Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

লোকে তো বলছিল এই ইউসুফকে বাদ দাও

গত বারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআর অধিনায়ক আবার কলম ধরলেন আনন্দবাজারের জন্য। নাইট সংসারের হালহকিকত জানাচ্ছেন গৌতম গম্ভীরসলমন খানের ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ যখন মুক্তি পেল, আমার বয়স মাত্র আট। বাড়ির কাছের একটা সিনেমা হলে গোটা পরিবারের সঙ্গে ফিল্মটা দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তো মাল্টিপ্লেক্সের যুগ ছিল না। সিনেমা হলে যাওয়া মানে ছিল শুধুই ফিল্ম দেখা। আমার ক্ষেত্রে অবশ্য সেটা ছিল প্রচুর পপকর্ন, কোল্ড ড্রিঙ্ক আর আইসক্রিম খাওয়ার সুযোগ। ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’-ও ব্যতিক্রম হয়নি।

চাওলাকে পাশে নিয়ে ‘গিটারিস্ট’ হগ। বারাসতে এক অনুষ্ঠানে শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

চাওলাকে পাশে নিয়ে ‘গিটারিস্ট’ হগ। বারাসতে এক অনুষ্ঠানে শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৪:২৭
Share: Save:

সলমন খানের ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ যখন মুক্তি পেল, আমার বয়স মাত্র আট। বাড়ির কাছের একটা সিনেমা হলে গোটা পরিবারের সঙ্গে ফিল্মটা দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তো মাল্টিপ্লেক্সের যুগ ছিল না। সিনেমা হলে যাওয়া মানে ছিল শুধুই ফিল্ম দেখা। আমার ক্ষেত্রে অবশ্য সেটা ছিল প্রচুর পপকর্ন, কোল্ড ড্রিঙ্ক আর আইসক্রিম খাওয়ার সুযোগ। ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’-ও ব্যতিক্রম হয়নি। ফিল্মটা নিয়ে যতটুকু জানতে পেরেছিলাম, তাতে ওটা ছিল একদম নাচগানের সিনেমা। ‘ঢিসুম ঢিসুম’ খুব কম ছিল। আট বছরের ছেলের কাছে যার মানে সিনেমা হলে তিন ঘণ্টা নিরর্থক বসে থাকা। যে সময়টা বন্ধুদের সঙ্গে কাটালে বেশি ভাল হত। কিন্তু অন্ধকারে বসে ওই মহাভোজের আকর্ষণও কম ছিল না। তাই গেলাম।

ভুল ভাবিনি। বড়দের জন্য ফিল্মটা ভাল ছিল, কিন্তু আমার কাছে ভীষণ বোরিং। অবশ্য এখানে স্বীকার করতে হবে, তার কয়েক বছর পরেই দু’তিন বার দেখেছি সিনেমাটা। তবে প্রথম বার দেখে কী হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারিনি। শুধু এটুকু বুঝেছিলাম যে পায়রাটা, সলমনের কালো জ্যাকেট আর ‘ফ্রেন্ড’ লেখা টুপিটা আমার ভাল লেগেছিল। আর একটা জিনিসও দারুণ লেগেছিল, যেটা আজ পর্যন্ত আমি করে উঠতে পারিনি। সেটা হল, এক হাতে পুশ আপ। যাঁরা সিনেমাটা দেখেছেন তাঁরা মনে করে দেখুন, সিনেমার একটা দৃশ্যে কী অবলীলায় এক হাতে পুশ আপ করছিল সলমন! ওই দৃশ্যটাতেই বোধহয় ভাগ্যশ্রীর চরিত্র ওকে প্রেম নিবেদন করছিল।

ওই দিনটার পর থেকে আমার কাছে সলমন মানে ছিল তারকা। অভিনেতা নয়। ওর কাছে সৌন্দর্য ছিল, সুঠাম শরীর ছিল, তারকাসুলভ হাঁটাচলা ছিল। সঙ্গে অবশ্যই এক হাতের পুশ আপ। আট বছরের ছেলে হিসেবে আমি জিমে যাওয়ার বিশেষ ভক্ত ছিলাম না। কিন্তু বলিউডের হিরোদের নকল করার ইচ্ছেটা ছিল পুরোদমে। বাড়ি ফিরে এক হাতে পুশ আপ করার অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু এক বার দূরের কথা, অর্ধেক বারও করতে পারিনি। টিভিতে সলমনের খবর দেখতে দেখতে স্মৃতিগুলো হুড়মুড় করে ফিরে এল!

সলমন আমার কাছে এখনও একজন তারকা। যে নিজের ভক্তদের মননের রাজা। আর তার চেয়েও বড় কথা, সলমন একজন দুর্দান্ত মানুষ। জানি না ৪৯ বছর বয়সে ও এক হাতে পুশ আপ করতে পারবে কি না। কিন্তু তারকা হওয়ার চিত্রনাট্যটা এক হাতে নতুন করে লিখে ফেলেছে ও। জানি না ও দোষী কি না। কিন্তু এটা জানি যে, তারকা আর ভক্তের মধ্যে আইনের চোখে কোনও পার্থক্য থাকা উচিত নয়।

সলমনের এক হাতে পুশ আপ আমাদের টিমে কে করতে পারবে? আন্দ্রে রাসেল ছাড়া কোনও নাম তো মাথায় আসছে না। ও বেশ শক্তপোক্ত ছেলে। মাঠ আর মাঠের বাইরেও ও নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে চলছে। বৃহস্পতিবার দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে জেতার পরে ডান্স ফ্লোরেও রাসেলের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত! বিশ্বস্ত সূত্র থেকে খবর পেয়েছি, আমার বন্ধু সুনীল নারিনও বেশ ভাল নেচেছে। দুর্ভাগ্য যে, ঘুমোতে চলে গিয়েছিলাম বলে মজাটা মিস করে গেলাম।

এই মুহূর্তে মানসিক ভাবে আমরা খুব ভাল জায়গায় আছি। পঞ্জাবকে কিন্তু মোটেও হালকা ভাবে নিচ্ছি না। ওরা খুব ভাল টিম। ওদের হারানোর কিছু নেই। অন্য দিকে আমরা সব কিছুর জন্য খেলছি। ইউসুফ পাঠানের জন্য আমি গর্বিত। ওকে নিয়ে যে রকম সমালোচনা হচ্ছিল, তার উত্তর খুব ভাল ভাবে দিচ্ছে ইউসুফ। লোকে বলেছিল ওকে বাদ দিয়ে দিতে। কিন্তু আমি ওই নীতিতে বিশ্বাস করি না। আমার নীতি বলে, প্লেয়ারদের যথেষ্ট জায়গা আর সুযোগ দাও, যাতে ওরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারে।

সত্যি বলতে কী, ইউসুফও মনে হয় এক হাতে পুশ আপটা করে দিতে পারবে। একা আমিই হোঁচট খাচ্ছি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE