Advertisement
E-Paper

দুরন্ত ওয়ার্নার, তবু মনে থাকবে এই সেঞ্চুরি

আইপিএলে এর আগেও শতরান করেছে। কিন্তু সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার ৫৫ বলে ওর ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস সঞ্জু সাজিয়েছিল ১০টা চার ও চারটে ছয় দিয়ে।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৫:৩০
 প্রতিভা: এ বারের আইপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি সঞ্জু স্যামসনের। ৫৫ বলে অপরাজিত ১০২। পিটিআই

প্রতিভা: এ বারের আইপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি সঞ্জু স্যামসনের। ৫৫ বলে অপরাজিত ১০২। পিটিআই

শুক্রবার আইপিএলের ম্যাচ দেখতে দেখতে মনে হল, বিশ্বকাপের ভারতীয় দলে চার নম্বর ব্যাটসম্যানের দৌড়ে এই ছেলেটার নাম কী করে ভুলতে পারবেন নির্বাচকেরা?

ছেলেটার নাম সঞ্জু স্যামসন। আইপিএলে এর আগেও শতরান করেছে। কিন্তু সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার ৫৫ বলে ওর ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস সঞ্জু সাজিয়েছিল ১০টা চার ও চারটে ছয় দিয়ে। এ বার আইপিএলে ঋষভ পন্থকে নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। কিন্তু আমার মতে, সঞ্জু স্যামসনও এই প্রতিযোগিতার আকর্ষণীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কোনও অংশে কম নয়। সঞ্জুর ব্যাটিংয়ে বরং ঋষভের চেয়ে অনেক বেশি ভারসাম্য দেখতে পাচ্ছি। ঋষভ আউট হওয়ার সুযোগ বেশি দেয়। সঞ্জুকে তুলনায় অনেক বেশি পোক্ত দেখায়। বল বুঝে ব্যাকরণসম্মত ব্যাটিং করে। আগ্রাসী হলেও ঝুঁকি নেয় কম।

হায়দরাবাদের উপ্পল স্টেডিয়ামের পিচে গতির হেরফের হতে দেখলাম। শুরুতে বল ভাল করে ব্যাটে আসছিল না। তাই পাওয়ার প্লে-তে বেশি রান ওঠেনি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই রশিদ খানের বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরে গিয়েছিল জস বাটলার (৫)। পরের দিকে, যত সময় গিয়েছে, পিচ ভাল হতে শুরু করেছে। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সঞ্জু। একদম ঠান্ডা মাথায় ব্যাট করে গেল। কোনও তাড়াহুড়ো করেনি ছেলেটা। নিজে তো শতরান করলই, সঙ্গে শেষ পাঁচ ওভারে অজিঙ্ক রাহানে (৭০) ও বেন স্টোকসকে (১৬) নিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করল ৭৬ রান। যার ফলে রাজস্থানের রান নির্ধারিত ২০ ওভারে পৌঁছে যায় ১৯৮ রানে।

কে ভেবেছিল, সেই রানটাও অবলীলায় তুলে দেবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ডেভিড ওয়ার্নার (৬৯) ও জনি বেয়ারস্টো (৪৫) শুরুটা দারুণ করে দিয়েছিল। বিশেষ করে ওয়ার্নারকে দেখে মনে হচ্ছে, নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করতে মরিয়া। মাঝখানে বিজয় শঙ্কর (১৫ বলে ৩৫ রান), কেন উইলিয়ামসন (১৪) এবং মণীশ পাণ্ডে (১) দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ার পরে সঞ্জুর রাজস্থানই ম্যাচটা জিতবে বলে মনে হচ্ছিল। ওয়ার্নারের ঝড়ই কিন্তু ম্যাচটা ফিফটি-ফিফটি করে দিয়ে যায়। শেষ দিকে জিততে গেলে হায়দরাবাদকে ১২ বলে ১২ রান করতে হত। এক ওভার বাকি থাকতেই জিতে যায় হায়দরাবাদ। রশিদ খান ৮ বলে ১৫ রান করে পাঁচ উইকেটে ম্যাচ জিতিয়ে দেয়। ১৯তম ওভারে জোফ্রা আর্চারকে একটি চার ও ছয় মারে রশিদ। তবে ম্যাচ হারলেও সঞ্জুর ইনিংস ভোলা যাবে না। অম্বাতি রায়ডু, বিজয় শঙ্কর, ঋষভ পন্থ-সহ অনেকের নামই উঠে আসছে বিশ্বকাপের চার নম্বর হিসেবে। কেউ কেউ যুবরাজ সিংহের নামও তুলে আনছে। নিজে জাতীয় নির্বাচক ছিলাম। বলে দিতে পারি, নির্বাচকেরা কিন্তু সঞ্জুর দিকেও নজর রাখবেন। শুক্রবারের পর দাবিদার সঞ্জুও।

কেরলের এই ব্যাটসম্যান সামনের ও পিছনের পায়ে সমান সাবলীল। কভারের উপর বা মিড উইকেটের উপর দিয়ে অনায়াসে বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সেই ব্যাটিংটাও ধ্রুপদী। এ দিন ভুবনেশ্বর কুমারকে ১৮তম ওভারে মেরে ২৪ রান তুলল। যেখানে ভুবনেশ্বর ওর অস্ত্র ইয়র্কার বা স্লোয়ার দিয়েও আটকাতে পারেনি সঞ্জুকে। শাহবাজ নাদিমকে একটা স্কুপ ছাড়া অক্রিকেটীয় শট খেলতে দেখলাম না ওকে। ছেলেটার খেলার বড় গুণ হল, ওর শটগুলোতে জোরের চেয়েও সময়জ্ঞান প্রাধান্য পায়। ওর বয়সও মাত্র চব্বিশ। পেসারদের খেলে সাহসের সঙ্গে। প্রয়োজনে কিপিংও করতে পারে। ফিল্ডিংও ভাল। দুর্দান্ত প্যাকেজ। সেই কারণেই বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে সম্ভাব্য চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে সঞ্জুকে রাখছি।

Cricket IPL 2019 Sanju Samson David Warner
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy