Advertisement
২০ মে ২০২৪
বাবা-মাকে গোল উৎসর্গ রূপেন্দ্রর

অল্টমান্সের ভারত জয় পেলেও স্বস্তি দিল না

কিছুটা উচ্ছ্বসিত হয়েই জোড়া গোলের নায়ক রূপেন্দ্র পাল সিংহ বললেন, ‘‘হ্যাটট্রিকটা করতে পারিনি ঠিকই। কিন্তু জেতাটাই আমার কাছে হ্যাটট্রিকের মতো। বাবা-মাকে উৎসর্গ করছি গোলগুলো।’’

গোল করে রঘুনাথ।ছবি: পিটিআই

গোল করে রঘুনাথ।ছবি: পিটিআই

রতন চক্রবর্তী
রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০৩
Share: Save:

ভারত ৩: আয়ারল্যান্ড ২
(রঘুনাথ, রূপেন্দ্র ২) (জন, কনর)

কিছুটা উচ্ছ্বসিত হয়েই জোড়া গোলের নায়ক রূপেন্দ্র পাল সিংহ বললেন, ‘‘হ্যাটট্রিকটা করতে পারিনি ঠিকই। কিন্তু জেতাটাই আমার কাছে হ্যাটট্রিকের মতো। বাবা-মাকে উৎসর্গ করছি গোলগুলো।’’

স্বস্তি নিয়ে টিম ক্যাপ্টেন সৃজেশের মন্তব্য, ‘‘অলিম্পিক্সে কেউই ছোট টিম নয়। ম্যাচটা জিততে পেরেছি। প্রচণ্ড চাপ ছিল। শুরুটা ভাল হল। কিছু ভুল হয়েছে, সেটা শুধরে নেব।’’

আর রূপেন্দ্র-সৃজেশদের কোচ রোনাল্ট অল্টমান্স অবশ্য কোনও চাপে পড়ে যাওয়ার কথা মানতেই চাইছেন না। ডাচ কোচের মন্তব্য ‘‘জার্মানি, আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ডস সব ভাল টিম। সব ম্যাচ জিততে হবে। আজকে ছেলেদের খেলায় আমি খুশি। পিছনে না তাকিয়ে সামনের দিকে এগনোই আমদের লক্ষ্য।’’

রিও-তে আসার পর প্রথম ভারতের পতাকা দেখলাম গ্যালারিতে। অন্তত দশটা। কেউ এসেছেন বেঙ্গালুরু থেকে, কেউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে। নাড়ির টানে এখানে দেশের কিছু খেলা দেখে কেউ চলে যাবেন আমাজন, কেউ কিনিয়ায় বেড়াতে। রথ দেখা আর কলা বেচা একসঙ্গে। এ রকম একজন দেবাশিস ভট্টাচার্য এসেছেন এখানে। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ভদ্রলোক বেঙ্গালুরু থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন। পতাকা উড়িয়ে সারাক্ষণ চেঁচিয়ে গেলেন সর্দার, রূপেন্দ্রদের জন্য। হকির ফ্যান। প্রতিটি খেলোয়াড়কে চেনেন। নাম ধরে ধরে উদ্ধুদ্ধ করছিলেন। তীব্র রোদ উপেক্ষা করে। চতুর্থ পর্বে একটা সময় ভারতের বক্সের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের দাপাদাপি দেখে তিনিও বসে পড়লেন। কিন্তু ভারতীয় শিবিরে তা নিয়ে হাহুতাশ নেই। বরং সবার মুখে একই কথা, যা ভুল ত্রুটি হয়েছে শুধরে নেব। ভিলেজে ফিরে।

এ বারের যে ভাবে গ্রুপ লিগের ফর্ম্যাট হয়েছে তাতে কানাডা ম্যাচ জিতলে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত। ফলে তীব্র চাপে পড়ে যাওয়ার পরেও ভারতীয় শিবিরে স্বস্তি। ডাচ কোচ অবশ্য বললেন, ‘‘এ সব বাছাবাছির মধ্যে আমি নেই। সব ম্যাচ আমরা টার্গেট করব। ও রকম অঙ্ক করে খেলতে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে।’’

ভারতের একটা পজিটিভ দিক, সব ক’টা গোল হয়েছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। কিন্তু সমস্যা হল, দু’টো গোলও ভারত হজম করেছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। সেই প্রসঙ্গ তুললেন সৃজেশদের কোচ কিছুটা ব্যাকফুটে। ‘‘ছোটখাটো ভুল তো হতেই পারে। এখন সব টিমই গোলের জন্য পেনাল্টি কর্নারকে টার্গেট করেছে। চিন্তার কিছু নেই।’’ খেলার ফল বলছে ২-০ এগিয়ে যাওয়ার পর ২-১। এর পর ৩-১ এগিয়ে যাওয়ার পর ৩-২। সুনীল-রঘুনাথদের চাপে পড়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। শেষ মুহূর্তে আইরিশরা সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে সমস্যায় পড়ত অল্টমান্সের ভারত।

সৃজেশকে অধিনায়ক করার পর সর্দার সিংহ কেমন খেলে, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল। এ দিন প্রাক্তন অধিনায়ককে দেখে মনে হয়েছে খেলার ইচ্ছেই নেই। ডিওডোরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মিক্সড জোন দিয়ে যে রকম দৌড়ে চলে গেলেন মিডিয়াকে এড়িয়ে, বোঝাই গেল, নিজের পারফরম্যান্সে হতাশ তিনি। অল্টমান্স আগে বলেছিলেন, ‘‘অন্য সর্দারকে দেখবেন অলিম্পিক্সে।’’ এ দিন বললেন, আর একটু সময় দিন। এখনও চারটে ম্যাচ আছে।

ডাচ কোচ যাই বলুন, ছত্রিশ বছর পর পদক জেতার আশা জাগিয়ে রিও-তে আসা ভারতের প্রথম ম্যাচ দেখে কিন্তু স্বস্তি পাওয়া গেল না। বরং চিন্তা বাড়ল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hockey Rio Olympics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE