মাঝে বৃষ্টি নেমে কিছুক্ষণের জন্য রসভঙ্গ করেছিল। তবে ইডেন টেস্টে দ্বিতীয় দিনের শেষে জয়জয়কার ক্রিকেটেরই!
এটাও স্পষ্ট, এই টেস্টেও নিউজিল্যান্ডের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে ভারত।
শনিবার সকালে ঘরের মাঠে জমাট ব্যাটিং করল ঋদ্ধিমান সাহা। নিজেকে দারুণ ভাবে প্রয়োগ করে ঋদ্ধি ইডেনে নিজের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরিটা তো করলই। সঙ্গে টিমকেও তিনশোর গণ্ডি পার করানোয় বড় ভূমিকা নিল। পিচে রীতিমতো জাঁকিয়ে বসে ব্যাটিংটাও চমৎকার করল।
তিনশো আবার এমন একটা রান বোর্ডে যেটা দেখলে যে কোনও টিম কিছুটা মানসিক স্বস্তি বোধ করে। তবে প্রথম ইনিংসে সেই রানই তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের যা দুর্দশা দেখলাম, তাতে তিনশোটাই এখন ওদের সামনে বিশাল টার্গেট।
নিউজিল্যান্ড ইনিংসে ধস নামার জন্য পিচকে কিন্তু কোনও ভাবেই দায়ী করা যাচ্ছে না। ওদের একটা উইকেটও ইডেনের বাইশ গজের দোষে পড়েনি। পড়েছে ভুবনেশ্বর কুমারের অসামান্য বোলিং কোনও ভাবেই সামলাতে না পেরে। এই কাজটায় ভুবিকে দারুণ সাহায্য করে গেল শামি। বরং দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হয়ে আসার সময়ও ইডেনের পিচের বাউন্স আর ক্যারি দেখে মন ভরে গেল। ভুবনেশ্বর আর শামি শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক বোলিং করল। যখনই বাড়তি চেষ্টা করছিল তখনই পিচের সাহায্য পাচ্ছিল। সারফেসকে কাজে লাগানোর সুফলও পেল। ভারতের দুই পেসারই লাইন আর লেংথ নিখুঁত রেখে গিয়ে নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের ভুল করতে বাধ্য করালো। ম্যাচে স্পিনারদের এখনও তেমন কোনও বড় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। তবে আমার ধারণা সেটা দ্বিতীয় ইনিংসে দেখব আমরা।
নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং কিন্তু একটা সমানে সমানে টক্কর দেখার আশায় জল ঢেলে দিল। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমী নিজেদের টিমের জয় দেখতে চায় ঠিকই। তবে একইসঙ্গে ক্রিকেটের স্বার্থেই তারা আশা করে প্রতিপক্ষ একটা জমাটি লড়াই করবে। একদম সত্যি কথাটা বললে কিন্তু এই নিউজিল্যান্ড টিম এখনও নিজেদের ভেতরের সেই আগুনটা দেখাতে পারেনি যার দমে ভারতকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যায়। ওদের খেলায় কোনও প্রতিজ্ঞা দেখছি না। ব্যাটিংয়ের সময় পা-ই তো নড়ছে না। ভারতীয় পিচে ব্যাট হাতে সফল হওয়ার আসল কৌশলটাই হল ফ্রন্ট ফুটে গিয়ে খেল। তার বদলে নিউজিল্যান্ডের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানকে দেখে মনে হচ্ছে পাগুলো যেন ক্রিজে সেঁটে গিয়েছে।
আমার মনে হয় বিরাটরা আজ সকালের মধ্যেই নিউজিল্যান্ড ব্যাটিংয়ের ল্যাজটাকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবার ব্যাট করতে চাইবে। আর প্রতিপক্ষের উপর এমন রানের পাহাড় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় থাকবে যার ভারে দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড আর মাথাই তুলতে না পারে। আজই ওদের লড়াই থেকে ছিটকে দিতে চাইবে ভারত।
ভারতীয় সমর্থকরাও ইডেনে একটা জয় দেখার জন্য মুখিয়ে আছে। এই টেস্ট জেতা মানেই তো পাকিস্তানকে টপকে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বিরাটদের এক নম্বরে উঠে আসা।