Advertisement
১১ মে ২০২৪

ঈশানের সাফল্যে কৃতিত্ব রোহিতেরও

ধোনিকে বাদ দিলে ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট বলতে আমরা এত দিন বুঝে এসেছি বরুণ অ্যারন, সৌরভ তিওয়ারি আর কিছুটা ঈশাঙ্ক জাগ্গিকে। বুধবার আরও এক জনকে পাওয়া গেল। তবে ইডেনে চার নম্বরে ঈশানকে নামতে দেখে অবাকই হয়েছিলাম।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০৫:৩৪
Share: Save:

চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচের পরে একটা ঘটনার ছবি নানা জায়গায় দেখেছিলাম। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে কথা বলছেন ঈশান কিসান। আমি জানি না, সে দিন ধোনি কী পরামর্শ দিয়েছিলেন ঈশানকে। যা-ই বলে থাকুন না কেন, ঈশান নিঃসন্দেহে তাতে উপকৃতই হয়েছেন। না হলে এমন ব্যাটিং!

ধোনিকে বাদ দিলে ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট বলতে আমরা এত দিন বুঝে এসেছি বরুণ অ্যারন, সৌরভ তিওয়ারি আর কিছুটা ঈশাঙ্ক জাগ্গিকে। বুধবার আরও এক জনকে পাওয়া গেল। তবে ইডেনে চার নম্বরে ঈশানকে নামতে দেখে অবাকই হয়েছিলাম। জানি, এ বারের আইপিএলে মুম্বইয়ের হয়ে তিন নম্বরে নেমে ঈশান বেশ কয়েকটা ভাল ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু তা বলে এমন একটা চাপের ম্যাচে, ওই অবস্থায়? যখন মুম্বইয়ের রান রেট আটেরও কম! ঈশান ঠিক সেই মনোভাব নিয়ে ব্যাট করে গেলেন, যেটা মুম্বইয়ের এখন মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয় মারো, নয় মরো।

ইডেন বলতে আমরা এত দিন রোহিত শর্মার ‘ঘর’ বলে জেনে এসেছি। বুধ-সন্ধ্যায় সেই ইডেনে ব্যাটসম্যান রোহিত (৩১ বলে ৩৬) খুব একটা সাবলীল ছিলেন না, কিন্তু অধিনায়ক রোহিত একশোয় একশো পেয়ে গেলেন।

ঈশানকে চার নম্বরে নামানোর কারণ ছিল একটাই। রান রেট বাড়ানো। সেটা দুরন্ত ভাবে করে গেলেন ঈশান (২১ বলে ৬২, পাঁচটা চার, ছ’টা ছয়)। উল্টো দিকে রোহিত থাকায় ঈশানের খুব সুবিধেও হয়ে যায়। আমি নিশ্চিত, রোহিত ওঁকে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার পরামর্শই দিয়েছেন। সিঙ্গল নিয়ে ঈশানকে স্ট্রাইক দিয়ে গিয়েছেন ক্রমাগত। আর ঝাড়খণ্ডের তরুণ একের পর এক বড় শট মেরে গিয়েছেন। অধিনায়ক উল্টো দিক থেকে সমর্থন দিয়ে গেলে এক জন তরুণ তো প্রেরণা পাবেই। ঈশান হাফসেঞ্চুরি করার পরে টিভি-তে রোহিতের মুখে যে হাসিটা দেখলাম, তা রণনীতি খেটে যাওয়ারই ইঙ্গিত। ঈশানের সাফল্যের পিছনে রোহিতেরও কৃতিত্ব আছে।

ঈশান কেমন ব্যাট করলেন? টেকনিক্যালি খুব ভাল, এমনটা বলব না। ঈশান বেশিরভাগ শট খেলেছেন মিডউইকেটের ওপর দিয়ে। অর্থাৎ একটু আড়া শট— যাকে বলে হিটিং অ্যাক্রস দ্য লাইন। তবে স্পিনারদের বিরুদ্ধে দারুণ সব শট খেললেন। কুলদীপ যাদবের যে ওভারে পরপর চারটে ছয় মারলেন ঈশান, তার মধ্যে একটা তো সেমি-হেলিকপ্টারে এল! এটা অবশ্যই ঝাড়খণ্ড ক্রিকেটের প্রভাব। যে রাজ্য থেকে ধোনির মতো ক্রিকেটার উঠে এসেছেন, সেখানকার ছেলেরা এক-আধটা হেলিকপ্টার শট মারবেন না, তা কি হয়!

এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কেকেআর আমাকে পুরোপুরি হতাশ করল। এ যেন টেস্টে একেবারে ফলো অন করে হারার মতো ব্যাপার। কেকেআরের ব্যাটিং পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করল মুম্বইয়ের বোলিংয়ের সামনে। বিশেষ করে হার্দিক পাণ্ড্যকে খুব ভাল লাগল। ‘ছোট বল’ মানে শর্ট লেংথে বল রাখল না। ফলে ওকে কাট বা পুল প্রায় মারাই যায়নি।

এই ম্যাচে দীনেশ কার্তিকের অধিনায়কত্বে কিন্তু আমি হতাশ। শেষ ওভারে কেন পীযূষ চাওলা? ওই ওভারে ২২ রান তুলে নিল মুম্বই।

এই ম্যাচটা প্লে-অফে ওঠার রাস্তায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যে ম্যাচ হেরে নিজেদের কাজটা আরও কঠিন করে ফেলল কেকেআর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 2018 IPL 11
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE