হিথরো থেকে উইম্বলডন যাওয়ার টিউবে চাপলে আমার এখনও জুনিয়র প্লেয়ার থাকার সময়গুলো মনে ভেসে ওঠে। ট্রেনগুলো আজও স্মৃতিতে দাগ কেটে যায়।
যদিও এখন ট্রেনে যাওয়ার দরকার পড়ে না আমার। কিন্তু তাও পছন্দ করি এই জার্নি। এটা আমাকে মাটির কাছাকাছি থাকতে আর নিজের মতো থাকতে দেয়। কারণ সেলিব্রিটি জীবনটা মাঝেমাঝে আমার মনে হয়, কাঁচের পাত্রে রাখা মাছের মতো। কখনওসখনও ভয় হয় যে, বাস্তবের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নষ্ট হচ্ছে। তাই যখন সুযোগ পাই, তখনই আমি ট্রেনে চাপি। এমনকী মুম্বইতেও। এই জার্নিগুলো আমাকে শিকড়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সাহায্য করে।
উইম্বলডনে গভীর মনোযোগ রেখে টিউবে সওয়ার হচ্ছি। আর মনে হচ্ছে, এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক আছে। বিলেতে এ রকমই একটা ট্রেন জার্নির পরেই ১৯৯০-এ আমি জুনিয়র উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। পেশাগত এবং ব্যক্তিগত ভাবেও এই মুহূর্তে সময়টা খুব কঠিন। কিন্তু মনে হচ্ছে জুনিয়র লেভেলের সেই পুরনো রাস্তাটা ফের খুঁজে বার করায় ভাগ্যকেও আবার আলোকিত করতে পারব। ছাব্বিশ বছর আগে যে ভাবে খবরের কাগজে প্রথম পাতায় আমার নাম উঠেছিল।
ঘাসের টুর্নামেন্টে একজন টেনিস প্লেয়ারের কিটে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার নাম জুতো। ঠিক ধরেছেন, ঘাসে এ ধার-ও ধার করতে গেলে সে রকম একটা জুতসই জুতো থাকা খুব দরকার, যার তলায় কাঁটার মতো দুর্দান্ত গ্রিপ থাকে পিছল সারফেসে শরীরের ভারসাম্য রাখার জন্য। যে রকমের টেনিস শ্যু খুব সাহায্য করে পিছিয়ে গিয়ে বলগুলো ফেরানোর সময়। না হলে ঘাসের উপর পিছলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটাও নিশ্চিত হয়ে যায় যে, পরের শটটা আর ফেরানো যাবে না!
আর একটা বড় ব্যাপার হল র্যাকেটের স্ট্রিং টেনশন। বছরের এই সময়টা উইম্বলডনের খেয়ালি আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আমি এ বার নিজের টেনিস কিটে ম্যাচ পিছু দশটা বিভিন্ন টেনশনের স্ট্রিংয়ের র্যাকেট রাখব ঠিক করেছি। যেগুলোর টেনশন নির্ভর করবে লন্ডনের সূর্যের উপর। যদি আমার ম্যাচটা ঝকঝকে রোদের দিনে হয় তা হলে টাইট স্ট্রিং লাগবে। কিন্তু যদি মেঘলা থাকে আর বল ভিজে যায়, তা হলে একটু লুজ স্ট্রিংয়ের র্যাকেট নিয়ে কোর্টে ঢুকব। যে রকম র্যাকেট ‘ট্র্যাম্পোলিন এফেক্ট’ দেয় কোর্টের আর্দ্রতার সঙ্গে লড়তে।
আমার মনে হয় টিউবে গিয়ে ঠিক কাজই করছি। অনেক বড় খেলোয়াড়কে দেখেছি কিছু সংস্কার মেনে চলে কোনও টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে। এতে দেহ আর মন যেমন রিল্যাক্সড থাকে, তেমনই তৈরিও থাকে লম্বা লড়াইয়ের জন্য। এক-একটা ট্রেন জার্নি আর তার সুখকর স্মৃতি রোমন্থনের মধ্য দিয়ে আমারও দেহ-মন এখন সে রকম রিল্যাক্সড এবং তৈরি। এখন এটা নিশ্চিত করতে হবে যাতে দু’সপ্তাহ পরে সে রকমই ভাল থাকতে পারি, যেরকম ছিলাম ২৬ বছর আগের উইম্বলডনে। (টিসিএম)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy