যুযুধান: নটিংহ্যামে আজ আমির বনাম রাসেল। ফাইল চিত্র
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নামার আগে সুখবর পাকিস্তান শিবিরে। বাঁ-হাতি পেসার মহম্মদ আমির পুরোপুরি সুস্থ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁর খেলতে কোনও অসুবিধা নেই।
দলের মূল পেসার ফিট হওয়ায় খানিকটা স্বস্তিতে থাকবেন পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। কারণ, নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিছুটা আন্দাজ দিয়ে গিয়েছে তাঁদের ক্ষমতা সম্পর্কে। ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরিদের পিটিয়ে ৪২১ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেঞ্চুরি করেন শেই হোপ। ২৫ বলে ৫৪ করে আন্দ্রে রাসেল প্রমাণ করে দিয়েছেন, যে ছন্দে থেকে আইপিএল মরসুম শেষ করেছেন। বিশ্বকাপও একই ছন্দে শুরু করতে চলেছেন।
শুক্রবার নটিংহ্যামে রানের বৃষ্টি দেখা যেতে পারে। পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে সে রকমই ইঙ্গিত দেন স্থানীয় পিচ কিউরেটর। গত বছর এ মাঠেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৪৮১ রান করেছিল ইংল্যান্ড। ওয়ান ডে ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ স্কোর। ২০১৬-তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই ৪৪৪ রান করেছিল ইংল্যান্ড। তাই সে মাঠে পৌঁছেই পিচ কিউরেটরের সঙ্গে আগাম আলোচনা করে নেন সরফরাজ। পাক অধিনায়ক বলেন, ‘‘প্রথম দিন নটিংহ্যামে এসেই কিউরেটরকে জিজ্ঞাসা করি, এ মাঠে গড় রান কত ওঠে। তাঁর উত্তর ৪৮০।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান যে ধরনের দল, তাঁদের কাছে কোনও লক্ষ্যই অসম্ভব নয়। নিজেদের দিনে বিপক্ষের ত্রাস হয়ে উঠতে পারে। সরফরাজ নিজেও এ কথা জানেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ রকমই দল হওয়া ভাল। আমাদের ক্ষমতা সম্পর্কে বিপক্ষের কোনও ধারণা থাকে না। শুধু আমরা নই। ওয়েস্ট ইন্ডিজও একই রকম দল। সুতরাং শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাবে।’’
২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল দু’দলই। তার পর থেকে সে ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজয়। দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডেভ ক্যামেরনের সঙ্গে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সমস্যা হওয়ায় জাতীয় দলের হয়ে খেলতেন না ক্রিস গেল, আন্দ্রে রাসেলরা। এ বছরের শুরুতে প্রেসিডেন্ড হিসেবে রিকি স্কেরিট যোগ দেওয়ার পর থেকে খোলনলচে বদলে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফেরানো হয় সিনিয়র ক্রিকেটারদের। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ ২-২ ড্র করে ক্যারিবিয়ানরা।
অন্য দিকে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে একাধিক ওয়ান ডে-তে হেরেছে। শেষ ১০টি ওয়ান ডে-র একটিতেও জিততে পারেনি সরফরাজের দল। এমনকি প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁরা হারে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। সরফরাজ হয়তো তাতে ভয় পাবেন না। কারণ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১-৪ সিরিজ হেরেছিল। তার পরে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ১২৪ রানে হার। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে যায় সরফরাজের দল। পাক অধিনায়ক বলছিলেন, ‘‘শেষ দশ ম্যাচ হেরেছি ঠিকই। কিন্তু বিশ্বকাপে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগেও আমরা ভাল ছন্দে ছিলাম না। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।’’
শুক্রবারের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চাইবে, পাওয়ারপ্লেতেই ম্যাচের ছন্দ তৈরি করে দেওয়ার। কারণ, গেল ও লুইস দু’জনেই পাওয়ারহিটার। বড় শট নিতে পছন্দ করেন। আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ়ের বল যদি সুইং না করে তা হলে সমস্যায় পড়তে পারে পাকিস্তান। তার পরে শেই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, ড্যারেন ব্র্যাভোরাও রয়েছেন। সব চেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন রাসেল। ৩৫ ওভারের মাথায় তিনি ব্যাট করার সুযোগ পেলে তাঁকে কী ভাবে আটকাবেন সরফরাজ? পাক অধিনায়ক জানিয়েছেন, শুরু থেকেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলবে তাঁর দল।
সরফরাজের ব্যাখ্যা, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে আটকাতে গেলে উইকেট তুলতেই হবে। যতটা পারব, ওদের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করব। আমির পুরোপুরি ফিট। ও কাল খেলবে।’’ বোলিং নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও পাকিস্তানের ব্যাটিংই এ বার তাঁদের অস্ত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy