আত্মবিশ্বাসী রুট। ছবি: রয়টার্স।
বেন স্টোকসকে নিয়ে গোটা ইংল্যান্ডের ক্রিকেট মহলে চর্চা চলার মধ্যেই এক কাণ্ড বাঁধিয়ে বসলেন তাঁর বদলি। রাস্তায় মারামারির ঘটনায় স্টোকসের মামলার শুনানি থাকায় তিনি লর্ডসে খেলতে পারবেন না। তাঁর জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে গত বছর কেকেআরে খেলে যাওয়া ক্রিস ওক্সকে। জোরে বল করতে পারেন, সুইংয়ের সঙ্গে বাউন্সও আছে তাঁর হাতে। নীচের দিকে ব্যাটও করেন মোটামুটি। কিন্তু বুধবার অনুশীলনে এমনই এক মারণ বল করে ফেলেন ওক্স যে, তাঁর অধিনায়কই বড়সড় চোট পেয়ে গিয়েছিলেন।
নেটে ব্যাটিংয়ের সময় ওকসের একটি বল প্রায় গুডলেংথ থেকে লাফিয়ে লাগে রুটের বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বসে পড়েন তিনি। ইংল্যান্ডের প্র্যাক্টিসেও তখন স্তব্ধতা। সকলে উদ্বেগ নিয়ে তাকিয়ে। ওক্স এসে অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করতে থাকলেন, খুব যন্ত্রণা হচ্ছে নাকি। রুট বেশ কিছুটা সময় নিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। আবার ব্যাটও করলেন। কিন্তু তিন-চারটে বল খেলে বেরিয়ে গেলেন নেট থেকে। দীর্ঘক্ষণ এর পর তাঁকে নিয়ে পড়ে থাকলেন ইংল্যান্ডের ফিজিয়ো এবং মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা। পরে ব্যাট করতে এলেও তখনও স্বচ্ছন্দ লাগছিল না। সাংবাদিক বৈঠকে এসে অবশ্য রুট জানালেন, তিনি ঠিকই আছেন এবং এজবাস্টনে জেতার পরে লর্ডসে ভাল কিছু করার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
ইংল্যান্ডের অনুশীলনে অবশ্য আরও চমক ছিল। দু’জন চায়নাম্যান বোলারকে নিয়ে এসেছিলেন রুটরা। বাঁ হাতি রিস্ট স্পিনার অবশ্যই কুলদীপ যাদবের কথা মাথায় রেখে। লর্ডসের পিচ শুকনো থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে কোহালিরা তাঁদের উপরে কুলদীপ-অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারেন বলেই মনে করছে ইংল্যান্ড শিবির। ইংল্যান্ডেও ওক্সের জায়গায় মইন আলিকে খেলানোর ভাবনা আছে।
যে দু’জনকে আনা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ইংল্যান্ডে ক্লাব ক্রিকেট খেলছেন। তবে কুলদীপ যে রকম বাঁ হাতে দু’দিকেই বল ঘোরাতে পারেন, ততটা ওস্তাদি তাঁদের হাতে নেই। দুই বাঁ হাতি চায়নাম্যান স্পিনার ছাড়াও লেগস্পিনার এবং অফস্পিনারও ছিল ইংল্যান্ডের নেটে। অফস্পিনারকে সব চেয়ে বেশি করে খেলতে দেখা গেল অ্যালেস্টেয়ার কুককে। এজবাস্টনে দু’বারই তাঁকে বোকা বানিয়ে আউট করেছেন অশ্বিন। বরাবরই অশ্বিনের বিরুদ্ধে খুব দুর্বল রেকর্ড কুকের।
চমক নম্বর তিনের নাম অর্জুন তেন্ডুলকর। সকালে ইংল্যান্ডের নেটে সচিন-পুত্রের গতি দেখে বেশ চমকেই উঠতে হল। এক টানা বল করে গেলেন। ইংল্যান্ডের বোলিং কোচ এবং অন্যান্য সহকারী কোচও দেখা গেল তাঁকে উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার পরে বিরতি নিয়ে অর্জুন ফিরে এলেন। কোহালিদের বল করবেন বলে। শোনা যায়, সচিনই পুত্রকে বুঝিয়েছেন, যত পারো আন্তর্জাতিক ব্যাটসম্যানদের বল করো। লেগে থাকো, ঠিক হবে।
সচিন নিজের ক্রিকেটজীবনেও যে সেই মন্ত্রেই বিশ্বাসী ছিলেন। বিস্ময় বালক হয়েও শুধু প্রতিভার উপর ভরসা না রেখে পরিশ্রম করে গিয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে, অধ্যবসায়ের পাঠটা প্রথম ছেলেকে দিতে চাইছেন তিনি। আগে তাগিদটা দেখাও, ক্রিকেট তার পর হবে।
লর্ডসে কোহালির সতীর্থদের জন্যও তো সেটাই মন্ত্র!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy