নিয়মরক্ষার ম্যাচ। আবার সম্মানরক্ষারও!
ইতিমধ্যেই আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু। তাঁদের হাতে তুলে দিতে ট্রফি নিয়ে এখানে চলে আসছেন ফেডারেশন কর্তারা। তা সত্ত্বেও অ্যাশলে ওয়েস্টউডের দল যেন স্বস্তিতে নেই। কারণ গত বারই নিজেদের মাঠে শেষ ম্যাচে আই লিগ খোয়ানো সেই হারের প্রতিশোধটা নেওয়া হয়নি যে এখনও! সেই সুযোগ হাজির শনিবার শিলিগুড়িতে। সেই মোহনবাগানকে তাদের ‘হোম’-এ হারিয়ে ট্রফিটা হাতে তুলতে পারলে একটা বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হবে সুনীল-ওয়েস্টউ়ডদের।
আবার বাগানের কাছেও তো এটা সম্মানরক্ষার লড়াই। কেন? প্রথমত ম্যাচটা জিততে পারলে রানার্স হওয়া নিশ্চিত। পাশাপাশি বেঙ্গালুরু চ্যাম্পিয়ন হলেও তাদের এ বার দু’বারই হারিয়ে (বেঙ্গালুরুতে প্রথম লেগ জিতেছিলেন সনি নর্ডিরাই) সুনীল ছেত্রীদের গৌরবের মুকুটে কালি ছিটিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে কাতসুমিদের সামনে।
তাই আই লিগের মীমাংসা হয়ে যাওয়ার পরেও কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ধুন্ধুমার লড়াইয়ের প্রবল সম্ভাবনা।
যার মহড়াও তো ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনেই হয়ে গেল! বাগান কোচ সঞ্জয় সেন যেমন বলে দিলেন, ‘‘আমাদের রানার্স হতেই হবে। তা ছাড়া হারতে হারতে সেটা যেন অভ্যেস না হয়ে দাঁড়ায় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা বেঙ্গালুরুর চেয়ে যে আমরা ভাল দল সেটারও প্রমাণ হওয়া দরকার।’’ আর চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু দলের কোচ অ্যাশলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শেষ ম্যাচ আমরা হারতে চাইছি না। ড্র হলেও খুশি থাকব।’’
দু’দলের হাতেই প্রচুর অস্ত্র। ডার্বিতে সনি এসেও চোটের জন্য খেলতে পারেননি শিলিগুড়িতে। শনিবার তিনি খেলবেন। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে হাইতি স্ট্রাইকারকে নিয়েই এসেছিলেন বাগান-কোচ। যেখানে সনি বললেন, ‘‘ম্যাচটা খেলতে মুখিয়ে আছি।’’ সনির সঙ্গে কাতসুমি-জেজে-লুসিয়ানো-গ্লেন। পুরো শক্তি মজুত বাগানে। আর বেঙ্গালুরু কোচের হাতেও রয়েছে সুনীল ছেত্রী, জনসন-সহ পুরো টিম। সঙ্গে তিন বছরের মধ্যে দু’বার আই লিগ জেতার তুঙ্গস্পর্শী আত্মবিশ্বাস।
ডার্বির আগে বাগানকে নিয়ে যে রকম উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল, এ দিন বিকেলের দিকে শহরে পৌঁছনো সবুজ-মেরুনকে নিয়ে সে রকম কিছু দেখা যায়নি। তবে চমকপ্রদ ভাবে বেঙ্গালুরু টিমকে নিয়ে দেখা গেল উচ্ছ্বাসের ছবি। সুনীলদের টিমের অন্যতম সদস্য বিকোখোই-এর নামে এখানে ফ্যান ক্লাব আছে। মূলত তাদের সংবর্ধনায় ভেসে গেল অ্যাশলে ওয়েস্টউডের টিম। অ্যাওয়েতে বাগানের সঙ্গে পাল্লা দিতে নেমে যাতে তাঁদের পাশেও দর্শক সমর্থন থাকে সে জন্য বুদ্ধি করে বেঙ্গালুরুর বিদেশি কোচ সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন বিকোখোইকে। দলে এত তারকা থাকতে তাঁকে নিয়ে নিজের পাড়ায় এ রকম উচ্ছ্বাস দেখে আপ্লুত বিকোখোই-ও। ‘‘আমার এত অনুরাগী আছে এখানে এত দিন জানতামই না।’’
বাগান কোচ সঞ্জয় আবার এ দিন বললেন, ‘‘প্রতিবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় না। বার্সেলোনার মতো টিমও পরপর হারছে। খারাপ সময় প্রত্যেক দলেরই আসে। এটা না চাইলেও মেনে নিতে হবে। কেউই হারার জন্য খেলে না।’’ বোঝাতে চাইলেন, কাল বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে ফেড কাপ, এএফসি কাপের নক আউটের জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়ানোই লক্ষ তাঁর।
কিন্তু সেই ইচ্ছে কি এখানে পূর্ণ হবে বাগানের? বেঙ্গালুরু অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন। বলে দিলেন, ‘‘আমাদের মাঠে ওদের হারাতে পারিনি। কাল তাই জিততেই হবে। ট্রফি জেতার পর এ বার আমাদের টার্গেট জয় দিয়ে শেষ করা।’’
শনিবার আই লিগ— মোহনবাগান : বেঙ্গালুরু এফসি (শিলিগুড়ি, সন্ধে ৭-০৫)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy