটে জর্জিয়া ভল এবং এলিস পেরি ভারতীয় বোলারদের উপর দাপট দেখাতে থাকেন। ক্রান্তি গৌড়, রেণুকা সিংহ, স্নেহ রানা— কেউ টিকতে পারছিলেন না। ১০৭ রানের জুটি গড়ার পর ফিরে যান ভল (৬৮ বলে ৮১)।

এর পরেই শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার আসল তাণ্ডব, যার কাণ্ডারি বেথ মুনি। অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ঠিকই করেছিলেন প্রতিটি বল মাঠের বাইরে পাঠাবেন। চালিয়ে খেলছিলেন তিনি। যোগ্য সঙ্গত দেন পেরি (৬৮)। এর পর অ্যাশলে গার্ডনার (৩৯), তাহলিয়া ম্যাকগ্রারা (১৪) ফিরে গেলেও মুনিকে থামানো যাচ্ছিল না। কোটলা স্টেডিয়ামে পাটা পিচ এবং ভারতীয় বোলারদের নখদন্তহীন বোলিং আরও সুবিধা করে দিচ্ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত ৭৫ বলে ১৩৮ করে ফিরে যান তিনি। অস্ট্রেলিয়া ৪১২ রানের মধ্যে ২৭০-ই তুলেছে চার-ছয় মেরে। তারা ৬০টি চার এবং ৫টি ছয় মেরেছে।

ভারতও পিছিয়ে ছিল না। মাথার উপর এত রানের বোঝা নিয়ে খেলতে নামলে ধীরে খেলার প্রশ্নই থাকে না। ভারত সেই চেষ্টাও করেনি। পাটা পিচ সুবিধা করে দিচ্ছিল তাদেরও। শুরুতে প্রতীকা রাওয়াল এবং হরলীন দেওলকে হারালেও রানের গতি কমেনি। প্রতি ওভারে গড়ে ১০ রান উঠতে থাকে।

ভারতের হয়ে পাল্টা জবাব দিচ্ছিলেন স্মৃতি মন্ধানা। পাশে পান অধিনায়ক হরমনপ্রীতকেও। দু’জনে মিলে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের তিষ্ঠোতে দিচ্ছিলেন না। স্মৃতি দ্রুততম শতরানের নজিরও গড়েছেন। পুরুষ এবং মহিলা মিলিয়ে ভারতের হয়ে এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুততম শতরান করেছেন তিনি।

আগ্রাসী হতে গিয়েই উইকেট দেন স্মৃতি। গ্রেস হ্যারিসের বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন গার্ডনার। ৬৩ বলে ১২৫ করেন স্মৃতি। মেরেছেন ১৭টি চার এবং ৫টি ছয়। স্মৃতি ফেরার পর পরই হরমনপ্রীত আউট হয়ে যান ৩৫ বলে ৫২ করে। এই দু’জন ফিরতেই ভারতের জয়ের আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যায়।

তবু ভারত যে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল, তার পিছনে রয়েছে দীপ্তি শর্মার ইনিংস। শুরুতে ধীরে খেললেও শেষের দিকে চালিয়ে খেলতে থাকেন। তবে জয়ের লক্ষ্য এতটাই বেশি ছিল যে দলকে জেতাতে পারেননি। পাশেও পাননি কোনও সতীর্থকে। উল্টো দিকে একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত ৫৮ বলে ৭২ করে আউট হন দীপ্তি।

ম্যাচের পর হরমনপ্রীত বলেন, “হেরে গিয়ে মোটেই খুশি নেই। তবে গোটা সিরিজ়‌ে ভাল ক্রিকেট খেলেছি। অনেক কিছু শিখেছি। যে ভাবে স্নেহর মতো বোলার ব্যাট করল, তাতেই বোঝা যায় আমাদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা কতটা। অবশ্য ফিল্ডিং নিয়ে অনেক খাটতে হবে। এখনও সুযোগ কাজে লাগাতে পারছি না।”

Smriti Mandhana BCCI Women India vs Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy