মোহনবাগানের ‘মিশন মুম্বই’-এর রিংটোন গাঁধীগিরি!
কেন? তার ব্যাখ্যাও রয়েছে।
‘‘মুম্বই টিমটা বড্ড মেরেধরে খেলে। আমার ছেলেদের বলেছি, তোমাদের মারলেও ভুলেও পাল্টা মারতে যেও না। অকারণে কার্ড যেন আর না হয় আমাদের টিমে’’ মুম্বই থেকে বৃহস্পতিবার ফোনে বললেন বাগান কোচ সঞ্জয় সেন।
গাঁধীগিরিতেই শনিবার মুম্বই মাত করতে চায় সবুজ-মেরুন। বিরুদ্ধে খেলবে। কারণ, ‘‘আই লিগে আমরা চ্যাম্পিয়নশিপ লড়ছি। এই অবস্থায় আমাদের কোনও প্লেয়ার চোট পেলে বা কার্ড দেখলে সিরিয়াস সমস্যা,’’ ফোনে আরও যোগ করলেন সঞ্জয়।
লিগ টেবলে এক নম্বরে থাকা সনি নর্ডিদের এখন ৩১ পয়েন্ট। পরের টানা তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতলেই কাঙ্ক্ষিত ট্রফি কার্যত ছুঁয়ে ফেলতে পারবে মনে করছে বাগান-বাহিনী। মানসিক ভাবে ডেনসন-প্রীতমরা এমন ভাবে তৈরি হতে শুরু করেছেন যাতে মহারাষ্ট্র সফর থেকে ফিরে হোম ম্যাচে নামার আগেই পালতোলা নৌকায় আই লিগ জয়-পতাকা টাঙিয়ে ফেলা যায়। এ দিন বাংলা যখন বনধ্ আর ইডেনে কেকেআর নিয়ে মজে, তখন কয়েক হাজার মাইল দূরের কুপারেজে প্র্যাক্টিস করলেন সনি-কাতসুমিরা। মুম্বইয়ের এই প্রাচীন ফুটবল মাঠে অ্যাস্ট্রোটার্ফ বসেছে বছরখানেক। তার উপরেই জোসিমার, তাইসুকেদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগের বাগানের মহড়া-মেনুতে ছিল সেটপিস, পজেশনাল প্লে, রক্ষণ সংগঠন আর উইং প্লে-র মাজাঘসা।
কুপারেজ থেকে টিম হোটেলে ফিরে সঞ্জয় ফোনে বলছিলেন, ‘‘মুম্বইএফসি-র আসল শক্তি হল জোসিমার আর তাইসুকের কম্বিনেশন। জোসিমার আমার কোচিংয়ে অনেক খেলেছে। ওর খেলাটা জানি। আমাদের ডিফেন্সকে সে ভাবেই তৈরি রাখছি।’’
মুম্বই কোচ খালিদ জামিল রেফারির সঙ্গে ঝামেলার জেরে এখনও ফেডারেশনের শাস্তিতে নির্বাসিত। কুপারেজেও গ্যালারিতে বসেই টিমকে পরিচালনা করতে হবে তাঁকে। তবে বিপক্ষ কোচের রিজার্ভ বেঞ্চে না থাকাটাকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না বাগান কোচ। ‘‘কোচ তো আর মাঠে নেমে খেলবে না। ওর মাঠে না থাকায় খুব একটা প্রভাব পড়বে না ম্যাচে,’’ বলে দিচ্ছেন সঞ্জয়।
তাঁকে বরং স্বস্তি দিচ্ছে পুণেতে আগের ম্যাচে জয়। স্বস্তি দিচ্ছে ঘরের মাঠে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে তিন পয়েন্ট পাওয়া। স্বস্তির আরও এক কারণ, কোনও একজন তারকার উপর নির্ভর করে জিতছে না সঞ্জয়ের টিম। সনি-কাতসুমি-বলবন্তরা গোল তো পাচ্ছেনই। বহু দিন পর মাঠে নেমেই গোল পেয়েছেন জেজেও। তবুও মুম্বই নিয়ে বিন্দুমাত্র আত্মতুষ্ট থাকতে রাজি নয় বাগান। সঞ্জয় প্রকাশ্যে না বললেও, টিমের অন্দরমহল থেকে চুঁইয়ে যে খবর বে়রিয়ে আসছে— শনিবার প্রথমে এক পয়েন্ট, পরে তিন পয়েন্ট নীতি।
সদ্য সুস্থ বোয়া খেলছেন না। কোচ তাঁকে তুলে রাখতে চাইছেন পরের চার ম্যাচের জন্য। বোয়াহীন দলে যাঁর দিকে তাকিয়ে কোচ থেকে সমর্থকেরা, সেই সনি দারুণ সতর্ক। ‘‘নীচের দিকের টিমগুলো সব সময় ভয়ঙ্কর হয়। ওদের প্রমাণ করার কোনও চাপ থাকে না তো,’’ বলছিলেন সনি।
সঞ্জয় চাইছেন পুরো টিমকে শশার মতো ঠান্ডা রাখতে। চাইছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন’ শব্দটা যেন ড্রেসিংরুমে আগাম ঢুকে না পড়ে। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে পুণে ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশন ভাঙছে না মুম্বইয়ে। জেজের একটু পিছনে ফেক স্ট্রাইকার খেলবেন কাতসুমি। দুই উইংয়ে সনি আর মণীশ ভার্গব। জোসিমারের জন্য ডিফেন্সে বাড়তি দায়িত্ব থাকবে বেলো রজ্জাকের ঘাড়ে।
আই লিগে খালিদ জামিলের মুম্বই এফসি অঘটন ঘটানোর টিম হিসেবে পরিচিত। অনেকের অনেক হিসাব তারা ওলটপালট করে দিয়েছে। দেখার, তরতরিয়ে এগোনো পালতোলা নৌকাকেও তারা ফুটো করে দিতে পারে কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy