বিরাট কোহলি যে লড়াই উইম্বলডন ফাইনালে দেখতে চেয়েছিলেন, তা হচ্ছে না। এক দিক থেকে কার্লোস আলকারাজ় ফাইনালে উঠেছেন ঠিকই। তবে উল্টো দিকে নোভাক জোকোভিচ পারলেন না। সেমিফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর ইয়ানিক সিনারের কাছে ৩-৬, ৩-৬, ৪-৬ হারলেন তিনি। অর্থাৎ, ফরাসি ওপেন ফাইনালের মতোই উইম্বলডন ফাইনালেও আলকারাজ় বনাম সিনার লড়াই দেখা যাবে। ফরাসি ওপেনে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট বাঁচিয়ে জিতেছিলেন আলকারাজ়। এ বার কি প্রতিশোধ নেবেন সিনার? না কি টানা তিন বার উইম্বলডন জিতবেন আলকারাজ়? উত্তর পাওয়া যাবে রবিবার।
সিনার এবং আলকারাজ়, দুই খেলোয়াড়ই নেমেছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালে চোট পেয়ে। সিনার দু’সেটে পিছিয়েও ছিলেন। উল্টো দিকে থাকা গ্রিগর দিমিত্রভ চোট পেয়ে ম্যাচ ছেড়ে না দিলে আদৌ জোকোভিচের বিরুদ্ধে খেলতে নামতে পারতেন কি না সন্দেহ আছে। তবে সেমিফাইনালে চোটের চিহ্নমাত্র দেখা গেল না। অন্য দিকে, জোকোভিচকে গোটা ম্যাচেই ছন্দে পাওয়া যায়নি। কোর্টে নড়াচড়া, শট নির্বাচন, সার্ভিস— সব দিক থেকেই সিনারের থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিলেন তিনি।
জোকোভিচের বিরুদ্ধে আগের চারটি সাক্ষাতেই জিতেছিলেন সিনার। এ দিন জোকোভিচ সার্ভিস করে খেলা শুরু করেন। সহজেই নিজের সার্ভিস ধরে রাখেন তিনি। সিনারও সার্ভিস ধরে রাখেন। তবে তৃতীয় গেমেই জোকোভিচকে ব্রেক করে দেন সিনার। টানা চারটি পয়েন্ট জিতে সিনার সেই গেম জিতে নেন। পরের সার্ভিস হোল্ড করে তিনি এগিয়ে যান ৩-১ গেমে। সেমিফাইনালে এর থেকে ভাল শুরু আর হত না। সিনার সেটাকেই গোটা ম্যাচে ধরে রাখেন।
আগের দিন ফ্ল্যাভিয়ো কোবোল্লিকে হারানোর ম্যাচে শেষ দিকে কোর্টে পিছলে পড়ে যান জোকোভিচ। এ দিনও প্রথম সেটেই তাঁকে পিছলে পড়তে দেখা যায়। অষ্টম গেমে সিনারের কাছে ০-৩০ পিছিয়ে থাকার সময় একটি রিটার্ন করতে গিয়ে পড়ে যান জোকোভিচ। পরের রিটার্নটি করতেই পারেননি।
জোকোভিচকে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল তিনি ছন্দে নেই। যে ভাবে রিটার্ন করছিলেন, যে ভাবে শট মারার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছিলেন তাতে সিনারের কাজ আরও সহজ হয়ে যাচ্ছিল। নবম গেমে জোকোভিচের সার্ভে সিনার এক সময় ৪০-১৫ এগিয়ে গিয়েও দু’টি সেট পয়েন্ট নষ্ট করেন। জোকোভিচ পাল্টা লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করলে তিন বার ‘ডিউস’ হয়। কিন্তু সেট ধরে রাখতে পারেননি জোকোভিচ। আধ ঘণ্টায় তাঁকে প্রথম সেট হারাতে হয়।
মনে করা হয়েছিল দ্বিতীয় সেটে ঘুরে দাঁড়াবেন। সেই আশাও মিটে যায় শুরুতেই। দ্বিতীয় গেমেই জোকোভিচকে ব্রেক করেন সিনার। কোর্টজুড়ে শাসন করতে থাকেন ইটালির খেলোয়াড়। সাত বারের উইম্বলডন জয়ী জোকোভিচকে তখন নেহাতই এক শিক্ষার্থী মনে হচ্ছিল। বোঝা যাচ্ছিল, তাঁর চোট পুরোপুরি সারেনি। উল্টো দিকে থাকা সিনার অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় সেটে ৩-১ এগিয়ে যান সিনার। চতুর্থ গেমে সার্ভ ধরে রাখেন জোকোভিচ। সার্বিয়ার খেলোয়াড়কে চাঙ্গা করার জন্য স্টেডিয়াম জুড়ে ‘নোভাক, নোভাক’ চিৎকার শুরু হয়। প্রত্যেকেই দেখতে চাইছিলেন জোকোভিচের প্রত্যাবর্তন। অষ্টম গেমে আবার সার্ভিস খোয়ানোর মুখে এসে দাঁড়ান জোকোভিচ। এ বারও একের পর এক ডিউস ধরে রাখেন। তবে এ বার সার্ভিস ধরে রাখেন জোকোভিচ। কিন্তু সেট ধরে রাখতে পারেননি। পরের গেমেই নিজের সার্ভিস ধরে রেখে ২-০ এগিয়ে যান বিশ্বের এক নম্বর সিনার।
দ্বিতীয় সেটের শুরুতে জোকোভিচ সার্ভিস ধরে রাখেন। দ্বিতীয় গেমে ব্রেক করে দেন সিনারকে। চলতি প্রতিযোগিতায় প্রথম বার কেউ সিনারকে ব্রেক করেন। পরের সার্ভ ধরে রেখে জোকোভিচ এক সময় ৩-০ এগিয়ে যান। সেখান থেকে আবার ছন্দে ফিরতে থাকেন সিনার। চতুর্থ গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রাখার পর পঞ্চম গেমে জোকোভিচকে ব্রেক করেন। ষষ্ঠ গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রাখার পর সপ্তম গেমে আবার ব্রেক করেন জোকোভিচকে।