ওভালে ভারতের জয়জয়কার। ছবি: এপি।
ওভালে ভারতের ‘বিরাট’ জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার পরে অস্ট্রেলিয়াকেও মাটি ধরাল ‘টিম ইন্ডিয়া’।
প্রথমে ব্যাট করে রানের পাহাড়ে চড়েছিল ভারত। ৫০ ওভারে ভারত করে পাঁচ উইকেটে ৩৫২ রান। এর পরেও অনেকে চিন্তায় ছিলেন। মোহালিতে ৩৫৮ রান করেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। এই স্মৃতি যে এখনও টাটকা! তখন অবশ্য এই অস্ট্রেলিয়া দলে ছিলেন না ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ। এ বার তাঁরা ফিরে এসেছেন দলে। আগের থেকেও শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া।
তা ছাড়া পরিসংখ্যানও অজিদের হয়েই কথা বলছিল। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে লিডসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে হেরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তার পর থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চে কখনওই রান তাড়া করে ম্যাচ হারেনি অস্ট্রেলিয়া। এ দিন ইতিহাসের চাকা অবশ্য ঘুরল অন্য দিকে। দিনান্তে ভারতের ভক্তরা হাসছেন। কোহালি-ধোনিদের মুখে খেলা করছে হাজার ওয়াটের আলো। অস্ট্রেলিয়া থামল ৩১৬ রানে। ৩৬ রানে ম্যাচ জেতার আনন্দে শূন্যে ঘুসি ছুড়ছেন কোহালি।
আরও পড়ুন: একই বলে বোল্ড ও ছক্কা, সৌজন্যে সৌম্য ও আর্চার, দেখুন ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: দেশের আগে টাকা! ডিভিলিয়ার্সকে তীব্র আক্রমণ শোয়েব আখতারের
সীমীত ওভারের ক্রিকেটে বড় রান তাড়া করা রীতিমতো কঠিন ব্যাপার। ইনিংসের মাঝপথে বাড়তে থাকে আস্কিং রেট। মাথা ঠান্ডা রেখে তখন রান তাড়া করা কঠিন হয়ে যায়। বাড়তে থাকা অনন্ত চাপ সামলে রান তোলার কাজ কঠিন থেকে কঠিনতম হয়ে ওঠে। ভুলের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেই ঘটনাই এ দিন ঘটে অজিদের ইনিংসে। বুমরার বলে বোল্ড হয়ে খোয়াজা ফেরার পরেই চাপ অনুভব করতে শুরু করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ৩৬.৪ ওভারে তাদের রান তখন তিন উইকেটে ২০২। অভিজ্ঞ স্মিথকে সঙ্গ দিতে এলেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি শুরু করেছিলেন স্বভাবজাত ভঙ্গিতেই। ভুবির একটা স্পেল হঠাৎই ম্যাচটার ছবিই বদলে দেয়। এক ওভারে স্মিথ (৬৯) ও স্টোয়নিসকে (০) ফিরিয়ে ভুবনেশ্বর কুমার ম্যাচের রাশ তুলে দেন কোহালির হাতে। ৩ উইকেটে ২০২ থেকে অস্ট্রেলিয়া হয়ে যায় ৫ উইকেটে ২৩৮।
ঠিক ছ’ রান পরেই ম্যাক্সওয়েলকে (২৮) তালুবন্দি করেন পরিবর্ত জাদেজা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কুল্টার নাইলের ব্যাট কথা বলেছিল। এ দিন পারলেন না তিনি। অ্যালেক্স ক্যারি (৫৫ নট আউট) চোয়াল শক্ত রেখে লড়ে গেলেও ম্যাচ বের করতে পারলেন না। অবশ্য পারবেনই বা কীভাবে! ভারতের ব্যাটসম্যানরা আসল কাজটা আগেই করে দিয়েছিলেন আগেই।
এ দিন টস জিতে প্রথম থেকেই ভারতীয়রা ব্যাট হাতে শাসন করতে থাকেন অজি বোলারদের। সেঞ্চুরি দিয়ে চলতি বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন রোহিত শর্মা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ‘হিটম্যান’ খেললেন ৫৭ রানের ইনিংস। তিনি ও শিখর ধওয়ন ওপেনিং জুটিতে ১২৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। রোহিতকে ফেরান কুল্টার নাইল। মুম্বইকর ফেরার পরে ভারতের ইনিংসের হাল ধরেন ধওয়ন ও ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছিলেন ধওয়ন। এ দিন কোহালিকে নিশ্চিন্ত করলেন বাঁ হাতি ওপেনার। ৯৬ বলে শতরান করেন শিখর। ১১৭ রানে ধওয়ন ফেরেন স্টার্কের বলে। কোহালির সঙ্গে জুটিতে ৯৩ রান জোড়েন ধওয়ন।
শিখর যখন ফেরেন তখন ভারতের রান ২ উইকেটে ২২০। শক্ত ভিতের উপরে তিনি দাঁড় করিয়ে দেন ভারতকে। দ্রুত গতিতে রান তোলার জন্য ধোনির আগে হার্দিক পাণ্ড্যকে ব্যাট করতে পাঠান কোহালি। ২৭ বলে ৪৮ রান করে পাণ্ড্য অধিনায়কের সিদ্ধান্তের মর্যাদা দেন। কোহালির সঙ্গে পাণ্ড্য জুটিতে জোড়েন ৮১ রান। ধোনিও দ্রুতগতিতে ১৪ বলে ২৭ রান করেন।
কোহালি এ দিন শতরান পেতেই পারতেন। ৮২ রানে ফিরতে হয় ভারত অধিনায়ককে। দিনের শেষে অবশ্য শতরান হাতছাড়া করার জন্য একেবারেই হতাশ নন কোহালি। বিশ্বকাপে ঠিক পথেই এগোচ্ছে তাঁর দল। দলের পারফরম্যান্সে খুশি কোহালি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy