মহড়া: মিনার্ভা ম্যাচের প্রস্তুতিতে ক্রোমা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
অগ্নিপরীক্ষা!
মঙ্গলবার বারাসত স্টেডিয়ামে মিনার্ভা এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচটার উপরে শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়। নির্ভর করছে খালিদ জামিলের ভবিষ্যৎও।
ভারতীয় ফুটবলে মিনার্ভা সদ্যোজাত শিশুর মতো। গত মরসুমে প্রথম বার ওরা আই লিগ খেলে। অভিষেকের বছরে খুব একটা নজর কাড়তে পারেনি। কিন্তু এই মরসুমে মিনার্ভা একেবারে অশ্বমেধের ঘোড়া। লুধিয়ানায় ঘরের মাঠে দুরন্ত মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ড্র করে আই লিগে অভিযান শুরু করেছে। যদিও অনেকে এখনও মনে করেন ওটা অঘটন। আমি তাঁদের সঙ্গে একমত নই। প্রথম ম্যাচ থেকেই মিনার্ভার ফুটবলাররা বুঝিয়ে দিয়েছে, এ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই নেমেছে।
পঞ্জাবের ফুটবল সম্পর্কে আমি একেবারে অজ্ঞ নই। তিন বছর আমি জেসিটি-তে খেলেছি। জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। দেখেছিলাম, অ্যাকাডেমি থেকে কী ভাবে ওরা প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারদের বেছে নিচ্ছে সিনিয়র দলের জন্য। তার পর প্রয়োজন অনুযায়ী বাইরে থেকে বাছাই করা ফুটবলারদের নিয়েছে। যেমন আমার সঙ্গে ভাইচুং ভুটিয়া, জো পল আনচেরি, স্টিভন আবরোহি-র মতো ফুটবলার ছিল। মিনার্ভাও জেসিটি-র পথ অনুসরণ করেই সাফল্য পাচ্ছে। অকারণে অর্থ ব্যয় করে তারকাদের পিছনে ওরা ছোটেনি। এমন ফুটবলার নিয়েছে, যারা টানা নব্বই মিনিট অক্লান্ত ভাবে পরিশ্রম করতে পারে। সেরা উদাহরণ চেঞ্চো গেইলেৎসেন। ভুটান জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা তো এ বারের আই লিগের আবিষ্কার। আজ, বারাসতে ওকে আটকানোই হবে এদুয়ার্দো ফেরিরা-দের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
কঠিন পরীক্ষা খালিদেরও। লাল-হলুদ কোচ যে স্ট্র্যাটেজিতে দলকে খেলাতে পছন্দ করে, সেটা কিন্তু এই ম্যাচে সফল হওয়া কঠিন। প্রথম ম্যাচ থেকেই মিনার্ভাকে দেখেছি রক্ষণ সামলে গোলের জন্য ঝাঁপাতে। আই লিগে ওরা সব চেয়ে কম গোল খেয়েছে (১০ ম্যাচে ৬)। পরিসংখ্যান দেখে কেউ যেন আবার ভাববেন না, মিনার্ভা রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে। ওরা বিপক্ষের স্ট্রাইকারদের নিজেদের পেনাল্টি বক্সের বাইরেই আটকে দেয়। তার পর প্রচণ্ড গতিতে পাল্টা আক্রমণ করে।
খালিদ যেন এই ম্যাচে মিনার্ভার বিরুদ্ধে গতির লড়াইয়ে নামার ভুল না করে। ওর উচিত নিজের দলের ফুটবলারদের বল ধরে খেলার নির্দেশ দেওয়া। যাতে মিনার্ভার ছন্দ নষ্ট হয়ে যায়। সদ্য যোগ দেওয়া আনসুমানা ক্রোমা থেকে ডুডু ওমাগবেমি— বল ধরে খেলতে পারে। তাই খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর এই ম্যাচে অবশ্যই লালডান মাওয়াইয়াকে খেলানো উচিত। ও একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ডার্বিতে কেন যে ওকে প্রথম দলে রাখেনি খালিদ, সেটা আমার কাছে রহস্য।
তবে ডার্বি হারের পরে লাল-হলুদ অন্দরমহলের বাড়তে থাকা উত্তাপ যেন ত্রিশূরে বসেই উপলব্ধি করছি। কোচ, ফুটবলার থেকে কর্মকর্তা— প্রত্যেকেই প্রবল চাপে। এই ম্যাচটা কলকাতায় না হলে হয়তো ডুডু-রা একটু স্বস্তিতে থাকত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy