নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন হিসেবে মহেশ ভূপতির শুরুই কি লিয়েন্ডার পেজের সাতাশ বছরের ডেভিস কাপ অভিযানের শেষ হয়ে থাকল? ভারতীয় ক্রীড়ামহল তোলপাড় এই প্রশ্ন নিয়ে। অক্রীড়ক অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম টাইয়েই লি-কে বাদ দিয়ে দিলেন হেশ। বেঙ্গালুরুতে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে রোহন বোপান্নাকে ডাবলস খেলোয়াড় হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।
ওয়াকিবহাল মহলে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে লিয়েন্ডারকে নিয়েই মহেশ দল সাজাচ্ছিলেন। লিয়েন্ডারের বয়স এখন ৪৩। আন্তর্জাতিক ডাবলস র্যাঙ্কিং ৫৩। বোপান্নার বয়স ৩৭ এবং র্যাঙ্কিংয়ে তিনি লি-র চেয়ে ২৯ ধাপ এগিয়ে। পরিস্থিতি ঘুরতে শুরু করে বেঙ্গালুরুতে শিবির শুরু হওয়ার পর থেকে। মহেশ সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২ এপ্রিলের মধ্যে শিবিরে যোগ দিতেই হবে। ডেভিস কাপে নির্বাচিত ছ’জনের মধ্যে এক জনই নির্ধারিত সময় মতো পৌঁছননি। তাঁর নাম লিয়েন্ডার পেজ। যা নিয়ে নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন খুব প্রসন্ন হয়েছিলেন বলে খবর নেই।
যদিও মেক্সিকোয় একটি টুর্নামেন্ট খেলছিলেন লিয়েন্ডার। সেখানে তিনি চ্যাম্পিয়নও হন। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিল ২ এপ্রিলেই। তবে মহেশ সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থার কর্তাদের কাছে দু’দিন আগে জানান, শিবিরে বাকিরা এসে গেলেও লিয়েন্ডারের কোনও খবর তাঁর কাছে নেই। লি নাকি তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেননি।
এক প্রভাবশালী টেনিস কর্তা বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে বললেন, ‘‘৪ এপ্রিল রাতে ফোন করে লিয়েন্ডার জানায়, দুবাইয়ে আছে। পরের দিন নাকি এসে যাবে। তত দিনে দু’দিন হয়ে গিয়েছে শিবিরের।’’ কারও কারও মতে, টিম নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার পরেও লিয়েন্ডারের সূচি জেনে উঠতে পারেননি মহেশ। টাইয়ের মাত্র এক দিন আগে টিমের সঙ্গে অনুশীলন করা দেখে খুব উৎসাহিত হননি মহেশ। শিবিরে অন্যান্যদের জন্য তিনি কড়া আচরণবিধি চালু করে দিয়েছিলেন। স্ত্রী বা বান্ধবীদের আসা নিষিদ্ধ করে দেন। টাইয়ের সময় এসে গ্যালারিতে বসে শুধু খেলা দেখতে পারবেন স্ত্রী-বান্ধবীরা। বাকিদের জন্য এক নিয়ম আর লিয়েন্ডারের জন্য ব্যতিক্রম— এটা নাকি চাননি মহেশ।
গত কাল অর্থাৎ বুধবার লিয়েন্ডার এসে শিবিরে যোগ দেন। কিন্তু ততক্ষণে মহেশ সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থার কর্তাদের বলে দেন, লিয়েন্ডার ট্রফি জিতে এলেও এই টাইয়ের আগে যথেষ্ট প্র্যাকটিস করেননি দলের সঙ্গে। তাই তিনি তাঁকে দলে রাখবেন না। লি-কেও তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন হেশ। যে কারণে ড্রয়ের সময়েই লিয়েন্ডার ইউনিফর্ম না পড়ে এসেছিলেন। মুখচোখেও তখন থেকেই স্বস্তির চেয়ে ক্ষোভ বেশি।
লিয়েন্ডারকে নিয়ে এমনিতে কর্তাদের মধ্যেও অনেকে খুব আবেগপ্রবণ এবং স্নেহশীল। কিন্তু তাঁর দীর্ঘ দিনের শুভানুধ্যায়ী এবং এআইটিএ সচিব, কলকাতার হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়-কে এ দিন বলতে শোনা গেল, ‘‘এটা নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেনের সিদ্ধান্ত এবং আমি নিশ্চিত, দেশের জন্য যেটা সবচেয়ে ভাল, সেই সিদ্ধান্তই নেবে মহেশ।’’ টেনিস সংস্থাও আর লিয়েন্ডারের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে না। সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিচ্ছে নতুন ক্যাপ্টেনের ওপর।
পুণেতে আগের টাইয়ের সময়েই সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থা সম্মানজনক ফেয়ারওয়েলের প্রস্তাব দিয়েছিল লিয়েন্ডারকে। তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। বাদ যাওয়ার পরে মুখ খোলার পরে কর্তারা এখন আশা করছেন মহেশ পাল্টা বিবৃতি না দিতে যান। তা হলে ফের বাগ্যুদ্ধ বাধবে।
বেঙ্গালুরুতে ভারত বনাম উজবেকিস্তান কে বলল! আসলে তো লি বনাম হেশ ফের শুরু হয়ে গেল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy