Advertisement
E-Paper

নিখুঁত অ্যাকশন নিজেই বদলে নেন কেদার, ফাঁস করলেন রঞ্জি কোচ

এ সব ক্ষেত্রে দেখা যায় বোলাররা জন্মগত দক্ষতায় এ রকম ব্যতিক্রমী অ্যাকশন পেয়েছেন। যেমন লাসিথ মালিঙ্গা, যেমন যশপ্রীত বুমরা বা এক সময়কার দক্ষিণ আফ্রিকার চায়নাম্যান বোলার পল অ্যাডামস। কিন্তু কেদার এখানেও ব্যতিক্রম। তিনি আগে নিখুঁত অ্যাকশনেই অফস্পিন করতেন। যাকে বলে ক্লাসিকাল অফস্পিন অ্যাকশন। কিন্তু সেখান থেকে পরীক্ষা চালাতে চালাতে নিজের অ্যাকশনে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন।

কৌশিক দাশ

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩১
দৃপ্ত: কেদারের মানসিকতা দেখে সন্তুষ্ট কোচ ভাবে। ফাইল চিত্র

দৃপ্ত: কেদারের মানসিকতা দেখে সন্তুষ্ট কোচ ভাবে। ফাইল চিত্র

তাঁর ‘রাইট আর্ম সাইড অ্যাকশন’ বোলিং ক্রমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রহেলিকা হয়ে উঠছে। যে সব অ্যাঙ্গল থেকে বল আসছে, তা মারতে পারছেন না ব্যাটসম্যানেরা। এই মুহূর্তে কেদার যাদবের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তাঁর ওই অদ্ভুত অ্যাকশনের বোলিং বিশ্বকাপের জন্য বড় অস্ত্র হয়ে উঠছে বিরাট কোহালিদের কাছে।

এ সব ক্ষেত্রে দেখা যায় বোলাররা জন্মগত দক্ষতায় এ রকম ব্যতিক্রমী অ্যাকশন পেয়েছেন। যেমন লাসিথ মালিঙ্গা, যেমন যশপ্রীত বুমরা বা এক সময়কার দক্ষিণ আফ্রিকার চায়নাম্যান বোলার পল অ্যাডামস। কিন্তু কেদার এখানেও ব্যতিক্রম। তিনি আগে নিখুঁত অ্যাকশনেই অফস্পিন করতেন। যাকে বলে ক্লাসিকাল অফস্পিন অ্যাকশন। কিন্তু সেখান থেকে পরীক্ষা চালাতে চালাতে নিজের অ্যাকশনে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন।

কেদার সম্পর্কে এই অজানা তথ্য ফাঁস করলেন তাঁর রঞ্জি দল মহারাষ্ট্রের কোচ সুরেন্দ্র ভাবে। রবিবার পুণে থেকে ফোনে ভাবে বলছিলেন, ‘‘কেদারের দারুণ একটা অ্যাকশন ছিল। রাউন্ড আর্ম। যে রকম ক্লাসিকাল অফস্পিনারদের হয়, ঠিক সে রকম। আমার এখনও মনে আছে ক্লাব ক্রিকেট বা রাজ্য দলের কেদার রাউন্ড আর্ম অ্যাকশনেই বল করত।’’ তা হলে কী ভাবে বদলে গেল এই অ্যাকশন? ভাবের মন্তব্য, ‘‘আইপিএল এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতে ও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিল পরের দিকে। কেদার ভেবেছিল, শুধু অফস্পিন করলে ব্যাটসম্যানরা ওকে মেরে দেবে। তাই বৈচিত্র আনতে চেয়েছিল। সেই পরীক্ষার ফলেই এই পরিবর্তন।’’

ক্লাব বা রঞ্জি ট্রফিতে কেদারকে এই অ্যাকশনে বল করতে দেখেননি ভাবে। কোথায় প্রথম দেখলেন? কেদারের অন্যতম কোচ বলছেন, ‘‘আইপিএলে চেন্নাই সুপারকিংসের হয়ে প্রথম ওকে এই সাইড আর্ম অ্যাকশনে বল করতে দেখে চমকে উঠেছিলাম। ভাবিনি, পরীক্ষার ফল এতদূর গড়িয়েছে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নিশ্চয়ই সিএসকে নেটে কেদারের বোলিং দেখে কিছু একটা বুঝেছিল। তাই ওকে ম্যাচে বল করতে ডাকে।’’

অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই মনে করেন, ওই রকম নিচু হয়ে সাইড আর্ম অ্যাকশনে বল করেন বলে কেদারকে মারা কঠিন। হরভজন সিংহ যেমন বলেছিলেন, ‘‘কেদারের ওই অ্যাকশনের কারণে বলটা বাউন্স করে না। যার ফলে ব্যাটসম্যানরা বড় শট মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে গোলমাল করে ফেলে। ব্যাটের ঠিক জায়গায় বল লাগে না।’’

আর কেদার কী বলছেন নিজের বোলিং নিয়ে? হায়দরাবাদে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উঠে ম্যাচের নায়ক বলেন, ‘‘ব্যাটসম্যানদের পক্ষে আমার বলে বড় শট খেলা একটু কঠিন। কারণ, এক নম্বর, আমার বল বেশি বাউন্স করে না। আর দ্বিতীয়ত, দু’তিন রকম অ্যাঙ্গল থেকে আমি বল করতে পারি। যে ব্যাপারটাও সমস্যায় ফেলে দেয় ব্যাটসম্যানদের।’’

ব্যাট হাতে তিনি সফল। বোলিংয়েও চমকে দিচ্ছেন। তা হলে কি এক জন অলরাউন্ডার পেয়ে গেল ভারত? যিনি ধারাবাহিক ভাবে দশ ওভার করতে পারবেন প্রতি ম্যাচে? এ বার একটু দ্বিধায় পড়তে দেখা গেল কেদারকে। বলে উঠলেন, ‘‘প্রতি ম্যাচে আট-দশ ওভার বল করার ব্যাপারে আমি কিছু ভাবিনি। তবে ধারাবাহিক ভাবে প্রতি ম্যাচে ১০ ওভার বল করতে হলে আমাকে আরও ফিট হতে হবে। মানসিকতাও বদলাতে হবে। কারণ ছোট থেকে আমি কখনও নিজেকে এই ভাবে তৈরি করিনি যে, প্রতি ওয়ান ডে ম্যাচে ১০ ওভার করে দেব। তবে দলের স্বার্থে যা করার অবশ্যই করব।’’

ভাবেও একই কথা বলছিলেন। ‘‘কেদারকে কিন্তু আমরা রঞ্জি দলেও এক জন বিশেষজ্ঞ বোলার হিসেবে দেখি না। ও পার্ট টাইম বোলার। কোনও পার্টনারশিপ খুব লম্বা হতে থাকলে জুটি ভাঙার কাজে ওকে ব্যবহার করা হয়।’’

তা হলে কি কেদারের পক্ষে ধারাবাহিক ভাবে ১০ ওভার বল করা সম্ভব হবে না? ভাবের মন্তব্য, ‘‘কেদারের সব চেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট কি জানেন? ওর মানসিকতা। কতটা কঠিন মানসিকতা থাকলে এক জন শুধু নেটে প্র্যাক্টিস করে নিজের বোলিং অ্যাকশন পুরো বদলে নিতে পারে, ভাবুন! আর তার পরে সেই ব্যতিক্রমী অ্যাকশন নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল হওয়া। যে ছেলে এত সব করতে পারে, সে দশটা ওভারও করে দিতে পারবে।’’ তবে একটা সতর্কবার্তা শুনিয়ে রাখছেন ভাবে— কেদারকে কিন্তু ফিটনেসটা ঠিক রাখতে হবে, যাতে চোট না পেয়ে যায়।

Cricket Spom India Classical Off Spinner Kedar Jadhav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy