তৈরি হচ্ছেন আদিল রশিদ। বুধবার বিশাখাপত্তনমে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
বিশাখাপত্তনমের পিচটা যে রকম তাতে আবহাওয়া ঠিক থাকলে দ্বিতীয় টেস্টে হার-জিতের একটা ফয়সালা হবেই। সিরিজে এই টেস্টটা কিন্তু অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
এমনিতে ভারতে টস সব সময়ে বড় ফ্যাক্টর। তবে আমার মনে হচ্ছে আজ বিশাখাপত্তনমে টসের তাৎপর্য আরও বেশি হতে চলেছে। পাশাপাশি একটা ব্যাপারে ভারতকে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে উইকেট আন্ডারপ্রিপেয়ার্ড হলে তার ফায়দা কিন্তু ইংল্যান্ডের স্পিনাররাও তুলবে।
কোনও সন্দেহ নেই যে প্রতিভা আর স্কিলে ইংল্যান্ডের স্পিনাররা আমাদের অশ্বিন, জাডেজা বা অমিত মিশ্রর চেয়ে পিছিয়ে। কিন্তু পিচের সাহায্য পেলে ওরাও উইকেট নেবে। যত না ভয়ঙ্কর, তার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক দেখাবে ওদের। সে ক্ষেত্রে প্রথম টেস্টের তুলনায় ওদের দেখে অনেক বেশি কার্যকর আর উইকেট টেকিং বোলার বলে মনে হবে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এই ব্যাপারটা মাথায় রাখা উচিত।
রাজকোটের পিচ নিয়ে অনেক সমালোচনা কানে এসেছিল। কিন্তু আমার মতে রাজকোটের উইকেটে তৃতীয় দিন লাঞ্চের পর থেকে যথেষ্ট টার্ন ছিল। স্পিনারদের সাহায্য না পাওয়ার কিন্তু কোনও কারণ ছিল না।
ইংল্যান্ড অবশ্য ভারতীয় পিচে সেই ২০১২ থেকেই কিন্তু বেশ ভাল খেলে আসছে। ভারতের মাটিতে ওরা শেষ যে পাঁচটা টেস্ট খেলেছে, প্রতিটাতেই কোনও না কোনও ভাবে দাপট দেখিয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় স্পিনারদের দারুণ ভাবে সামলেছে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা।
আলাদা করে বলতেই হচ্ছে অ্যালিস্টেয়ার কুকের কথা। গত ক’টা মরসুম দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন। উপমহাদেশের এই কন্ডিশনে পাঁচটা টেস্ট সেঞ্চুরি করে ফেলা অসাধারণ কীর্তি! তবে ভারতীয় পিচে কুকের এই অবিশ্বাস্য রেকর্ডের পাশে ইংল্যান্ডের সাফল্যের পিছনে আরও বড় একটা কারণ রয়েছে। আর সেটা হল, প্রয়োজনের সময় টিমের কেউ না কেউ ঠিক খেলে দিচ্ছে। মানে গোটা টিমটাই ভারতীয় পিচ আর আবহাওয়ার সঙ্গে খুব ভাল মানিয়ে নিয়েছে। সেটা গত সিরিজে ট্রট, বেল, পিটারসেনদের খেলায় দেখেছি। এই সিরিজে দেখছি মইন আলি, বেন স্টোকস, জো রুটদের মধ্যে।
এই ইংল্যান্ড টিমের আসল শক্তি ওদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা। এমনকী ওদের দশ নম্বর ব্যাট আনসারিকেও দেখে মনে হল ছেলেটা খেলে দিতে পারে। তবে কুকদের আজ যে ব্যাপারে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেটা হল আনসারিকেও তৃতীয় স্পিনার খেলাবে নাকি ওর বদলে গ্যারেথ ব্যাটিকে টিমে রাখবে। কারণ ব্যাটির ধারাবাহিকতা তুলনায় বেশি। পিচে আর্দ্রতা আছে না নেই, সেটা দেখার পরই সম্ভবত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইংল্যান্ড। যারা নিশ্চয়ই অ্যান্ডারসনকে খেলানোর জন্যও মুখিয়ে আছে। ভারতীয় পিচে অ্যান্ডারসনের রেকর্ড দারুণ। আমার মতে ওকে খেলানো হলে ওকস নয়, দলে নিয়ে আসা হোক ব্রডের জায়গায়।
ভারত আবার এই টেস্টে লোকেশ রাহুলকে খেলাতে যেন মরিয়া। রাহুল খুব ভাল ব্যাট। ওকে বেশি দিন প্রথম এগারোর বাইরে থাকতে হবে বলে আমি মনে করি না। তবে রাহুলকে খেলানো হলে ওকে পাঁচে নামানো হবে না ছ’নম্বরে, সেই সিদ্ধান্তটা পিচের চেহারা দেখার পরেই নেওয়া উচিত।
দলে গৌতম গম্ভীরের জায়গা নিয়ে আবার প্রচুর ফিসফিসানি চলছে। আমার মনে হয়, টিম ম্যানেজমেন্টের ওর সঙ্গে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যে, গৌতমই দলের ভবিষ্যৎ তৃতীয় ওপেনার কি না। ওরা যদি মনে করে গৌতমই সেই লোক, তা হলে ওর উপর থেকে চাপটা এখনই কমানো হোক। যাতে ও খোলা মনে ব্যাটিংটা করতে পারে। একের পর এক টেস্ট ম্যাচ ধরে ধরে খেলে নিজেকে প্রমাণ করে চলাটা মোটেই সহজ কাজ নয়। তা সে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানই হোক না কেন। গৌতমকে কিন্তু এই সম্মানটা দিতে হবে। এটা ওর প্রাপ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy