Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বিশ্বকাপের জার্সি নম্বরেই ইস্টবেঙ্গলে খেলবেন জনি

রাশিয়া বিশ্বকাপে কোস্টা রিকার হয়ে গ্রুপ লিগের তিনটি ম্যাচ জনি আকোস্তা খেলেছিলেন ২ নম্বর জার্সি পরে। সেই দু’নম্বর জার্সিতেই তাই তাঁকে ইস্টবেঙ্গলে খেলতে দেখা যাবে।

আগমন: ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি জনি আকোস্তা। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

আগমন: ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি জনি আকোস্তা। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে প্রথম ক্লাব হিসেবে চলতি বিশ্বকাপের এক জন ফুটবলারকে আত্মপ্রকাশ করানোর জন্য সাংবাদিকদের ডেকেছিল ইস্টবেঙ্গল। গৌরবের সেই দিনেও লজ্জায় পড়তে হল শতবর্ষ ছুঁতে চাওয়া ক্লাবকে। চূড়ান্ত অপেশাদারিত্বের জন্য ভেস্তে গেল বুধবার বিকেলের সাংবাদিক সম্মেলন। ইংরেজি না জানা বিশ্বকাপার জনি আকোস্তা জামোরো শুধু স্প্যানিশ জানেন, সেটা জানা সত্ত্বেও কোনও দোভাষীর ব্যবস্থা করেননি লাল-হলুদ কর্তারা। তাতেই বিপত্তি।

অপেশাদারিত্বের এখানেই শেষ নয়। ক্লাবের পক্ষ থেকে যে জার্সি এ দিন বিকেলে তুলে দেওয়া হল নতুন আসা ডিফেন্ডারের হাতে, তার সঙ্গে মিল নেই সাংবাদিকদের কাছে বিলি করা জীবনপঞ্জির ছবির সঙ্গে। জীবনপঞ্জিতে ছাপানো ছবির জার্সিতে দেখা যাচ্ছে অন্য রকম লোগো। শুধু তা-ই নয়, জনির হাতে যে ট্যাটু এখন আঁকা আছে, তা-ও দেখা যাচ্ছে না ছবিতে। ক্লাবের পক্ষ থেকে এ দিন অবশ্য জনির হাতে তুলে দেওয়া হল ২ নম্বর জার্সি। নতুন কোম্পানির লোগো দেওয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপে কোস্টা রিকার হয়ে গ্রুপ লিগের তিনটি ম্যাচ জনি খেলেছিলেন ২ নম্বর জার্সি পরে। সেই দু’নম্বর জার্সিতেই তাই তাঁকে খেলতে দেখা যাবে। কিন্তু এ দিন ক্লাবে এসে সব দেখেশুনে বছর পঁয়ত্রিশের ডিফেন্ডার অবাক, বিরক্ত, বিস্মিতও। তাঁর মুখ দেখে মনে হচ্ছিল, মাসখানেক আগে ব্রাজিলের নেমার দা স্যান্টোস সিলভা (জুনিয়র)-এর সামনে পড়েও এ রকম বিব্রত হননি।

সামনের মরসুমেই ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। সে জন্য ঐতিহাসিক চুক্তি করেই শতবর্ষ ছুঁতে যাওয়া ক্লাব কোম্পানি তৈরি করেছে। কর্পোরেট কোম্পানির মতো নানা পদও তৈরি হয়েছে। কিন্তু তাতে ময়দান-সংস্কৃতির বদল যে ঘটেনি, তা পরিষ্কার।

সোমবারই শহরে এসেছেন কোস্টা রিকার হয়ে ব্রাজিল ও রাশিয়ার দু’টি বিশ্বকাপে খেলা জনি। কনফা কাপ, কোপা আমেরিকা কাপে খেলা ঝলমলে ডিফেন্ডারটির জন্যই বুধবার সরকারি ভাবে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিল ইস্টবেঙ্গল। জার্সি তুলে দেওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শুরু হতেই জানা যায়, দোভাষী সঙ্গে নিয়ে আসেননি কর্তারা।

শেষ পর্যন্ত বিব্রত কর্তারা মোবাইলে ভাষা বদলের যে ব্যবস্থা আছে, তার আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই ব্যবস্থার সাহায্যে গোটা তিনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন জনি। যার নির্যাস এ রকম এক) ইস্টবেঙ্গল ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব। সে জন্যই কলম্বিয়ার ক্লাব ছেড়ে এখানে খেলতে এসেছেন। দুই) ভারতে মুম্বই সিটি এফ সিতে কোচিং করা আলেকজান্দ্রে গুইমারেস, কলকাতার ইউনাইটেড স্পোর্টসে খেলে যাওয়া প্রাক্তন বিশ্বকাপার কোস্টা রিকার কার্লোস হার্নান্ডেজের কাছ থেকে ভারত সম্পর্কে জেনেছেন। তিন) সোমবারের ইস্টবেঙ্গল-পুলিশ ম্যাচ উত্তেজক ছিল। তার চেয়েও ভাল লেগেছে লাল-হলুদ সদস্য সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। কিন্তু রাশিয়ার অসাধারণ স্টেডিয়ামে খেলে আসার পরে ইস্টবেঙ্গল মাঠের কাদায় খেলতে কেমন লাগবে? এই প্রশ্ন করার পরেই মোবাইলের ভাষা বদলের পদ্ধতি বিকল হয়ে যায়। ভেস্তে যায় সম্মেলন। ক্লাব কর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, পরে দোভাষী এনে ফের সাংবাদিক সম্মেলন হবে।

শহরে এসে পড়লেও জনি অবশ্য এখনও অনুশীলনে নামেননি। তাঁকে আজ, বৃহস্পতিবারও মাঠে নামতে বারণ করেছেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক। বললেন, ‘‘এত দূর থেকে এসেছে। বাহাত্তর ঘণ্টা সময় তো দিতেই হবে। বিজ্ঞানকে তো আর অস্বীকার করতে পারব না। ও আজ মাঠে না আসলেও সমস্যা নেই।’’ ফলে শুক্রবার কলকাতা লিগে জনিকে খেলতে দেখা যাবে না। সুভাষ বললেন, ‘‘অনুশীলনে নামুক। তার পর বলব কবে থেকে খেলাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Johnny Acosta East Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE