Advertisement
০১ মে ২০২৪

ভিয়ালিকে আটকানো ডিফেন্ডার ট্যাকল করতে চান বাগানকে

সাউদাম্পটনের হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জীবনের প্রথম ম্যাচে আটকে দিয়েছিলেন জিয়ানলুকা ভিয়ালিকে। ইতালির বিখ্যাত স্ট্রাইকার হিসেবে যাঁকে ফুটবল দুনিয়া চেনে। ইপিএলেই তিনি ফুটবলার জীবনে আটকেছেন কখনও ডেভিড প্লাট, কখনও পল গাসকোয়েনকে।

রিচার্ড অ্যান্ড্রু ডার্ইডেন।

রিচার্ড অ্যান্ড্রু ডার্ইডেন।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৪২
Share: Save:

সাউদাম্পটনের হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জীবনের প্রথম ম্যাচে আটকে দিয়েছিলেন জিয়ানলুকা ভিয়ালিকে। ইতালির বিখ্যাত স্ট্রাইকার হিসেবে যাঁকে ফুটবল দুনিয়া চেনে। ইপিএলেই তিনি ফুটবলার জীবনে আটকেছেন কখনও ডেভিড প্লাট, কখনও পল গাসকোয়েনকে।

সেই রিচার্ড অ্যান্ড্রু ড্রাইডেন এ বার পা গলিয়ে ফেলেছেন তাঁর তিরিশ বছরের পুরনো বন্ধু ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের জুতোয়।

তবে এ বার আর ফুটবলার হিসেবে নন।

ইস্টবেঙ্গল কোচ মর্গ্যান দেশে ফিরে যাওয়ায় বুধবারের ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের ‘হট সিটে’ বসতে হবে তাঁকেই। লাল-হলুদের স্টপগ্যাপ কোচ বলছেন, ‘‘বেশ চ্যালেঞ্জিং! এসেছিলাম ট্রেভরকে অ্যাসিস্ট করতে। কিন্তু গত শনিবার রাতে ট্রেভর বলল ডার্বিতে নাকি আমিই কোচ। অ্যাসাইনমেন্টটা পেয়েই ওঁকে বলে দিয়েছি ডোন্ট ওরি বস্...।’’

ডার্বি নিয়ে তা হলে নো টেনশন? ইস্টবেঙ্গল কোচের এ বার সাফ জবাব, ‘‘সাউদাম্পটনের হয়ে জীবনের প্রথম ম্যাচে ভিয়ালির চেলসিকে কোনও গোল করতে দিইনি। ম্যাচটা ড্র হয়েছিল। ও সব পরীক্ষা উতরে আসতে পারলে এই পরীক্ষায় ভয় পেতে যাব কোন দুঃখে? ফুটবলটা যে কাওয়ার্ডদের খেলা নয়।’’

কল্যাণীতে বুধবার ইস্টবেঙ্গলকে ডার্বি জিতিয়ে ফিরতে পারবেন? পারবেন টানা সপ্তম বার কলকাতা লিগ ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে তুলে দিয়ে দেশে ফিরতে? শুনে হাসেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, সাউদাম্পটন, স্টোক সিটির প্রাক্তন ডিফেন্ডার। বলেন, ‘‘নিজেদের দিনে আমরা লিগের যে কোনও টিমকে হারাতে পারি। মোহনবাগানে তো কোনও সুপারম্যান বা ব্যাটম্যান নেই!’’ একটু থেমে ফের বললেন, ‘‘পিয়ারলেস, টালিগঞ্জ আর ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে বাগানকে মন দিয়ে দেখেছি। জানি ওদের দুর্বলতাগুলো। সেই ‘সুইটস্পট’-এ কামড় দিতে দু’টো প্র্যাকটিস সেশন পাব সোম আর মঙ্গলে। তার পর মাঠেই দেখা যাবে...।’’

কল্যাণীতে আবাসিক শিবির করতে গিয়ে ‘সামোসা’-য় মজেছিলেন। ডার্বি হওয়ার কথা সেই কল্যাণীতেই। যে জায়গায় নাম শুনে ড্রাইডেন বলে দিলেন, ‘‘ভালই হল। ডার্বি ম্যাচ খেলতে গিয়ে ফের চা-সামোসা খাওয়া যাবে!’’

সাহেব কোচকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল ডার্বির মাহাত্ম্য। ঘটি-বাঙাল দ্বৈরথ। বাঙালির চিরকালীন ফুটবল যুদ্ধের ঐতিহ্য। যে ম্যাচের পর কেউ ফকির থেকে হঠাৎ রাজা, কেউ আবার রাজা থেকে ফকির হয়ে গিয়েছেন মুহূর্তে। হাতে আর দু’টো প্র্যাকটিস সেশন। ডার্বির চাপ শুষে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট হবে তো?

‘‘ট্রেভর এই ম্যাচটা সম্পর্কে সব বলেছে। ইউটিউব, ইন্টারনেট সব দেখে ফেলেছি। ট্রেভরের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজি, ট্যাকটিক্স নিয়ে রোজ কথা হচ্ছে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা কাঁদতে কাঁদতে কল্যাণী থেকে যাতে না ফেরে তার জন্যই তো এত কথা!’’

ডাফি-ড্যানিয়েলের প্রসঙ্গেও কেমন যেন নির্বিকার। গম্ভীর উত্তর আসে, ‘‘ওরা ভাল টিম হতে পারে। কিন্তু যারা ১-৩ পিছিয়েও ৪-৩ জিততে জানে, তাঁদের কাছে আবার থ্রেট কী? আমরা কাউকে ভয় পাচ্ছি না। বরং ওরা ভাবুক আমাদের মিডফিল্ড আর অ্যাটাকিং থার্ড নিয়ে।’’ নিজের রক্ষণ নিয়েও বিন্দুমাত্র চিন্তাক্লিষ্ট নন ইস্টবেঙ্গলের কেয়ারটেকার কোচ। বলেন, ‘‘সাত ম্যাচে আমাদের ছ’জন ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে। বুঝতেই পারছেন ইস্টবেঙ্গলে ম্যাচ উইনার আর এক্সপিরিয়েন্স বেশি। ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স কাঁপবে না।’’

সাহেব কোচ বরং ফুরফুরে মেজাজে। কথাবার্তার ফাঁকে স্ত্রী লিন্ডসের ফোন এল একবার। স্ক্রিনে নামটা দেখে ‘এই রে’ বলে হেসে ফেললেন। পরে বলছিলেন যে, লিন্ডসের নাকি খুব ইচ্ছে ছিল ভারতে এসে খেলা দেখার। কিন্তু হাসপাতালে নার্সের চাকরি করেন, ছুটি জোগাড় করা যায়নি শেষ পর্যন্ত। লিগ শেষ হলে কলকাতা ছাড়তে হবে। ফিরতে হবে দেশে। কিন্তু ড্রাইডেন চান, ডার্বি আর লিগের জোড়া মুকুট নিয়ে স্ত্রী-র সঙ্গে দেখা করতে।

ব্যর্থতার অন্ধকার নিয়ে ‘বেটার হাফের’ মুখোমুখি হতে কে-ই বা চায়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE