Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Sports News

প্রথম অলিম্পিক্সেই ইতিহাস দীপার, ফাইনালে উঠে এ বার নজরে পদক

সবুজ-সাদা চকচকে ড্রেসে রিও এরিনায় যখন দৌড়চ্ছেন ত্রিপুরার বাঙালি মেয়েটা, এ দেশে তখন ভোর পাঁচটা। টেলিভিশনের পর্দায় ক’জন চোখ সেঁটে বসেছিলেন তা জানা নেই। কিন্তু, যাঁরা সেই বাঙালি কন্যার জন্য সোমবার ভোরে জেগেছিলেন তাঁদের ভালবাসা-উচ্ছ্বাস-প্রার্থনা-স্বপ্নের সবটাই জুড়ে ছিলেন তিনি। বাইশ বছরের দীপা কর্মকারের জন্য ভারতীয় জিমন্যাস্টের নয়া ইতিহাস এ বার অলিম্পিক্সের পাতায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ১৪:৩৫
Share: Save:

সবুজ-সাদা চকচকে ড্রেসে রিও এরিনায় যখন দৌড়চ্ছেন ত্রিপুরার বাঙালি মেয়েটা, এ দেশে তখন ভোর পাঁচটা। টেলিভিশনের পর্দায় ক’জন চোখ সেঁটে বসেছিলেন তা জানা নেই। কিন্তু, যাঁরা সেই বাঙালি কন্যার জন্য সোমবার ভোরে জেগেছিলেন তাঁদের ভালবাসা-উচ্ছ্বাস-প্রার্থনা-স্বপ্নের সবটাই জুড়ে ছিলেন তিনি। বাইশ বছরের দীপা কর্মকারের জন্য ভারতীয় জিমন্যাস্টের নয়া ইতিহাস এ বার অলিম্পিক্সের পাতায়। বরং বলা ভাল, বাঙালির খেলাধুলোর ইতিহাসেও সবচেয়ে উঁচু লাফটা এ দিন দিলেন দীপা। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সের ফাইনালে উঠলেন তিনি।

৯৩ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ভল্ট ইভেন্টে আট জনের ফাইনালে যাওয়ার কথা ছিল। প্রথম বার অলিম্পিক্সে এসে আপাতকঠিন সেই লক্ষ্যভেদ তো করলেনই। সেই সঙ্গে ফাইনালের আগেই বাহবা কুড়িয়ে নিলেন এ বারের অলিম্পিক্সের সবচেয়ে চর্চিত প্রতিভা মার্কিন জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলসের। ফাইনালে ওঠার খবরে তখনও উল্লাস চলছে। তার মধ্যেই সিমোন নিজে এসে দীপাকে অভিনন্দন জানিয়ে যান। অলিম্পক্স শুরু আগে যিনি জানিয়েছিলেন টিম ইউএসএ থেকে কোনও জিমন্যাস্ট প্রোদুনোভা ভল্টের চেষ্টা করবেন না। কোন প্রোদুনোভা ভল্ট? জিমন্যাস্ট জগতের সবচেয়ে কঠিন আর বিপজ্জনক বাঁক যাতে রয়েছে যে ভল্টে। শূন্যে ডাবল সমারসল্ট দিয়ে ল্যান্ড করতে হয় এতে। দশ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সিমোন বাইলস স্বয়ং যা করার কথা দু’বার ভাবেন। বলেছিলেন, “প্রোদুনোভা ভল্ট করতে গিয়ে যে কোনও দিন মৃত্যু পযন্ত হতে পারে।” বিশ্বের মাত্র তিন নম্বর জিমন্যাস্ট হিসেবে কমনওয়েলথ গেমসে ওই ভল্টের জোরেই রিওর টিকিট কেটেছিলেন দীপা। ব্যক্তিগত ভল্ট ইভেন্টের ফাইনালে যাওয়ার পথে মোট দু’বার সেই বিপজ্জনক প্রোদুনোভা ভল্ট দিলেন দীপা। আর দু’বারেই ক্লিন ল্যান্ডিং করলেন ওই ভল্টে। তাতেই ঝুলিতে পুড়লেন ১৪.৮৫০ পয়েন্ট। এক সময় ছ’নম্বরে থাকলেও শেষমেশ আটে চলে যান তিনি। ১৬.০৫০ পয়েন্টে শীর্ষে থাকলেন সিমোন।

ফাইনালে উঠে দীপা বলেন, “ট্রেনিংয়ের সময় ভাল ভাবে ল্যান্ডিং করলেও আজ প্রথম বার প্রোদুনোভা ভল্টটা ঠিকঠাক হয়নি। ল্যান্ডিংয়ের সময় ম্যাটে আমার কোমর ছুঁয়ে গিয়েছিল। সত্যিই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল।” তবে যার শেষ ভাল তার...। তাই দীপা বলতে পারলেন, “অলিম্পিক্সের ফাইনালে ওঠাটা একটা অসাধারণ কৃতিত্ব।”

দীপার ইতিহাস গড়ার পর থেকেই অভিনন্দনের বন্যা বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সে তালিকায় রয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, হর্শ ভোগলে, ভিভিএস লক্ষ্ণণ থেকে থেকে শুরু করে মন্দিরা বেদী, সাইনা এনসি প্রমুখ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন টুইট করেন, “রিও-র পারফরম্যান্সের জন্য অভিনন্দন দীপা। ফাইনালের জন্য শুভেচ্ছা রইল। তুমি আমাদের গর্বিত করেছ।”

আরও পডুন

সাফল্যের রিও এখন সাহস দিচ্ছে দীপাকে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rio Olympics Dipa Karmakar Gymnast
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE