Advertisement
E-Paper

লড়তে প্রস্তুত পুরুলিয়া

মাথা নিচু করে বলের উপরে চোখ রেখে কী ভাবে পা বলের লাইনে নিয়ে যেতে হবে দেখাচ্ছিলেন কোচ। তার পর মাঝ ব্যাট দিয়ে যেখানে ফিল্ডার নেই, সেই অঞ্চলে বল ঠেলে রান চুরি করতে হবে। এক কিশোরীর ব্যাটের গ্রিপ ঠিকঠাক করে দিয়ে কোচ বললেন, ‘‘মনে রাখতে হবে কোনও বোলার তোমাকে রান করতে দেবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০৯
মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে চলছে প্রশিক্ষণ। ছবি:নিজস্ব চিত্র।

মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে চলছে প্রশিক্ষণ। ছবি:নিজস্ব চিত্র।

মাথা নিচু করে বলের উপরে চোখ রেখে কী ভাবে পা বলের লাইনে নিয়ে যেতে হবে দেখাচ্ছিলেন কোচ। তার পর মাঝ ব্যাট দিয়ে যেখানে ফিল্ডার নেই, সেই অঞ্চলে বল ঠেলে রান চুরি করতে হবে। এক কিশোরীর ব্যাটের গ্রিপ ঠিকঠাক করে দিয়ে কোচ বললেন, ‘‘মনে রাখতে হবে কোনও বোলার তোমাকে রান করতে দেবে না। বরং সেই বোলারের লক্ষ্য, তোমার উইকেট। নিজের উইকেট বাঁচিয়ে তোমাকে দলের জন্য রান তুলতে হবে এবং ক্রিজেও টিকে থাকতে হবে।’’

এর একটু আগেই কোচ বোলারদের দেখিয়েছেন, পিচের ঠিক কোথায় বল ফেললে ব্যাটসম্যানের খেলতে অসুবিধে হবে কিংবা বল অনুযায়ী কী ভাবে ফিল্ডিং সাজালে উইকেট আসবে। ব্যাটসম্যানকে বুঝিয়েই তিনি বোলারদের ডাকলেন। লম্বা রানআপ নিয়ে বোলিং শুরু করল মেয়েরা। যে মেয়েদের ক্রিকেটের কৌশল শেখাচ্ছিলেন সিএবি-র মহিলা দলের কোচ অর্পিতা ঘোষ, তাদের অনেকের কাছে ক্রিকেট খেলা স্বপ্নের মতোই। কারও বাবা দোকানে কাজ করেন। হোটেলে পাচকের কাজ বা চাষবাস করে সংসার চালান কারও কারও বাবা। অভাবের গণ্ডী ডিঙিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে দলে জায়গা নিশ্চিত করাই এখন এই মেয়েদের পাখির চোখ।

সিএবি পরিচালিত আন্তঃজেলা মহিলা ক্রিকেট প্রতিযোগিতার জন্য পুরুলিয়া ও দক্ষিণ দিনাজপুরের ২০ জন কিশোরীকে নিয়ে পুরুলিয়া মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে চলছে প্রশিক্ষণ শিবির। দলের নাম ‘রেস্ট অব ডিস্ট্রিক্ট ইলেভেন’। মানভূম ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেটের দায়িত্বে থাকা রাণাপ্রতাপ সিংহের কথায়, ‘‘এই প্রতিযোগিতার জন্যই বিশেষ করে এই দল গড়া হচ্ছে। যে সমস্ত জেলার নিজেদের মহিলা দল নেই, তাদের মিলে একটিই দল হবে।’’ এই দলে পুরুলিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুরের মেয়েরা থাকবে। কিন্তু উত্তর দিনাজপুরের কেউ না আসায় বাকি দু’টি জেলার মেয়েদের নিয়েই দল গড়ার জন্য শিবির চলছে।

বৃহস্পতিবার প্রশিক্ষণ শেষে অর্পিতাদেবী বলছিলেন, ‘‘এদের অনেকেই অ্যাথলেটিক্স বা সাঁতার থেকে এসেছে। ক্রিকেট এদের কাছে নতুন। ক’দিন ধরে দেখছি ওদের। নিষ্ঠা রয়েছে প্রত্যেকের। অনুশীলনে কেউই ফাঁকি দিতে রাজি নয়।’’ দক্ষিণ দিনজাপুর থেকে মেয়েদের সঙ্গে অভিভাবকেরা এসেছেন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে তাঁরা পুরুলিয়ায় রয়েছেন। পুরুলিয়ার কেন্দার বাসিন্দা সাহিনা খাতুন, চাকদা গ্রামের বাসিন্দা সায়ন্তনী পাল, প্রিয়াঙ্কা পান্ডে, রিমসা নাজদের সকাল শুরু হচ্ছে ঘড়ির কাঁটায় আটটায়। ঘণ্টা দেড়েক শারীরিক সক্ষমতার অনুশীলন। তার পরে ব্যাটিং-বোলিং বা ফিল্ডিং প্র্যাকটিস। সকলেরই এক কথা, ‘‘ম্যাডাম এত সুন্দর করে শেখাচ্ছেন, সময় কখন পার হয়ে যাচ্ছে মনেই হচ্ছে না।’’ দক্ষিণ দিনজাপুরের বেলি মাহাতো, গঙ্গা মুর্মু বা তৃপ্তি মাহাতোদের কথায়, ‘‘অ্যাথলেটিক্সের মাঠের সঙ্গে ক্রিকেটের পার্থক্য রয়েছে। এটা টিম গেম। তবে ম্যাডাম খুব যত্ন করে আমাদের শেখাচ্ছেন।’’

এর আগে বাঁকুড়ায় বিভিন্ন জেলাকে নিয়ে কাজ করে আসা অর্পিতাদেবী বলছিলেন, এখন বাঁকুড়ার নিজস্ব দল তৈরি হয়েছে। পুরুলিয়ারও হবে বলে তিনি আশাবাদী। ৭ জানুয়ারি সিএবি পরিচালিত এই প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। রেস্ট অব ডিস্ট্রিক্ট ইলেভেনের গ্রুপে রয়েছে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, বীরভূম ও উত্তর ২৪ পরগনা থাকছে। ম্যাচগুলি হবে পুরুলিয়ায়।

CAB District Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy