Advertisement
E-Paper

২ গোলে হার ভারতের, মেসির বিশ্বকাপ মঞ্চে নজর কেড়ে নিল সুনীলদের ফুটবল

শনিবার কাতারের দোহার আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে যে লড়াই দিল ইগর স্তিমাচের দল তা অনেক দিন মনে রাখার মতো। দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ২-০ গোলে জিতে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়লেও ভারত যথেষ্ট লড়াই করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০১
football

অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারের সঙ্গে বল দখলের লড়াই শুভাশিস বসুর। ছবি: রয়টার্স।

ভারত ০
অস্ট্রেলিয়া ২ (ইরভিন, বস)

অঘটনের স্বপ্ন কেউই দেখেননি। শনিবার এশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে ভারত হারবে এটা নিয়ে অতি বড় ফুটবলপ্রেমীর মনেও সন্দেহ ছিল না। বরং কত গোলে হারবে তা নিয়ে অনেকে বাজি ধরেছিলেন। তবে শনিবার কাতারের দোহার আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে যে লড়াই দিল ইগর স্তিমাচের দল তা অনেক দিন মনে রাখার মতো। দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ২-০ গোলে জিতে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়লেও ভারত যথেষ্ট লড়াই করেছে।

স্তিমাচ নিজে ডিফেন্ডার ছিলেন। তাই ভালই জানেন, রক্ষণ শক্তিশালী না হলে কোনও প্রতিযোগিতাই জেতা যায় না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রক্ষণ জমাট রাখাই ভারতের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই পরীক্ষা সসম্মানে পাস তারা। প্রথমার্ধে ভারত যে গোল করতে দেবে না অস্ট্রেলিয়াকে, এটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। শুধু তাই নয়, গোল করেও দিতে পারতেন সুনীল ছেত্রীরা। তবে বুদ্ধিতেই টেক্কা দিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথমার্ধে প্রচুর কর্নার পেলেও গোল করতে পারেননি হ্যারি সাউটাররা। ভারতের রক্ষণে ভিড় দেখে তাঁরা মেপে নিতে চেয়েছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়ার আসল খেলা বেরিয়ে এল। গতিতেই পরাস্ত করে দিল ভারতীয়দের।

এশিয়ান কাপের ইতিহাসে প্রথম দেখা গেল মহিলা রেফারি। সেটাও আবার ভারতের ম্যাচেই। ফলে এই ম্যাচ থেকে গেল ইতিহাসের পাতায়। দোহায় প্রচুর প্রবাসী ভারতীয় থাকেন। তাঁরা ভিড় করেছিলেন ম্যাচ দেখতে। স্টেডিয়ামে ৪০ হাজারের বেশি দর্শক ছিল, যার বেশির ভাগই ভারতের। সুনীলেরা আক্রমণে উঠতেই চিৎকার করছিলেন তারা। গোটা ম্যাচেই সেই চিৎকার শোনা গিয়েছে।

শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণ শানাতে থাকে ভারত। রক্ষণ যেমন জমাট ছিল তেমনই ভাল খেলছিল মিডফিল্ড। সুরেশ ওয়াংজাম, নিখিল পূজারির সৌজন্যে কয়েক বার ভাল মুভও তৈরি করেছিল তারা। ভাল খেলছিলেন লালিয়ানজুয়ালা ছাংতেও। ৯ মিনিটের মাথায় বাঁ দিক থেকে তাঁর ক্রস ভেসে এসেছিল মনবীর সিংহের উদ্দেশে। সেই বলে মাথা ঠেকাতে পারেননি মোহনবাগানের ফুটবলার।

১৬ মিনিটের মাথায় আবার চলে আসে সুযোগ। এ বার ডান দিক থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে বল ভাসিয়েছিলেন পূজারি। অস্ট্রেলিয়ার দুই ডিফেন্ডারকে টপকে বল পৌঁছয় সুনীলের মাথায়। তিনি জায়গায় ছিলেন না। তবু মরিয়া হয়ে হেড করেছিলেন। গোলের কিছুটা পাশ দিয়ে সেই বল বেরিয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার পায়েই বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল। মাঝমাঠ থেকে শুরু হচ্ছিল তাদের আক্রমণ। কিন্তু ভারতের ডিফেন্ডারদের পায়ের জঙ্গল টপকাতে পারেনি তারা। কখনও সন্দেশ, কখনও দীপক টাংরি আটকে দিচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রচেষ্টা। শারীরিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও ভারতের ফুটবলারদের মধ্যে কোনও রকম খামতি লক্ষ করা যায়নি। তাঁরা চোখে চোখ রেখে লড়েছেন।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোল করে অস্ট্রেলিয়া। বাঁ দিক থেকে ক্রস ভেসে এসেছিল। গোলকিপার গুরপ্রীত বল না ধরে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। বক্সের মাথায় দাঁড়িয়েছিলেন জ্যাকসন ইরভিন। তিনি বল রিসিভ করে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন। সেই গোলের নেপথ্যে গুরপ্রীতকে দোষ দিলে ভুল হবে না। তিনি বলটি যদি ধরতেন বা আরও দূরে ফিস্ট করে দিতেন, তা হলে গোল হতই না। তাঁর ফিস্ট গেল অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারের পায়ে। গোলের সন্ধানে থাকা অস্ট্রেলিয়া সুযোগ নষ্ট করেনি।

ওই গোল খেয়েই কিছুটা দমে গেল ভারত। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ফুটবলারদের দমের ঘাটতি। উল্টো দিকে, অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারেরা আরও চনমনে হয়ে উঠছিলেন। গতিতে বারেবারেই পরাস্থ করছিলেন ভারতকে। সেই গতিতেই বাজিমাত করলেন রিলি ম্যাকগ্রি। ডান দিক থেকে গতিতে লালেংমাউইয়া রালতেকে পরাস্ত করে নীচু বল বাড়ালেন বক্সে। অরক্ষিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা জর্ডান বস অনায়াসে বাঁ পায়ের টোকায় গোল করেন। সামনে মনবীর থাকলেও তিনি বসকে আটকানোর চেষ্টাই করেননি।

শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া গোলের ব্যবধান বাড়াতেই পারত। কিন্তু মরিয়া ডিফেন্স এবং গুরপ্রীতের সেভ ভারতকে বাঁচিয়ে দেয়।

AFC Asian Cup Indian Football Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy