Advertisement
১১ মে ২০২৪

সঙ্গকারার ব্যাট আপাতত ক্যাপ্টেন কোহলির প্রথম টেস্ট জয়ের মোড়ে দাঁড়িয়ে

সাবেকি নিউ মার্কেটে যেমন খানদানি সব কেকের দোকান। গল বাজারে তেমনই জাঁকিয়ে সব মাছের দোকান! ক্রিকেট মাঠের ঠিক উল্টো দিকে। সামুদ্রিক সব মাছে দোকানিরা ভরপুর সাজিয়ে বসেছে। টুনা, কালামারি আর থরে থরে চিংড়ি। ইয়া বড় বড় গলদা চিংড়ি সেখানে কিলোয় মাত্র ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেখলে কলকাতার যে কোনও অনিয়মিত বাজারযাত্রীরও লোভ হবে।

শেষ হাসি কার ? গলে বিরাট-সঙ্গা। বৃহস্পতিবার।

শেষ হাসি কার ? গলে বিরাট-সঙ্গা। বৃহস্পতিবার।

গৌতম ভট্টাচার্য
গল শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৪৩
Share: Save:

সাবেকি নিউ মার্কেটে যেমন খানদানি সব কেকের দোকান। গল বাজারে তেমনই জাঁকিয়ে সব মাছের দোকান!

ক্রিকেট মাঠের ঠিক উল্টো দিকে। সামুদ্রিক সব মাছে দোকানিরা ভরপুর সাজিয়ে বসেছে। টুনা, কালামারি আর থরে থরে চিংড়ি। ইয়া বড় বড় গলদা চিংড়ি সেখানে কিলোয় মাত্র ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেখলে কলকাতার যে কোনও অনিয়মিত বাজারযাত্রীরও লোভ হবে। গলের এ পাড়ার বিশেষত্বই নাকি এই ফুটপাথের চিংড়ি আর ওই ফুটপাথে ক্রিকেট মাঠের স্পিনিং ট্র্যাক!

এটাকেই কাজে লাগিয়ে অ্যাদ্দিন শ্রীলঙ্কার গল মাস্তানি। আর সেই অস্ত্রটাই মাত্র ক’মাসের মধ্যে তাদের দিকে ফের ধাবিত। গত জুনে এ মাঠে তাদের প্রথম সংহারক এ দিন পেশোয়ার থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘ম্যাচটা কাল টিভিতে দেখা হয়নি। তবে এটুকু বলি, পিচ বানালেই তো শুধু হবে না। আপনাকে লাইনে বল করতে হবে। যথেষ্ট ঘোরাতে হবে।’’

তাঁর নাম ইয়াসির শাহ। গলে পাকিস্তানকে যাঁর নয় উইকেট একপেশে জিতিয়েছিল। রবিচন্দ্রন অশ্বিন শ্রীলঙ্কার জন্য নতুন ইয়াসির হিসেবে যেন আবির্ভূত হয়েছেন। টাটকা নতুন বলে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসের দু’ওভার খেলতে শ্রীলঙ্কা যেমন ঘাবড়ে থাকল, তাতে ম্যান অব দ্য ম্যাচ অন্য কেউ ছিনিয়ে নিলেই আশ্চর্যের ব্যাপার হবে!

দিনের খেলা শেষ হতে না হতেই ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে মিডিয়া জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়ে গেল, আপনারা কি এক্সট্রা দিনগুলো গলে থাকবেন? না আগেই কলম্বো চলে যাবেন? সুনীল গাওস্কর যেমন বলছিলেন যে, এই সিরিজের প্রোডিউসর সোনিকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তিন দিনের বেশি কমেন্ট্রি করতে পারবেন না। স্বাধীনতা দিবসের দিন তাঁকে মুম্বই থাকতেই হবে। ওই দিনটা তাঁর মায়ের নব্বইতম জন্মদিন। ‘‘বলা রয়েছে, তবু একটা অপরাধবোধ হচ্ছিল। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই চলে যাব। এখন আর দুশ্চিন্তা নেই,’’ তৃপ্তির হাসি গাওস্করের মুখে। ক্রিকেটের স্বাভাবিক যুক্তি মেনে তাঁর শুক্রবার রাত ন’টার মুম্বই ফ্লাইট ধরতে কোনও অসুবিধে হওয়ার কথাই নয়।

এখনও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজের টিম ১৮৭ রানে পিছিয়ে। শেষ চার ওভারেই দুটো উইকেট পটকেছে। বল ঘুরছে এবং গড়াচ্ছে। একমাত্র প্রশ্ন হওয়া উচিত— ক্যাপ্টেন কোহলির প্রথম টেস্ট জেতার জন্য পুরো তিন দিন লাগবে? না আড়াই দিন?

টেস্ট ক্রিকেটের একশো আটত্রিশ বছরের ইতিহাসে এমন আপাত সীমান্তবর্তী বিপন্নতা থেকে উদ্ধারের অন্তত আটত্রিশটা কাহিনি আছে। এমন মানুষও হাতের কাছে অক্ষত, যিনি বহু ক্রিকেট বিজ্ঞানকে নিজের যৌবনে ভ্রান্ত প্রমাণ করে আজ ৫৭ গড় নিয়ে সম্ভ্রমের চিরকালীন লাল কার্পেটে দাঁড়িয়ে। কুমার সঙ্গকারা।

প্রথম ইনিংসে সঙ্গা যখন ব্যাট করতে নামছেন, তখন পাঁচ বার তোপধ্বনি হয়েছিল। আজ গলে তাঁর জীবনের শেষ ইনিংসে যখন ব্যাট করতে নামছেন, তোপধ্বনি চলতেই থাকল। কাজটা যার নির্দেশেই হয়ে থাক, সঙ্গার কঠিন শীতল তিরস্কার যে তার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে, তা না চেক করেই লিখছি। নিজের বিদায়বেলা নিয়ে বাহুল্য আর মাতামাতি যে চান না, সঙ্গা বারবার বলেছেন বোর্ড কর্তাদের। আজ এমন হল যে, তিনি ক্রিজে পৌঁছে গার্ড নিয়েছেন গল ফোর্টের দিক থেকে তোপধ্বনি আর বন্ধ হচ্ছে না। আম্পায়ার শেষে সঙ্কেত করলেন, হচ্ছেটা কী! বন্ধ করো।

সঙ্গা খেলেছেন মাত্র ৩ বল। করেছেন অপরাজিত ১। বলার মতো কিছুই ঘটেনি এবং আসলে ঘটেছে। বিদায়ী লগ্নে এসেও একটা নীরব বিবৃতি পেশ করে বসে আছেন সঙ্গা। এমনিতে শ্রীলঙ্কার হয়ে এখন তিনি ব্যাট করেন চার নম্বরে। তিন নম্বর থিরিমান্নে। আজ প্রথম উইকেট পড়ার পরেই অ্যাঞ্জেলো নাইটওয়াচম্যান গুঁজে দেন। এর পর যখন দ্বিতীয় উইকেট গেল, থিরিমান্নে নামার কথা। তিনি— সঙ্গকারা তাঁকে ঘিরে এত সমারোহ। গোটা ক্রিকেটবিশ্ব খেয়াল রাখছে। পরিবার-পরিজন-বন্ধুরা একটা আলাদা বক্সে বসেছে তাঁকে দেখতে। যার নাম সঙ্গকারা বক্স। তাঁর আজ শেষবেলায় ঝুঁকি নেওয়ার কোনও দরকারই ছিল না। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে অমন নৈরাশ্যজনক ব্যর্থতার পর। এখানেই সঙ্গকারা! বিপক্ষকে যেন দেখালেন যে, তোমরা অনেক ভাল অবস্থায় থাকতে পারো। কিন্তু তা বলে বীরের ধর্ম আমি ছাড়ছি না। মায়ের আঁচলে লুকিয়ে থেকে প্যাভিলিয়নের ছায়ায় আমি নিজের ক্রিকেট খেলিনি। বিদায় লগ্নেও খেলব না। বিপদের মধ্যেই না আমার বীরত্ব। অতএব ওই থিরিমান্নেটা ছায়ায় থাক। আমি রোদ্দুরে বিপদে বেরবো।

টেস্ট ম্যাচ কতক্ষণ চলবে সেটা গলের আবহাওয়া তো ঠিক করতেই পারে। কিন্তু অদৃষ্টের বাইরে মনে হচ্ছে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর সঙ্গার ব্যাট। কঠিনতম পরীক্ষার মুখে তিনি পড়বেন কারণ এই পিচ বার্থ সার্টিফিকেটে দু’দিন হয়েও পাঁচ দিনের বয়সি বুড়োটে দেখাচ্ছে। ধরে নেওয়া যায় কোহলি তাঁর জন্য যত্ন করে থালায় সাজিয়ে দেবেন হরভজন আর অশ্বিন, দুই অফস্পিনারকে। ভারতকে জয় থেকে থামানো অপার্থিব কিছু ঘটলেই একমাত্র সম্ভব। কিন্তু হারের মধ্যেও বিজিত বীররসের আমদানি শ্রীলঙ্কা করে কি না, সম্ভবত সঙ্গার ব্যাটেই স্থির হবে!

গল মাঠ যেমন শ্রীলঙ্কার কাছে চিংড়ি চিবিয়ে খাওয়ার মতো সুস্বাদু, ভারতের কাছে কিছু ঐতিহাসিক ভীতির পরম্পরাযুক্ত। সেটা মাথায় রেখেই কোহলিকে সম্প্রতি সহবাগের গলে পুরনো ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস ইউটিউবে দেখার পরামর্শ দিয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। দু’হাজার আটের সেই সিরিজে অজন্তা মেন্ডিস বিদ্ধ ভারত সচিন-সৌরভদের নিয়েও হেরে গিয়েছিল। একা সহবাগ কাউন্টার অ্যাটাক করেছিলেন গলে। দ্রাবিড়ীয় পরামর্শ কাগজে বার হওয়ার পর ওই ভিডিওটায় হিট দশ হাজার বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু কোহলি-ধবনের আজকের জোড়া সেঞ্চুরির ভিডিওর সঙ্গে সে দিনের সহবাগের ততটাই মিল যতটা মার্কসবাদ আর পুঁজিবাদে।

সাত বছর আগের গলে বল পড়ে সমান উচ্চতায় ব্যাটে এসেছিল। এখানে বিস্তর ঘুরেছে এবং কখনও ক্রমাগত নিচু হয়েছে। কোহলি আর ধবনের স্বভাবসিদ্ধ ক্রিকেট হল হিন্দি ধারাভাষ্যকারের প্রিয় শব্দগুচ্ছ— ধুঁয়াধার বল্লেবাজি। অথচ দিনের প্রথম ৭২ বলে এঁরা কেউ একটা বাউন্ডারিও মারলেন না। তৃতীয় উইকেটে ২২৭ রান যোগ করে এঁরা একটা রেকর্ডও গড়লেন। কীসের সেটা অত খাতা খুলে দেখছি না। রান চলে যায়। রেকর্ড চাপা পড়ে যায় আর একটার তলায়। থেকে যায় রানের ভঙ্গি।

টিমের প্রয়োজনে এত শৃঙ্খলিত থাকতে এ যুগের ব্যাটসম্যানরা অভ্যস্তই নন। নইলে কী আর অ্যাসেজে রিকি পন্টিংকে বলতে হত, ওহে ব্যাগি গ্রিন, মনে রেখো হাঁই-হাঁই করে স্টেপ আউটটাই শুধু আক্রমণ নয়। একটা বল মজবুত মন নিয়ে অফস্টাম্পের বাইরে ছাড়া, সেটা নিয়ন্ত্রণ-সহ ডিফেন্ড করাও তো এক ধরনের আক্রমণমুখী মনোভাব। পন্টিং যা নিজ দেশীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে খোঁজ পাননি, তা আজ গলের টিভি সম্প্রচার দেখলে পেতেন।

তাও তো আম্পায়ারদের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত ম্যাচের স্বাভাবিক নেটওয়ার্ককে খারাপ করে দিচ্ছিল। কোহলির সুইপ এলবিডব্লিউ ছিল কি? রাহানেরটাও বিতর্কিত! ভারতীয় ইনিংসে এতগুলো এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত দেখে বাইশ বছর আগে এখানে আসা ভারতীয় ক্রিকেট ম্যানেজারকে মনে পড়ে গেল। কুম্বলেদের বলে শ্রীলঙ্কান আম্পায়াররা পরপর এলবিডব্লিউ দিচ্ছেন না দেখে অজিত ওয়াড়েকর আম্পায়ার্স রুমে ঢুকে দেঁতো হাসিতে বলেছিলেন, ‘‘আমার বাবার নাম ছিল লক্ষ্মণ বিনায়ক ওয়াড়েকর। আদ্যক্ষর এলবিডব্লিউ। আজ আপনাদের দেখে মনে হচ্ছিল বাবা বোধহয় ওপরে যাওয়ার সময় নামের আদ্যক্ষরটাকেও ওপরে নিয়ে গিয়েছেন।’’ তখনও নিরপেক্ষ আম্পায়ার চালু হয়নি। দেশপ্রেমিকদের যুগ। আজ এই টিমের ম্যানেজার ওয়াড়েকর হলে হয়তো বলতেন, ‘‘আউটটা তো জাঁকিয়ে ফেরত এসেছে দেখছি। বাবাও কি নামলেন নাকি?’’

নাইজেল লং আর ব্রুস অক্সেনফোর্ডের শ্রীলঙ্কান হওয়ার প্রশ্ন নেই। কিন্তু এ ম্যাচে তাঁদের আম্পায়ারিংয়ের যা মান, আইসিসির কাছে কোহলির গোপন মার্কশিটে অবশ্যই দু’জনের ভাল নম্বর আসা উচিত নয়।

ঋদ্ধিমান সাহাকে সবচেয়ে বাজে আউট দেওয়া হল। পরিষ্কার হেলমেটে লেগেও কি না কট বিহাইন্ড। ঋদ্ধি অবশ্য তার আগে জীবনের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। অ্যাদ্দিন সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর ছিল ৩৬। অনিশ্চিত পিচে সেটা এত ভাল টপকে যাওয়া অবশ্য ছয় নম্বরে তাঁর সম্পর্কে টিম ম্যানেজমেন্টের নির্ভরতা বাড়াবে। ভারত পাঁচ বোলার নিয়ে খেলায় ব্যাটিং পজিশনে ছয় নম্বরটা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মনে রাখতে হবে, ধোনির ওপরও এত চাপ ছিল না। চার বোলারের জমানায় তিনি নামতেন সাত নম্বরে।

এ দিন ঋদ্ধির পঞ্চাশ পূর্ণ হতে ড্রেসিংরুমের সামনে কোহলি যেমন স্বতঃস্ফূর্ত হাততালিতে ফেটে পড়লেন তাতে বোঝা গেল এই ফাটকাটা তাঁর কাছেও কতটা চাপের ছিল। তখনকার মতো ওই উচ্ছ্বাস দেখায় ব্যস্ত ছিলাম বলে স্ট্যাট্সটা খেয়ালই হয়নি যে, টেস্ট ক্রিকেটে বাঙালির আবার হাফসেঞ্চুরি এল সাত বছর পর। শেষ নাগপুর। দু’হাজার আট। পাত্র অবশ্যই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

ভারত যদি উপমহাদেশে পাঁচ ব্যাটসম্যানে খেলে, এ রকমই বড় ইনিংস খেলার আরও সুযোগ নির্ঘাত পাবেন ঋদ্ধি। কে বলতে পারে তখন অন্য একটা স্ট্যাট্স ঘাঁটতে বসব না— টেস্ট ক্রিকেটে বাঙালির শেষ সেঞ্চুরিটা যেন ক’বছর আগে হয়েছিল?

গল টেস্টের স্কোর

শ্রীলঙ্কা

প্রথম ইনিংস ১৮৩।

ভারত

প্রথম ইনিংস (আগের দিন ১২৮-২)

ধবন বো প্রদীপ ১৩৪

কোহলি এলবিডব্লিউ কৌশল ১০৩

রাহানে এলবিডব্লিউ কৌশল ০

ঋদ্ধিমান ক চণ্ডীমল বো প্রদীপ ৬০

অশ্বিন বো প্রদীপ ৭

হরভজন বো কৌশল ১৪

মিশ্র বো কৌশল ১০

ইশান্ত ন.আ. ৩

অ্যারন ক ম্যাথেউজ বো কৌশল ৪

অতিরিক্ত ২৪

মোট ৩৭৫।

পতন: ১৪, ২৮, ২৫৫, ২৫৭, ২৯৪, ৩০২, ৩৩০, ৩৪৪, ৩৬৬।

বোলিং: প্রসাদ ২২-৪-৫৪-১, প্রদীপ ২৬-২-৯৮-৩, ম্যাথেউজ ৪-১-১২-১,

কৌশল ৩২.৪-২-১৩৪-৫, হেরাথ ৩৩-৪-৬৭-০।

শ্রীলঙ্কা

দ্বিতীয় ইনিংস

করুণারত্নে বো অশ্বিন ০

সিলভা বো মিশ্র ০

সঙ্গকারা ন.আ. ১

অতিরিক্ত

মোট ৫-২।

পতন: ০, ১।

বোলিং: অশ্বিন ২-২-০-১, মিশ্র ১-০-১-১, হরভজন ১-০-৪-০।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE