সুভাষের খুব প্রিয় ছাত্র ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অ্যালভিটো ডি কুনহা। স্যারের প্রয়ানে শোকাহত তিনি। অ্যালভিটো বলেন, ‘‘ফুটবলার ও ফুটবল কোচের বাইরে এক অতুলনীয় চরিত্র ছিলেন সুভাষ স্যার। শুধু ভাল কোচই নয়, ভাল মানুষ ছিলেন। উনি আমার কাছে পিতৃসম। যখন ছন্দ খারাপ ছিল তখন নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমার দেখভাল করেন। আমার ছন্দ ফেরাতে সাহায্য করেন। যে ভাবে আমাকে সেই সময় সামলেছিলেন, অনেক কম লোকই তা পারে। ভারতীয় ফুটবলের একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’’ মেহতাব হোসেনের কথায়, ‘‘বড় মাপের কোচ ছিলেন বলেই এত সাফল্য পেয়েছেন। তাঁর খেলানোর পদ্ধতির সঙ্গে মতের মিল না থাকলেও কেউ তাঁর সাফল্যকে উপেক্ষা করতে পারবে না।’’ রহিম নবি আবার মনে করেন, তাঁর ফুটবলার হয়ে ওঠার পিছনে অন্য়তম বড় নাম সুভাষ ভৌমিক।
মোহনবাগানের কর্তা দেবাশিস দত্ত বললেন, “ওটার ম্যান ম্যানেজমেন্ট এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা অতুলনীয় ছিল। বিরাট মাপের মানুষ ছিলেন সুভাষদা। এত দ্রুত চলে যাবেন ভাবিনি। তবে যেখানেই যান, উনি সুভাষ ভৌমিকই থাকবেন। ওঁকে কেউ বদলাতে পারবে না। ওঁর সব থেকে বড় গুণ নিজস্বতা। ’৭০-এর দশকে অনেক ফুটবলারই ছিল। কিন্তু উনি একটু ভিন্ন ছিলেন।”
সুভাষের মৃত্যুতে শোকবার্তা পাঠিয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা। সভাপতি প্রফুল পটেল বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নিজের প্রজন্মের সেরা ফুটবলার সুভাষদা আর নেই, এটা শুনে অত্যন্ত দুঃখিত। ভারতীয় ফুটবলে ওঁর অবদান ভোলার নয় এবং কোনওদিন ভোলা যাবে না। উনি চিরকাল আমাদের মধ্যেই থাকবেন। ভারতীয় ফুটবল আরও এক নক্ষত্রকে হারাল।’ সচিব কুশল দাস বলেছেন, ‘যে কীর্তি উনি তৈরি করেছিলেন, তার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন সুভাষদা।
দীর্ঘ দিন ধরেই সুগার এবং কিডনির অসুখে ভুগছিলেন সুভাষ। গত প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে তাঁকে নিয়মিত ডায়ালিসিস নিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বুকে সংক্রমণ নিয়ে তিনি ভর্তি ছিলেন একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে। ২৩ বছর আগে তাঁর বাইপাস সার্জারিও হয়েছিল। প্রাক্তন এই ফুটবলার ও কোচ শনিবার সকালে নার্সিংহোমেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।