Advertisement
E-Paper

হারলেও সুনীলরা কিন্তু আমাদের গর্বিত করল

হারলেও সুনীলরা আমাদের গর্বিত করলখেলার শেষে দেখলাম সুনীল-রিনোরা মাঠের মধ্যে হতাশায় বসে পড়েছে। কারও কারও চোখে জল। হতাশ হওয়া স্বাভাবিক। কারণ হারলেও যে লড়াইটা বেঙ্গালুরু শেষ পর্যন্ত করল তাতে এটা হতেই পারে।

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২২
দোহায় আটকে যাওয়া সুনীল। শনিবার । ছবি: রয়টার্স।

দোহায় আটকে যাওয়া সুনীল। শনিবার । ছবি: রয়টার্স।

এয়ার ফোর্স (ইরাক) ১: বেঙ্গালুরু ০ (হামাদি)

খেলার শেষে দেখলাম সুনীল-রিনোরা মাঠের মধ্যে হতাশায় বসে পড়েছে। কারও কারও চোখে জল।

হতাশ হওয়া স্বাভাবিক। কারণ হারলেও যে লড়াইটা বেঙ্গালুরু শেষ পর্যন্ত করল তাতে এটা হতেই পারে। বলতে পারি, বেঙ্গালুরু হারলেও অন্তত আমাকে গর্বিত করেছে। বিদেশি দলের বিরুদ্ধে ষাট-সত্তর-আশির সেই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের লড়াকু ফুটবলটা যেন আবার দেখলাম। ইদানীং যা দেখতে পাই না।

কোনও ম্যাচ কোনও টিম হারলে তারা খারাপ খেলেছে, এটা সবসময় হয় না। সামান্য একটা গোলকিপারের ভুল বা রক্ষণের মধ্যে সংগঠনের অভাবে হঠাৎ-ই গোল খেয়ে হেরে যেতেই পারে কোনও ভাল খেলা টিম। যেমন হল শনিবার রাতে দোহায়। এএফসি কাপের ফাইনালে। তীব্র লড়াই করে, গোলের অনেকগুলো সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও অ্যালবার্ট রোকার দল হেরে গেল। রক্ষণ সংগঠনের দোষে। বিরতি পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য। তার পরও সমান তালে লড়ে যাচ্ছিল জনসনরা। কিন্তু মাত্র একটা ভুল, তাদের ইতিহাস ছুঁতে দিল না। থামিয়ে দিল শেষ ম্যাচে। আমজাদ রাধি বলটা নিয়ে বেঙ্গালুরুর চার ফুটবলারের পাশ দিয়ে ড্রিবল করে বেরিয়ে গেল। কেউ ফলো করে আটকাল না? অবাক হয়ে দেখলাম সবাই এক সঙ্গে ছিটকে গেল। আমজাদ অনায়াসেই বলটা বাড়াল হামাদিকে। গোলটাও হয়ে গেল।

ইরাকের বিরুদ্ধে এশিয়ান গেমসে খেলেছি। ওদের দেশের নামী ক্লাবের বিরুদ্ধে স্ট্যাফোর্ড কাপে খেলেছি। কিন্তু সেই দলগুলোর সঙ্গে এই এয়ারফোর্স টিমটার কোনও তুলনা হয় না। আমাদের সময়ের ইরাক থেকে আসা কোনও টিমই এদের চেয়ে দুর্বল ছিল না। হতে পারে দেশের অভ্যন্তরীণ ঝামেলার ঝাপটা ফুটবলেও লেগেছে ওদের দেশে। শুনলাম যে ছেলেটা গোল করে গেল বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে, সেই হামাদি না কি এখন ইরাকের এক নম্বর স্ট্রাইকার। টুনার্মেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা। যে ছেলেটা গোলের বল বাড়াল সেই আমজাদ রাধি ওদের লিগে দু’বার গোল্ডেন বুট পেয়েছে। টিমে পাঁচ-ছয় জন জাতীয় টিমের ফুটবলার আছে। কিন্তু ইরাকের পেশাদার টিমটা তা সত্ত্বেও আমার দারুণ লাগল না। বেঙ্গালুরু শেষ দিকে যেভাবে চেপে ধরেছিল তাতে গোল পেতেই পারত। কিন্তু কাজের কাজটাই করতে পারল না সুনীলরা। বেঙ্গালুরুর যেটা আমার ভাল লেগেছে তা হল, ওদের হার না মানা মনোভাব। প্রতিটি বলের জন্য ঝাঁপানো।

এয়ার ফোর্স কোচ বাসিম কাসেম জেতার জন্য দল সাজিয়েছিলেন ৪-৩-৩ ফর্মেশনে। সেখানে বেঙ্গালুরু একজন স্ট্রাইকার রেখে খেলল। দু’প্রান্ত দিয়ে উইং প্লে করার চেষ্টা করছিল লিংডোরা। বুঝতে পারছিলাম ঘর গুছিয়ে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার ভাবনা থেকেই এটা করেছিলেন বেঙ্গালুরু কোচ। স্ট্র্যাটেজিতে ভুল ছিল বলব না। বিপক্ষের শক্তি মেপেই তো তৈরি করতে হবে স্ট্র্যাটেজি। রোকা সেটাই করেছেন। বেঙ্গালুরুর গোলে অমরিন্দর ছিল না। কিন্তু ওর জায়গায় নেমে রালতে বেশ ভাল খেলল। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অনেকগুলো গোল বাঁচাল। বেশ সাহসী মনে হল ওকে। শেষ দিকে অল আউট যাওয়ার জন্য টিমে কিছু বদল আনলেন স্প্যানিশ কোচ। তাতে গোলের সুযোগ তৈরি হল, কিন্তু গোল হল না।

এএফসি-র ক্লাব পর্যায়ে এটা দ্বিতীয় ধাপ। একটা জায়গায় গিয়ে ডেম্পো এবং ইস্টবেঙ্গল থেমে গিয়েছিল। সেই হার্ডলটা পেরিয়ে সুনীলরা আরও একটু এগিয়ে রানার্স হল। এটা ভারতীয় ক্লাব ফুটবলের দিক থেকে ভাল। অন্তত বহুদিন পর একটা আলোড়ন তো উঠেছিল দেশজুড়ে। খেলার আগে গত দু’দিন ধরে কত টুইট-শুভেচ্ছা আসছিল সমাজের বিভিন্ন স্তরের তারকাদের কাছ থেকে। এটাই তো বড় ব্যাপার।

sunil chetri Indian football team AFC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy