Advertisement
১১ মে ২০২৪
জেমসকে খেলাতে বারণ করে দিল আইএফএ

ম্যাচ খেলাতে রাজি হচ্ছেন না কণিকা

এনডুরেন্স জেমসের খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল আইএফএ। গত মঙ্গলবার মোহনবাগান-বিএনআর ম্যাচে মহিলা রেফারি কণিকা বর্মনের প্রতি অশালীন আচরণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন জেমস। তাঁর দল বিএনআরের লিগে এখনও একটা ম্যাচ বাকি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪০
Share: Save:

এনডুরেন্স জেমসের খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল আইএফএ।

গত মঙ্গলবার মোহনবাগান-বিএনআর ম্যাচে মহিলা রেফারি কণিকা বর্মনের প্রতি অশালীন আচরণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন জেমস। তাঁর দল বিএনআরের লিগে এখনও একটা ম্যাচ বাকি। সেটা রবিবার পুলিশের বিরুদ্ধে। লিগ শেষ হয়ে গেলে তিনি যাতে অন্য কোথাও চলে যেতে না পারেন, সে জন্যও বলা হয়েছে রেল কর্তাদের। আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন বললেন, “যতক্ষণ না জেমসকে নিয়ে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ততক্ষণ ওকে মাঠে না নামানোর জন্য বিএনআরকে চিঠি দিয়েছি। বলেছি, কমিটির সভায় ডাকলে যাতে ওকে পাওয়া যায় সেটা নিশ্চিত করতে।” আইএফএ সূত্রের খবর, ২০ সেপ্টেম্বর শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সভায় ডাকা হতে পারে নাইজিরিয়ান ফুটবলারকে।

রেলকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি রেফারি সংস্থাকেও চিঠি দিয়েছে আইএফএ। আনন্দবাজারে প্রকাশিত ছবির সঙ্গে যে চিঠি সিআরএ-তে এ দিন পাঠানো হয়েছে তাতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কেন রেফারি এবং ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্টে জেমসের ঘটনা নেই? কেন ম্যাচ কমিশনার চিত্তরঞ্জন দাশ মজুমদার তাঁর রিপোর্টে এটা লেখেননি, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। উৎপলবাবু বলেন, “রেফারি এবং ম্যাচ কমিশনার যা বলবেন তা কমিটির সভায় পেশ করা হবে। জেমসকেও ডাকা হতে পারে।” যা শুনে সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্য বলছেন, “আনন্দবাজারে ওই বিদেশি ফুটবলারের কুৎসিত ইঙ্গিত দেখে শিউরে উঠেছি। এটা শুধু অন্যায় নয়, অপরাধও। আইএফএ ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।” তবে সুব্রত ভট্টাচার্য আরও চাঁছাছোলা ভাষায় বললেন, “আইএফএ-র অধিকাংশ সিদ্ধান্তই সঠিক নয়। জেমসকে এই মরসুমটাই নির্বাসনে পাঠানো উচিত।”

কেন অরাজি

এক) এক প্রাক্তন ফিফা রেফারির পরামর্শে জেমসের ঘটনাটি রিপোর্টে না লেখায়
এবং পরে তা নিয়ে হইচই হওয়ায় কণিকা অস্বস্তিতে।

দুই) এটা নিয়ে বেশি হইচই হলে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা মেয়েটির সামাজিক সমস্যা হতে পারে।

প্রাক্তন ও বর্তমান ফুটবলার, মহিলা ক্রীড়াবিদ, মহিলা কমিশন-সহ একাধিক মানবাধিকার সংগঠন তাঁর পাশে দাঁড়ালেও কণিকা নিজে কিন্তু এই ব্যাপার নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। বরং সদ্য বিবাহিতা এবং মাঠে বাঁশি মুখে সাহসিনী মাঠের বাইরে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাইছেন। এ দিন তাঁকে দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচে রেফারিং করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কণিকা রাজি হননি। রেফারি সংস্থার সচিব উদয়ন হালদার বললেন, “ও বলছে অফিসে বা বিভিন্ন জায়গায় নানা প্রশ্নের সামনে পড়ছে। সে জন্য আর রেফারিং করাবে না।” কণিকা এ দিন ফোন ধরেননি। রাতে তাঁর স্বামী দীপক দাস অবশ্য দাঁড়িয়েছেন স্ত্রী-র পাশেই। যোগাযোগ করা হলে বললেন, “আমার স্ত্রী মাঠ ছাড়বে না। রেফারিংও করাবে।”

প্রশ্ন উঠেছে, যাঁর জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সরব হয়েছেন তিনি এমন করছেন কেন? ময়দানে দু’রকম কথা শোনা যাচ্ছে। এক) এক প্রাক্তন ফিফা রেফারির পরামর্শে জেমসের ঘটনাটি রিপোর্টে না লেখায় এবং পরে তা নিয়ে হইচই হওয়ায় কণিকা অস্বস্তিতে। দুই) এটা নিয়ে বেশি হইচই হলে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা মেয়েটির সামাজিক সমস্যা হতে পারে। আরও একটি কথা শোনা যাচ্ছে যে, রেফারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত প্রাক্তন রেফারিরা নানা জন নানা কথা বলছেন, তা নিয়ে বিরক্ত মেয়েটি। তাঁর হয়ে সব কথা বলছেন সিআরএ সচিব। উদয়ন এ দিন বললেন, “কণিকা চিঠি দিচ্ছে এই বলে যে জেমস ওকে কোনও অশালীন কথা বলেনি। অঙ্গভঙ্গিও করেনি।” কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, আনন্দবাজারে জেমসের যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে সেটা তা হলে কী ভঙ্গি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE